পবিত্র কোরআনের আলো-যে কোরআনের ওপর প্রতিষ্ঠিত সে-ই সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত
১৭. আফামান কা-না আ'লা- বায়্যিনাতিম্ মির্ রাব্বিহী ওয়া ইয়াতলূহু শা-হিদুম্ মিনহু ওয়া মিন ক্বাবলিহী কিতা-বু মূছা- ইমা-মান ওয়া রাহ্মাহ্; উলা-য়িকা ইউ'মিনূনা বিহী; ওয়া মান ইয়্যাক্ফুর্ বিহী মিনাল আহ্যা-বি ফান্না-রু মাওই'দুহূ; ফালা-তাকু ফী মিরইয়াতিম্ মিনহু; ইন্নাহুল হ্বাক্কু মির্ রাব্বিকা ওয়ালা-কিন্না আক্ছারা ন্না-ছি লা-ইউ'মিনূন।
১৮. ওয়া মান আয্বলামু মিম্মানিফ্তারা- আ'লাল্লা-হি কাযিবা; উলা-য়িকা ইউ'রাদ্বূনা আ'লা- রাব্বিহিম ওয়া ইয়াক্বূলুল আশ্হা-দু হা-উলা-য়িল্লাযীনা কাযাবূ আ'লা- রাব্বিহিম; আলা- লা'নাতুল্লা-হি আ'লায্য্বা-লিমীন।
১৯. আল্লাযীনা ইয়াছ্বুদ্দূনা আ'ন ছাবীলিল্লা-হি ওয়া ইয়াব্গূনাহা ই'ওয়াজা-; ওয়া হুম বিলআ-খিরাতি হুম কা-ফিরূন।
২০. উলা-য়িকা লাম্ ইয়াকূনূ মু'জিযীনা ফিল আরদ্বি ওয়া মা কা-না লাহুম্ মিন দূনিল্লা-হি মিন আওলিইয়াআ; ইউদ্বা-আ'ফু লাহুমুল আ'যা-ব; মা কা-নূ ইয়াছ্তাত্বীঊ'নাস সামআ' ওয়া মা কা-নূ ইউব্ছি্বরূন। [সুরা : হুদ, আয়াত : ১৭-২০]
অনুবাদ : ১৭. এই ব্যক্তি কি সুস্পষ্ট সত্যের ওপর নয় যে আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা সুস্পষ্ট হেদায়েত অর্থাৎ কোরআনের ওপর প্রতিষ্ঠিত আছে? যার সত্যতার প্রমাণ তো খোদ তার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। আর এর আগে মুসার কিতাবও পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ ছিল; তারা এর ওপর বিশ্বাসও স্থাপন করেছিল। আর যারা এর অবাধ্য হয়েছে, তাদের জন্য জাহান্নামই নির্ধারিত হয়েছে। সুতরাং আল্লাহর বাণী এই কোরআনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহে পতিত হইয়ো না। নিঃসন্দেহে এটা তোমার প্রভুর কাছ থেকে আগত সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বিশ্বাস করে না।
১৮. সেই ব্যক্তির চেয়ে বড় অত্যাচারী আর কে হতে পারে, যে আল্লাহর ওপর মিথ্যা অপবাদ দেয়? এ রূপ লোকদের তাদের প্রভুর সামনে উপস্থিত করা হবে এবং সাক্ষ্যদাতারা বলবে, এরাই সেই লোক, যারা তাদের প্রভুর প্রতি মিথ্যা আরোপ করত। সাবধান! এই অত্যাচারীদের ওপর আল্লাহর লানত।
১৯. এরা আল্লাহর পথ থেকে অন্যদের ফিরিয়ে রাখত এবং আল্লাহর পথে খুঁত খুঁজে বেড়াত, আর আখেরাতকে তো তারা পুরোপুরি অস্বীকারই করত।
২০. এ রূপ লোকেরা পৃথিবীর কোথাও নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হবে না। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া অন্য কোনো বন্ধু বা সাহায্যকারী তাদের সাহায্য করতে পারবে না। তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দেওয়া হবে। (ঘৃণা ও বিদ্বেষে ডুবে থাকার কারণেই) তারা সত্য শুনতে পারত না এবং সত্য দেখতে পারত না।
ব্যাখ্যা : ১৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর বাণী হিসেবে কোরআনের পবিত্রতা, পথনির্দেশ ও অভ্রান্ততা সম্পর্কে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মূলত দুটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। একটি হলো, কোরআন নিজেই সত্যের উজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশ। কোরআন যে সত্য এটা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং অবাধ্যরা সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে কোরআন আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে, এটা মানুষের সৃষ্টি নয়, সেই সঙ্গে এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে কোরআনের ওপর যে প্রতিষ্ঠিত, সে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। দ্বিতীয় যুক্তিটি হলো, মুসা (আ.)-এর কিতাব তাওরাতে কোরআন সম্পর্কে এবং আখেরি নবী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। ইহুদিরা আগে তা স্বীকার করত, তারা এসব বিবরণ পাঠ করত এবং পরস্পরকে বলত। কিন্তু মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের পর হিংসা ও জাত্যাভিমানের কারণে তারা সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। পরবর্তী আয়াত কয়টিতে সত্য অস্বীকারকারীদের নানা রকম কুচরিত্র ও কূটতর্কের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এরা বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা শুরু করে এবং নানা রকম কুযুক্তি দিয়ে আল্লাহ ও রাসুলের পথে খুঁত আবিষ্কার করার চেষ্টা করে। ২০ নম্বর আয়াতে এদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এক শাস্তি তো এদের নিজেদের অবাধ্যতার কারণে, অন্য শাস্তি অন্যদের সত্যের পথ থেকে বিরত করার কারণে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৯. আল্লাযীনা ইয়াছ্বুদ্দূনা আ'ন ছাবীলিল্লা-হি ওয়া ইয়াব্গূনাহা ই'ওয়াজা-; ওয়া হুম বিলআ-খিরাতি হুম কা-ফিরূন।
