মিসরের গণতান্ত্রিক স্বৈরশাসক মুরসি?
মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি গভীর সংকটে পড়েছেন। নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিজেকে একচ্ছত্র ক্ষমতার ঘোষণা দেওয়ার পর পরই দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
মুরসির দাবি, সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে পাওয়া অর্জনকে রক্ষার উদ্দেশ্যেই নিজের ক্ষমতা বাড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু মুরসির বিরোধীরা এ দাবি মানতে নারাজ। তাই মুবারককে হটিয়ে যাঁরা মুরসিকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন, তাঁরাই আজ তাঁর বিরুদ্ধে রাজধানী কায়রোর তাহরির স্কয়ার উত্তাল করে তুলেছেন।
গত ২২ নভেম্বর নতুন অধ্যাদেশ জারির পেছনে কয়েকটি লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করেছেন মুরসি। মুবারক আমলে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিচার করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রসিকিউটর জেনারেলকে বরখাস্ত করা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিচার বিভাগের হাত থেকে রক্ষা করা, মুবারক আমলের জেনারেলদের বিচারের মুখোমুখি করা, বিপ্লবের সময় ও এর পরে নির্যাতন বা দমনের শিকার ব্যক্তিদের আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করা এর অন্যতম। মুরসির আশা ছিল, বেশির ভাগ মিসরীয় তাঁর অধ্যাদেশ সমর্থন করবে। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো।
মুরসির বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, সবার স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার করলেও মুরসি মূলত ইসলামপন্থীদের স্বার্থই রক্ষা করছেন। অন্যদিকে মুরসির সমর্থকদের সন্দেহ, মুবারক আমলের কর্মকর্তাদের বিচারের পরিকল্পনা করাতেই উদারপন্থীরা ফুঁসে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মিসরে ইসলামপন্থী ও উদারপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাসই মুরসির নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে আন্দোলনের ভিত তৈরি করেছে। বিচার বিভাগের 'শুদ্ধির' জন্য মুরসি যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেটাকে অসঙ্গত মনে করছেন উদারপন্থীরা। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের কাছে হেরে যাওয়া রাজনীতিবিদরাও এ আন্দোলনের সুযোগ নিতে চাচ্ছেন। নতুন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি ছাড়াও মুরসির পদত্যাগ দাবি করছেন তাঁরা। এলবারাদি আরো এক কদম এগিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর হস্তক্ষেপ দাবি করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, মুরসির অধ্যাদেশ মিসরের রাজনীতিকে আরো প্রতিকূলতার দিকে নিয়ে যাবে। গত কয়েক দিন ধরে মুরসির বিরোধীদের সঙ্গে তাঁর সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন মারা গেছে। আন্দোলন যে গতিতে চলছে তাতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাও বাস্তবরূপ নিতে পারে। ১৯৩৬ সালে স্পেনে ও ১৯৯২ সালে তাজিকিস্তানে এ ধরনের ঘটনা থেকেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ১৯৬৫ সালে ইন্দোনেশিয়া ও ১৯৮০ সালে তুরস্কেও একই ধরনের আন্দোলন থেকে নৃশংস সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে।
মিসরে মুবারকবিরোধী আন্দোলনের দুই বছর পার হয়ে গেলেও মুরসি সামরিক বাহিনী পুনর্গঠনের কোনো উদ্যোগ নেননি। উল্টো মুবারক আমলের জেনারেলদের বিচার করতে না পারার অভিযোগ তুলে তিনি বিচার বিভাগের ওপর চড়াও হয়েছেন। এর ফলে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা সামাল দিতে সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজের একচ্ছত্র ক্ষমতা বহাল রাখতে এবং বিতর্কিত খসড়া সংবিধানকে গণভোটের মাধ্যমে বৈধতা দিতে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করছেন মুরসি। মুবারকের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য হলো তিনি (মুবারক) ক্ষমতার দখল নিয়েছিলেন পেছনের দরজা দিয়ে, আর মুরসি ক্ষমতায় গেছেন জনগণের ভোটে। সাম্প্রতিক আচরণ দেখে বিরোধীরা মুরসিকে ফারাও এবং 'গণতান্ত্রিক স্বৈরশাসক' আখ্যা দিয়েছে।
