বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি চায় যুক্তরাষ্ট্র-রাষ্ট্রদূত মজিনা
ঢাকায় নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডবি্লউ মজিনা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরে আসবেন। তিনি আসার পর এ চুক্তিটি হবে। মজিনা আরও জানান, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাঠামো সহযোগিতা চুক্তি (ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট) করাটাই হবে তার প্রথম কাজ। গতকাল বৃহস্পতিবার
গুলশানে আমেরিকান ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মজিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে যে জোরালো অংশীদারিত্ব রয়েছে
তাতে তিনি গর্বিত। উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থে এই অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
হিলারির সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ দেশে নিয়ে আসার স্বপ্ন রয়েছে তার। তার কার্যকালের মধ্যে হিলারিকে নিয়ে আসার জন্য পরিশ্রম করে যাবেন তিনি। তিনি বলেন, হিলারি কবে আসবেন বলা যাচ্ছে না, তবে তিনি চান বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব চুক্তি করতে হিলারি এ দেশে আসবেন।
কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমন, খাদ্য নিরাপত্তা, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে এই অংশীদারিত্ব চুক্তির আওতায় নিয়মিত আলোচনা হবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বড় অংশীদার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরের বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চুক্তিটি হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। এ জন্য কাজ হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার চুক্তির একটি টেক্সট দিয়েছে। এখন এটি ওয়াশিংটনে রয়েছে। চুক্তিটি হওয়া প্রয়োজন। এটি হলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে দু'দেশের মধ্যে।
মজিনা জানান, বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে একটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। আর সেটা হলো কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি বলেছেন, এ দেশের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সব দলের অংশগ্রহণ চায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমরা আশা করি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে গঠনমূলক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করবে।'
২০০৭ সালের মতো এবারও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতা করবে কি-না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান চায়। তিনি বলেন, গণতন্ত্র একটি চলমান প্রক্রিয়া। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রৈও পারফেক্ট গণতন্ত্র নেই।
দুর্নীতি বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্র্নীতি বিশ্বের সর্বত্র রয়েছে। এটি মানুষের কল্যাণ ব্যাহত করে। সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবশ্যই লড়তে হবে। দুর্নীতি দমনে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের সঙ্গে অংশ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আবার ফিরে আসতে পেরে তিনি খুশি। বাংলাদেশে তার শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকায় ছিলেন। তিনি সুন্দর দেশ বাংলাদেশের প্রেমে পড়ে গেছেন বলে জানান।
গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত মজিনা বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত আশা করেন, কোটি কোটি মানুষের স্বার্থে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে একজন নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।
মজিনা বলেন, বিশ্বের সপ্তম জনবহুল রাষ্ট্র বাংলাদেশ বস্তুত একটি বিশাল দেশ। বাংলাদেশ তার জনগণের সহনশীলতা, উদ্যম, গতিশীলতা ও সৃজনশীলতার জন্য সঠিকভাবেই প্রশংসিত হয়। আর এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ সত্যিই অনেক গুরুত্ব বহন করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ সহিংস চরমপন্থার বিপরীতে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, সহনশীল ও গণতান্ত্রিক বিকল্প দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, দু'দেশের বন্ধন আরও সুগভীর, জোরালো এবং সুপ্রশস্ত করার ম্যান্ডেট নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। শান্তিপূর্ণর্, নিরাপদ, সমৃদ্ধিশালী, সুস্থ এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ায় সহায়তা করতে চান তিনি। রাষ্ট্রদূত বিশ্বাস করেন, এ দেশের জনগণের, এ অঞ্চলের এবং আমেরিকার সর্বোচ্চ স্বার্থেই এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে ওঠা জরুরি।
এক প্রশ্নের জবাবে মজিনা বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকালে শুল্কমুক্তভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি কংগ্রেসের বিবেচনার অপেক্ষায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
বাসস জানায়, গণতন্ত্রকে আরও সংহত করার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা অব্যাহত রাখবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডবি্লউ মজিনা এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দিয়েছেন, ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তিনি কাজ করবেন। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার বিষয়টি প্রশংসাযোগ্য। বাংলাদেশের গণমাধ্যম পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে তার সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও তার সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশন, তথ্য কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন ও অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই বিরোধীদলীয় প্রার্থীরাও এসব নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডকে কখনোই সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের পক্ষে ব্যবহার হতে দেবে না। অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান ও প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তাতে তিনি গর্বিত। উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থে এই অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
