সমকালীন প্রসঙ্গ-ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাস প্রসঙ্গে by বদরুদ্দীন উমর
ছাত্রলীগের গত চার বছরের একটানা সন্ত্রাসের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাস। সন্ত্রাসী হিসেবে ছাত্রশিবির নতুন নয়। আশির দশকের প্রথম দিকে মাদ্রাসা ছাত্রদের জন্য সাধারণ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা খুলে যাওয়ার পরই ছাত্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে তারাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রথম শুরু করে।
বিরোধী ছাত্রদের পায়ের রগ কেটে তাদের পঙ্গু করা ছিল তাদের একটা নিয়মিত কাজ। এভাবে পঙ্গু করাই নয়, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হত্যা পর্যন্ত তারা করেছে। এভাবে তারা ছাত্র মহলে সন্ত্রাসী তৎপরতা শুরু করার পর ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ইত্যাদি সংগঠনও একইভাবে সন্ত্রাসের পথে পা বাড়ায়। এর পরিণতিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির সন্ত্রাসীকরণ ঘটে, যার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হলো গত চার বছরের আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগের দুর্নীতি ও সন্ত্রাস।
ছাত্রলীগ এই সন্ত্রাস করতে গিয়ে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ইত্যাদি বিরোধী দলের ছাত্রদের ওপর অনেকবার চড়াও হয়েছে। তাছাড়া সন্ত্রাসের সঙ্গে দুর্নীতিকে তারা এমনভাবে জড়িয়ে দিয়েছে, যাতে সাধারণ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাদের পৃথক করে দেখার উপায় নেই। এ কারণে আজকের বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বলতে শুধু জামায়াতে ইসলামীকে বোঝাতে চাইলে সেটা হবে এক অবাস্তব ব্যাপার।
এই মুহূর্তে নতুন উদ্যমে ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাস দিকে দিকে শুরু হওয়ার কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। অপরাধী হিসেবে আটক করে যাদের বিচার কাজ এখন চলছে তাদের বিরুদ্ধে সব মামলা উঠিয়ে নিয়ে তাদের মুক্ত করার দাবিতেই এখন ছাত্রশিবির মাঠে নেমেছে। জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন হিসেবে এদের এই ভূমিকা স্বাভাবিক। কিন্তু তা হলেও এতদিন পর্যন্ত তারা মাঠে নামেনি, যেভাবে এখন তারা নেমেছে। এর জন্য আওয়ামী লীগ কতখানি দায়ী সেটাও ভেবে দেখা দরকার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে এ দেশে যে কোনো ইস্যুতে যে কেউ আন্দোলন করলেই সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ থেকে সবসময় বলা হয়েছে যে, এই বিচার ভণ্ডুল ও বন্ধ করার জন্যই তা করা হচ্ছে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী এবং অন্য ইসলামী দলগুলোর বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কে এটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগের এক বাঁধা অভিযোগ। একথা একটানাভাবে তারা বলে যেতে থাকার ফলে এখন সত্যি সত্যিই জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির বেশ প্রকাশ্যেই এবং একটা ইস্যু হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ ও তাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে এবং আন্দোলনের নামে চারদিকে শুরু করেছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাসী হিসেবে এদের যে রেকর্ড এরা আগে স্থাপন করেছে তাতে মনে হয়, এদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ব্যাপকতা ও হিংস্রতা এখন থেকে ক্রমাগত বেড়েই চলবে।
কয়েকদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একজনের ওপর ছাত্রশিবির যে হিংস্র হামলা করেছে এর থেকেই বোঝা যায় ভবিষ্যতে তারা তাদের এই সন্ত্রাস কীভাবে পরিচালনা করবে। জামায়াতে ইসলামীই বাংলাদেশে সব থেকে সংগঠিত রাজনৈতিক দল এবং ছাত্রশিবির হলো ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সব থেকে সংগঠিত। অন্য দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অভ্যন্তীণ দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ দেখা যায় ছাত্রশিবিরের মধ্যে সেভাবে তা দেখা যায় না। এর ফলে সংগঠিত শক্তিরূপে সন্ত্রাস পরিচালনা এবং অন্যদের ওপর হামলার ক্ষমতা তাদের অনেক বেশি। বর্তমানে তারা পুলিশের সঙ্গে যেভাবে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে ও পুলিশকে বেকায়দা অবস্থায় ফেলছে এর থেকে বোঝা যায় যে, তথাকথিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনী জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী তৎপরতার মোকাবেলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট দুর্বল। সেক্ষেত্রে পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে কাজ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবে কি-না এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসের মোকাবেলা এখন ছাত্রলীগ করছে পাল্টা সন্ত্রাসের মাধ্যমে। ক্ষেত্রবিশেষে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবেই তারা এ কাজ করছে। তাদের এই সংঘর্ষ দেশের বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করার পথই প্রশস্ত করছে। পাকিস্তান আমলে ছাত্র সম্প্রদায় জনগণের কাছে প্রিয় এবং আদরণীয় ছিল এ কারণে যে, তারা দেশের নানা সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করত। জনগণের যে কোনো বিপদে জনগণের পাশে দাঁড়াত এবং সন্ত্রাসের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক থাকত না। বর্তমানে জনগণ ছাত্রদের নিজেদের শক্তি মনে করে না। উপরন্তু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পরিপূরক শক্তি হিসেবেই তাদের দেখে। পুলিশ যেভাবে ছাত্রলীগকে তার সন্ত্রাসে সহায়তা করে তার থেকে বোঝা যায় যে, সরকারি দলের ঠ্যাঙ্গাড়ে বাহিনী হিসেবে তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। এটা যে শুধু আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা-ই নয়। অতীতে দেখা গেছে, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেখা যাবে যে, যে কোনো দল ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তারা পুলিশকে এভাবেই ব্যবহার করে। এদিক দিয়ে পুলিশ একেবারে নিরপেক্ষ। আজ পুলিশ যাদের রাস্তায় ফেলে পেটাচ্ছে আগামীকাল এই পেটানি খাওয়া দল ক্ষমতায় এলে এদের নির্দেশে এরা আজকের ক্ষমতাসীনদের একইভাবে রাস্তায় লাঠিপেটা থেকে নিয়ে তাদের ওপর সব রকম নির্যাতনই করবে। নতুন সরকারের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে দাঁড়িয়ে তারা সরকারবিরোধীদের ওপর হামলা করবে।
বাংলাদেশের সার্বিক শৃঙ্খলাগত অবস্থার অবনতি ঘটেই চলেছে। এই অবনতি রোধ করা, এমনকি কমিয়ে আনার মতো কোনো শক্তি দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু যা দেখা যাচ্ছে তা হলো, দিকে দিকে অরাজকতা সৃষ্টি করার মতো শক্তিরই বিস্তার। এই পরিস্থিতির ভয়াবহ দিক হলো, আগে ছাত্ররা যেভাবে সমাজবিরোধী শক্তি প্রতিরোধের জন্য এগিয়ে আসত তার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। উপরন্তু ছাত্ররাই এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে অরাজক শক্তির মধ্যে অন্যতম প্রধান।
ছাত্রশিবিরের বর্তমান সন্ত্রাসী তৎপরতার বিষয় বলতে গিয়ে এটা সবসময়ই মনে রাখা দরকার যে, তারা কোনো বিচ্ছিন্ন ব্যাপার নয়। সমগ্র সমাজে যে পরিস্থিতি আজ বিরাজ করছে তার গর্ভেই ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের বর্তমান সন্ত্রাসের মূল। ভবিষ্যতে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে একইভাবে তাদের ছাত্র সংগঠন মাঠে নামবে। তারা আগেও নিরামিষাশী ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। তখন ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল একযোগে মাঠে নামবে এবং নিরপেক্ষ পুলিশ বাহিনী, র্যাব ইত্যাদি তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। একই শ্রেণী-চরিত্রসম্পন্ন এসব রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে পার্থক্য করার কিছু নেই। তারা সকলেই একই গর্তের শিয়াল।
২৫.১১.২০১২
বদরুদ্দীন উমর :সভাপতি, জাতীয়
মুক্তি কাউন্সিল
ছাত্রলীগ এই সন্ত্রাস করতে গিয়ে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ইত্যাদি বিরোধী দলের ছাত্রদের ওপর অনেকবার চড়াও হয়েছে। তাছাড়া সন্ত্রাসের সঙ্গে দুর্নীতিকে তারা এমনভাবে জড়িয়ে দিয়েছে, যাতে সাধারণ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাদের পৃথক করে দেখার উপায় নেই। এ কারণে আজকের বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বলতে শুধু জামায়াতে ইসলামীকে বোঝাতে চাইলে সেটা হবে এক অবাস্তব ব্যাপার।
এই মুহূর্তে নতুন উদ্যমে ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাস দিকে দিকে শুরু হওয়ার কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। অপরাধী হিসেবে আটক করে যাদের বিচার কাজ এখন চলছে তাদের বিরুদ্ধে সব মামলা উঠিয়ে নিয়ে তাদের মুক্ত করার দাবিতেই এখন ছাত্রশিবির মাঠে নেমেছে। জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন হিসেবে এদের এই ভূমিকা স্বাভাবিক। কিন্তু তা হলেও এতদিন পর্যন্ত তারা মাঠে নামেনি, যেভাবে এখন তারা নেমেছে। এর জন্য আওয়ামী লীগ কতখানি দায়ী সেটাও ভেবে দেখা দরকার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে এ দেশে যে কোনো ইস্যুতে যে কেউ আন্দোলন করলেই সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ থেকে সবসময় বলা হয়েছে যে, এই বিচার ভণ্ডুল ও বন্ধ করার জন্যই তা করা হচ্ছে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী এবং অন্য ইসলামী দলগুলোর বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কে এটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগের এক বাঁধা অভিযোগ। একথা একটানাভাবে তারা বলে যেতে থাকার ফলে এখন সত্যি সত্যিই জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির বেশ প্রকাশ্যেই এবং একটা ইস্যু হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ ও তাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে এবং আন্দোলনের নামে চারদিকে শুরু করেছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাসী হিসেবে এদের যে রেকর্ড এরা আগে স্থাপন করেছে তাতে মনে হয়, এদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ব্যাপকতা ও হিংস্রতা এখন থেকে ক্রমাগত বেড়েই চলবে।