তবে সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা জনগণের ওপর নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গন আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠলে হয়তো তাতে হস্তক্ষেপ না করে তাদের সামনে আর কোনো উপায়ও থাকবে না। তখন মুরসির সঙ্গে মিসরের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ফের অনিশ্চয়তায় পড়বে। সূত্র : বিজনেসডে।
গত ২২ নভেম্বর নতুন অধ্যাদেশ জারির পেছনে কয়েকটি লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করেছেন মুরসি। মুবারক আমলে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিচার করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রসিকিউটর জেনারেলকে বরখাস্ত করা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিচার বিভাগের হাত থেকে রক্ষা করা, মুবারক আমলের জেনারেলদের বিচারের মুখোমুখি করা, বিপ্লবের সময় ও এর পরে নির্যাতন বা দমনের শিকার ব্যক্তিদের আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করা এর অন্যতম। মুরসির আশা ছিল, বেশির ভাগ মিসরীয় তাঁর অধ্যাদেশ সমর্থন করবে। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো।
মুরসির বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, সবার স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার করলেও মুরসি মূলত ইসলামপন্থীদের স্বার্থই রক্ষা করছেন। অন্যদিকে মুরসির সমর্থকদের সন্দেহ, মুবারক আমলের কর্মকর্তাদের বিচারের পরিকল্পনা করাতেই উদারপন্থীরা ফুঁসে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মিসরে ইসলামপন্থী ও উদারপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাসই মুরসির নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে আন্দোলনের ভিত তৈরি করেছে। বিচার বিভাগের 'শুদ্ধির' জন্য মুরসি যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেটাকে অসঙ্গত মনে করছেন উদারপন্থীরা। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের কাছে হেরে যাওয়া রাজনীতিবিদরাও এ আন্দোলনের সুযোগ নিতে চাচ্ছেন। নতুন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি ছাড়াও মুরসির পদত্যাগ দাবি করছেন তাঁরা। এলবারাদি আরো এক কদম এগিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর হস্তক্ষেপ দাবি করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, মুরসির অধ্যাদেশ মিসরের রাজনীতিকে আরো প্রতিকূলতার দিকে নিয়ে যাবে। গত কয়েক দিন ধরে মুরসির বিরোধীদের সঙ্গে তাঁর সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন মারা গেছে। আন্দোলন যে গতিতে চলছে তাতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাও বাস্তবরূপ নিতে পারে। ১৯৩৬ সালে স্পেনে ও ১৯৯২ সালে তাজিকিস্তানে এ ধরনের ঘটনা থেকেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ১৯৬৫ সালে ইন্দোনেশিয়া ও ১৯৮০ সালে তুরস্কেও একই ধরনের আন্দোলন থেকে নৃশংস সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে।
মিসরে মুবারকবিরোধী আন্দোলনের দুই বছর পার হয়ে গেলেও মুরসি সামরিক বাহিনী পুনর্গঠনের কোনো উদ্যোগ নেননি। উল্টো মুবারক আমলের জেনারেলদের বিচার করতে না পারার অভিযোগ তুলে তিনি বিচার বিভাগের ওপর চড়াও হয়েছেন। এর ফলে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা সামাল দিতে সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজের একচ্ছত্র ক্ষমতা বহাল রাখতে এবং বিতর্কিত খসড়া সংবিধানকে গণভোটের মাধ্যমে বৈধতা দিতে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করছেন মুরসি। মুবারকের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য হলো তিনি (মুবারক) ক্ষমতার দখল নিয়েছিলেন পেছনের দরজা দিয়ে, আর মুরসি ক্ষমতায় গেছেন জনগণের ভোটে। সাম্প্রতিক আচরণ দেখে বিরোধীরা মুরসিকে ফারাও এবং 'গণতান্ত্রিক স্বৈরশাসক' আখ্যা দিয়েছে।
তবে সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা জনগণের ওপর নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গন আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠলে হয়তো তাতে হস্তক্ষেপ না করে তাদের সামনে আর কোনো উপায়ও থাকবে না। তখন মুরসির সঙ্গে মিসরের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ফের অনিশ্চয়তায় পড়বে। সূত্র : বিজনেসডে।
No comments