বিশ্বে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভূমিকা রেখেছে দুর্নীতি

লতি বছর মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বে রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে দুর্নীতি। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বার্ষিক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়। খবর : এএফপি, গার্ডিয়ান, রয়টার্স ও বিবিসি অনলাইনের।বৈশ্বিক দুর্নীতি নিয়ে বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) বার্ষিক প্রতিবেদন বা দুর্নীতির ধারণা সূচক (করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স- সিপিআই) গতকাল বৃহস্পতিবার


প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের দেশগুলোতে দুর্নীতি এখনও গভীরভাবে প্রোথিত, যা উদ্বেগজনক। সংস্থাটি বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে গণবিক্ষোভ প্রমাণ করে মানুষ চায় তাদের নেতা ও প্রতিষ্ঠানগুলো আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হোক। দুর্নীতির কারণে ইউরোজোনের ঋণ সংকটও কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না বলে মনে করছে সংস্থাটি।
এবারের সিপিআই অনুযায়ী ১৮৩টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর কোরিয়া ও যুদ্ধবিধ্বস্ত সোমালিয়া। দেশ দুটির পয়েন্ট যৌথভাবে ১। উত্তর কোরিয়াকে এবারই প্রথম পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়েছে টিআই। ১.৫ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হয়েছে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার। অন্যদিকে ১০ পয়েন্টের মধ্যে ৯.৫ নিয়ে সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশ হয়েছে নিউজিল্যান্ড। এরপর রয়েছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, সুইডেন ও সিঙ্গাপুর। ব্রিটেন ১৬তম এবং যুক্তরাষ্ট্র হয়েছে ২৪তম। দুর্নীতি দমনের সঙ্গে সম্পদের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মনে করছে টিআই। কেননা, বিশ্বের ৫০টি 'স্বচ্ছ' দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বতসোয়ানা, ভুটান ও রুয়ান্ডার মতো গরিব দেশগুলোও। পর্যবেক্ষণের আওতায় নেওয়া দেশগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই পাঁচের কম পয়েন্ট পেয়েছে।
টিআইর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল, ভঙ্গুর সরকার ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতপূর্ণ দেশগুলোই পয়েন্ট তালিকার নিচে অবস্থান করছে। গণআন্দোলনে টালমাটাল আরব দেশগুলোর পয়েন্ট চারের নিচে। ওই দেশগুলো এবং ইউরোজোনের অর্থ সংকটে থাকা গ্রিস ও ইতালির মতো দেশগুলোর অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে টিআই।

১৯৯৫ সাল থেকে প্রকাশিত হওয়া দুর্নীতির এ সূচকটি বিনিয়োগকারী, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে থাকে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্বব্যাংক, ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতো ১০টি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই র‌্যাঙ্কিং করে টিআই।

No comments

Powered by Blogger.