কয়েকদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একজনের ওপর ছাত্রশিবির যে হিংস্র হামলা করেছে এর থেকেই বোঝা যায় ভবিষ্যতে তারা তাদের এই সন্ত্রাস কীভাবে পরিচালনা করবে। জামায়াতে ইসলামীই বাংলাদেশে সব থেকে সংগঠিত রাজনৈতিক দল এবং ছাত্রশিবির হলো ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সব থেকে সংগঠিত। অন্য দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অভ্যন্তীণ দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ দেখা যায় ছাত্রশিবিরের মধ্যে সেভাবে তা দেখা যায় না। এর ফলে সংগঠিত শক্তিরূপে সন্ত্রাস পরিচালনা এবং অন্যদের ওপর হামলার ক্ষমতা তাদের অনেক বেশি। বর্তমানে তারা পুলিশের সঙ্গে যেভাবে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে ও পুলিশকে বেকায়দা অবস্থায় ফেলছে এর থেকে বোঝা যায় যে, তথাকথিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনী জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী তৎপরতার মোকাবেলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট দুর্বল। সেক্ষেত্রে পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে কাজ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবে কি-না এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসের মোকাবেলা এখন ছাত্রলীগ করছে পাল্টা সন্ত্রাসের মাধ্যমে। ক্ষেত্রবিশেষে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবেই তারা এ কাজ করছে। তাদের এই সংঘর্ষ দেশের বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করার পথই প্রশস্ত করছে। পাকিস্তান আমলে ছাত্র সম্প্রদায় জনগণের কাছে প্রিয় এবং আদরণীয় ছিল এ কারণে যে, তারা দেশের নানা সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করত। জনগণের যে কোনো বিপদে জনগণের পাশে দাঁড়াত এবং সন্ত্রাসের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক থাকত না। বর্তমানে জনগণ ছাত্রদের নিজেদের শক্তি মনে করে না। উপরন্তু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পরিপূরক শক্তি হিসেবেই তাদের দেখে। পুলিশ যেভাবে ছাত্রলীগকে তার সন্ত্রাসে সহায়তা করে তার থেকে বোঝা যায় যে, সরকারি দলের ঠ্যাঙ্গাড়ে বাহিনী হিসেবে তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। এটা যে শুধু আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা-ই নয়। অতীতে দেখা গেছে, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেখা যাবে যে, যে কোনো দল ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তারা পুলিশকে এভাবেই ব্যবহার করে। এদিক দিয়ে পুলিশ একেবারে নিরপেক্ষ। আজ পুলিশ যাদের রাস্তায় ফেলে পেটাচ্ছে আগামীকাল এই পেটানি খাওয়া দল ক্ষমতায় এলে এদের নির্দেশে এরা আজকের ক্ষমতাসীনদের একইভাবে রাস্তায় লাঠিপেটা থেকে নিয়ে তাদের ওপর সব রকম নির্যাতনই করবে। নতুন সরকারের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে দাঁড়িয়ে তারা সরকারবিরোধীদের ওপর হামলা করবে।
বাংলাদেশের সার্বিক শৃঙ্খলাগত অবস্থার অবনতি ঘটেই চলেছে। এই অবনতি রোধ করা, এমনকি কমিয়ে আনার মতো কোনো শক্তি দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু যা দেখা যাচ্ছে তা হলো, দিকে দিকে অরাজকতা সৃষ্টি করার মতো শক্তিরই বিস্তার। এই পরিস্থিতির ভয়াবহ দিক হলো, আগে ছাত্ররা যেভাবে সমাজবিরোধী শক্তি প্রতিরোধের জন্য এগিয়ে আসত তার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। উপরন্তু ছাত্ররাই এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে অরাজক শক্তির মধ্যে অন্যতম প্রধান।
ছাত্রশিবিরের বর্তমান সন্ত্রাসী তৎপরতার বিষয় বলতে গিয়ে এটা সবসময়ই মনে রাখা দরকার যে, তারা কোনো বিচ্ছিন্ন ব্যাপার নয়। সমগ্র সমাজে যে পরিস্থিতি আজ বিরাজ করছে তার গর্ভেই ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের বর্তমান সন্ত্রাসের মূল। ভবিষ্যতে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে একইভাবে তাদের ছাত্র সংগঠন মাঠে নামবে। তারা আগেও নিরামিষাশী ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। তখন ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল একযোগে মাঠে নামবে এবং নিরপেক্ষ পুলিশ বাহিনী, র্যাব ইত্যাদি তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। একই শ্রেণী-চরিত্রসম্পন্ন এসব রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে পার্থক্য করার কিছু নেই। তারা সকলেই একই গর্তের শিয়াল।
২৫.১১.২০১২
বদরুদ্দীন উমর :সভাপতি, জাতীয়
মুক্তি কাউন্সিল
No comments