হিলারির সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ দেশে নিয়ে আসার স্বপ্ন রয়েছে তার। তার কার্যকালের মধ্যে হিলারিকে নিয়ে আসার জন্য পরিশ্রম করে যাবেন তিনি। তিনি বলেন, হিলারি কবে আসবেন বলা যাচ্ছে না, তবে তিনি চান বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব চুক্তি করতে হিলারি এ দেশে আসবেন।
কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমন, খাদ্য নিরাপত্তা, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে এই অংশীদারিত্ব চুক্তির আওতায় নিয়মিত আলোচনা হবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বড় অংশীদার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরের বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চুক্তিটি হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। এ জন্য কাজ হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার চুক্তির একটি টেক্সট দিয়েছে। এখন এটি ওয়াশিংটনে রয়েছে। চুক্তিটি হওয়া প্রয়োজন। এটি হলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে দু'দেশের মধ্যে।
মজিনা জানান, বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে একটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। আর সেটা হলো কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি বলেছেন, এ দেশের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সব দলের অংশগ্রহণ চায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমরা আশা করি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে গঠনমূলক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করবে।'
২০০৭ সালের মতো এবারও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতা করবে কি-না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান চায়। তিনি বলেন, গণতন্ত্র একটি চলমান প্রক্রিয়া। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রৈও পারফেক্ট গণতন্ত্র নেই।
দুর্নীতি বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্র্নীতি বিশ্বের সর্বত্র রয়েছে। এটি মানুষের কল্যাণ ব্যাহত করে। সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবশ্যই লড়তে হবে। দুর্নীতি দমনে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের সঙ্গে অংশ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আবার ফিরে আসতে পেরে তিনি খুশি। বাংলাদেশে তার শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকায় ছিলেন। তিনি সুন্দর দেশ বাংলাদেশের প্রেমে পড়ে গেছেন বলে জানান।
গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত মজিনা বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত আশা করেন, কোটি কোটি মানুষের স্বার্থে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে একজন নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।
মজিনা বলেন, বিশ্বের সপ্তম জনবহুল রাষ্ট্র বাংলাদেশ বস্তুত একটি বিশাল দেশ। বাংলাদেশ তার জনগণের সহনশীলতা, উদ্যম, গতিশীলতা ও সৃজনশীলতার জন্য সঠিকভাবেই প্রশংসিত হয়। আর এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ সত্যিই অনেক গুরুত্ব বহন করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ সহিংস চরমপন্থার বিপরীতে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, সহনশীল ও গণতান্ত্রিক বিকল্প দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, দু'দেশের বন্ধন আরও সুগভীর, জোরালো এবং সুপ্রশস্ত করার ম্যান্ডেট নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। শান্তিপূর্ণর্, নিরাপদ, সমৃদ্ধিশালী, সুস্থ এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ায় সহায়তা করতে চান তিনি। রাষ্ট্রদূত বিশ্বাস করেন, এ দেশের জনগণের, এ অঞ্চলের এবং আমেরিকার সর্বোচ্চ স্বার্থেই এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে ওঠা জরুরি।
এক প্রশ্নের জবাবে মজিনা বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকালে শুল্কমুক্তভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি কংগ্রেসের বিবেচনার অপেক্ষায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
বাসস জানায়, গণতন্ত্রকে আরও সংহত করার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা অব্যাহত রাখবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডবি্লউ মজিনা এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দিয়েছেন, ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তিনি কাজ করবেন। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার বিষয়টি প্রশংসাযোগ্য। বাংলাদেশের গণমাধ্যম পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে তার সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও তার সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশন, তথ্য কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন ও অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই বিরোধীদলীয় প্রার্থীরাও এসব নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডকে কখনোই সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের পক্ষে ব্যবহার হতে দেবে না। অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান ও প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
No comments