স্বাধীনতা আমাদের অহঙ্কার by কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক

সলাম ধর্মীয় স্বাধীনতার পাশাপাশি, মুসলিম ও অমুসলিমের আচরণ নীতিমালা বর্ণনা করে ঘোষণা করেছে, অপরাপর ধর্মের অনুসারীদের ধর্মচর্চা তাদের মৌলিক অধিকার। সুতরাং তাদের ধর্মোপাসনালয় ধ্বংস করা যাবে না, তাদের ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে আরোপ করা যাবে না নূ্যনতম বিঘ্নতা। বিয়ে, বিয়ে-বিচ্ছেদ এবং ভরণপোষণের ক্ষেত্রে তাই তাদের দেওয়া হয়েছে পূর্ণ স্বাধীনতা, যা তাদের ধর্মানুসারে বিধিসম্মত, তারা তা-ই পালন করবে।


বৌদ্ধিক ও যৌক্তিক নীতিমালা অনুসারে তাদের সম্মান ও স্বার্থ রক্ষাই হলো ইসলামের নীতি।হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো জিম্মিকে কষ্ট দেবে, আমি তার বিরুদ্ধে দাঁড়াব। আবু দাউদ ও বায়হাকীর বর্ণনায় এসেছে, 'যে ব্যক্তি কোনো চুক্তিবদ্ধকে নিপীড়ন করবে, ক্ষতিসাধন করবে, সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেবে অথবা তার থেকে কিছু কেড়ে নেবে, কিয়ামত দিবসে আমি তার বিরুদ্ধে দাঁড়াব।' _আবু দাউদ
মানুষের এই যে স্বাধীনতা, এই স্বাধীনতার ডাক প্রথম দিয়েছিলেন হজরত ইবরাহিম (আ.)। ইরশাদ হচ্ছে, 'যখন ইবরাহিম বললেন, পরওয়ারদিগার! এ স্থানকে তুমি শান্তিবাস করো এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও কিয়ামতে বিশ্বাস করে তাদের ফলের দ্বারা রিজিক দান করো। আল্লাহ বললেন, যারা অবিশ্বাস করে আমি তাদেরও কিছুদিন ফায়দা ভোগ করার সুযোগ দেব। অতঃপর তাদের বলপ্রয়োগে দোজখের আজাবে ঠেলে দেব; সেটা নিকৃষ্ট বাসস্থান।' _সূরা বাকারা : ১২১
এখান থেকেই মানুষ শান্তির শহর ও দেশকে চিহ্নিত করার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করতে শিখেছে। হজরত ইবরাহিমের (আ.) এই দোয়া থেকেই মুসলমানরা স্বাধীনতার ডাক দিতে শিখেছে। কেননা এই দোয়া কবুল হয়েছিল বলেই মক্কানগরী হত্যা ও লুটতরাজ থেকে আজও মুক্ত। স্বাধীন মানে এমনটাই চাই। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এই স্বাধীনতাপিয়াসী, তাই স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার জন্য মানুষ নানাভাবে সংগ্রাম করে এসেছে। এটা না কোনো অপরাধ, জাগতিক দৃষ্টিতে, না কোনো ধর্মীয় দিক থেকে বিশেষত ইসলামে অপরাধ প্রশ্নই ওঠে না। উপরন্তু মহানবী (সা.) বলেছেন, 'দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ।'

No comments

Powered by Blogger.