২০. উলা-য়িকা লাম্ ইয়াকূনূ মু'জিযীনা ফিল আরদ্বি ওয়া মা কা-না লাহুম্ মিন দূনিল্লা-হি মিন আওলিইয়াআ; ইউদ্বা-আ'ফু লাহুমুল আ'যা-ব; মা কা-নূ ইয়াছ্তাত্বীঊ'নাস সামআ' ওয়া মা কা-নূ ইউব্ছি্বরূন। [সুরা : হুদ, আয়াত : ১৭-২০]
অনুবাদ : ১৭. এই ব্যক্তি কি সুস্পষ্ট সত্যের ওপর নয় যে আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা সুস্পষ্ট হেদায়েত অর্থাৎ কোরআনের ওপর প্রতিষ্ঠিত আছে? যার সত্যতার প্রমাণ তো খোদ তার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। আর এর আগে মুসার কিতাবও পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ ছিল; তারা এর ওপর বিশ্বাসও স্থাপন করেছিল। আর যারা এর অবাধ্য হয়েছে, তাদের জন্য জাহান্নামই নির্ধারিত হয়েছে। সুতরাং আল্লাহর বাণী এই কোরআনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহে পতিত হইয়ো না। নিঃসন্দেহে এটা তোমার প্রভুর কাছ থেকে আগত সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বিশ্বাস করে না।
১৮. সেই ব্যক্তির চেয়ে বড় অত্যাচারী আর কে হতে পারে, যে আল্লাহর ওপর মিথ্যা অপবাদ দেয়? এ রূপ লোকদের তাদের প্রভুর সামনে উপস্থিত করা হবে এবং সাক্ষ্যদাতারা বলবে, এরাই সেই লোক, যারা তাদের প্রভুর প্রতি মিথ্যা আরোপ করত। সাবধান! এই অত্যাচারীদের ওপর আল্লাহর লানত।
১৯. এরা আল্লাহর পথ থেকে অন্যদের ফিরিয়ে রাখত এবং আল্লাহর পথে খুঁত খুঁজে বেড়াত, আর আখেরাতকে তো তারা পুরোপুরি অস্বীকারই করত।
২০. এ রূপ লোকেরা পৃথিবীর কোথাও নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হবে না। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া অন্য কোনো বন্ধু বা সাহায্যকারী তাদের সাহায্য করতে পারবে না। তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দেওয়া হবে। (ঘৃণা ও বিদ্বেষে ডুবে থাকার কারণেই) তারা সত্য শুনতে পারত না এবং সত্য দেখতে পারত না।
ব্যাখ্যা : ১৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর বাণী হিসেবে কোরআনের পবিত্রতা, পথনির্দেশ ও অভ্রান্ততা সম্পর্কে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মূলত দুটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। একটি হলো, কোরআন নিজেই সত্যের উজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশ। কোরআন যে সত্য এটা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং অবাধ্যরা সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে কোরআন আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে, এটা মানুষের সৃষ্টি নয়, সেই সঙ্গে এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে কোরআনের ওপর যে প্রতিষ্ঠিত, সে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। দ্বিতীয় যুক্তিটি হলো, মুসা (আ.)-এর কিতাব তাওরাতে কোরআন সম্পর্কে এবং আখেরি নবী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। ইহুদিরা আগে তা স্বীকার করত, তারা এসব বিবরণ পাঠ করত এবং পরস্পরকে বলত। কিন্তু মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের পর হিংসা ও জাত্যাভিমানের কারণে তারা সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। পরবর্তী আয়াত কয়টিতে সত্য অস্বীকারকারীদের নানা রকম কুচরিত্র ও কূটতর্কের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এরা বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা শুরু করে এবং নানা রকম কুযুক্তি দিয়ে আল্লাহ ও রাসুলের পথে খুঁত আবিষ্কার করার চেষ্টা করে। ২০ নম্বর আয়াতে এদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এক শাস্তি তো এদের নিজেদের অবাধ্যতার কারণে, অন্য শাস্তি অন্যদের সত্যের পথ থেকে বিরত করার কারণে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments