টুকরো টুকরো-কে জানত দুদিন পর মহড়াই বাস্তব হবে!
আগুন লাগলেই বাজবে বিপদ সংকেত- সে ব্যবস্থা করা আছে। বৃহস্পতিবার দুপুরেও একবার বেজেছিল। এরপর যে যার কাজ ফেলে দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। কিন্তু তা ছিল নিতান্তই মহড়া। কে জানত দুদিন পর সেই মহড়া বাস্তবে রূপ নেবে?শনিবার সন্ধ্যায় আগুন লাগল। বিপদ সংকেতও বাজল।
তবে বাজেনি মাইক। এ অবস্থায় কেউ কেউ ধরে নেয় আবারও মহড়া চলছে। অনেকে প্রাণভয়ে ছুটতেও শুরু করে। কিন্তু গেট তালাবদ্ধ থাকায় কিছু সময় অবরুদ্ধ থাকতে হয় কয়েক হাজার শ্রমিককে। পরে খুলে দেওয়া হলে তারা বেরিয়ে আসে। কিন্তু মহড়া, নাকি বাস্তবতা- এ দুয়ের মাঝামাঝি অবস্থানকারীদের মাশুল দিতে হলো জীবন দিয়ে।
সেলিনা আক্তার (৪৫) নামের এক শ্রমিক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সংকেত শুনে প্রথমে ভাবি মহড়া। একটু পর ধোঁয়া দেখে দৌড় দিই। কিন্তু মহড়ার কথা বলে আমাদের নিয়ন্ত্রক নামতে বাধা দেন। পরে সবাই মিলে একপ্রকার জোর করে বেরিয়ে যাই।'
শ্রমিক রাহেলা আক্তার, করিমন বিবি বলেন, মহড়ার দিন সংকেত বাজানোর পর পাঁচ মিনিট লাগেনি সব শ্রমিক নিরাপদে যেতে। শনিবার যখন সত্যিই আগুনের সংকেত বাজানো হলো, তা সঠিক সময়ে বুঝতে পারলে এত মৃত্যু ঘটত না। মহড়ার সময় সংকেতের পাশাপাশি কারখানার নিজস্ব মাইকে আগুনের খবর প্রচার হয়েছিল, কিন্তু যখন সত্যিই আগুন লাগল মাইকে সে ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
প্রাণ নিয়ে ফিরে আসা : আগুন লাগার কথা শুনে দৌড়ে গেটে গিয়ে রিখা আক্তার (৩০) দেখেন গেট তালাবদ্ধ। ফিরে আসেন পূর্ব পাশে। সামনের এক পুরুষ গ্রিলের তালা ভেঙে পথ তৈরি করেন। কারখানার ভবনের দেওয়ালে পলেস্তরার কাজ চলার কারণে অনেকটা মই আকৃতির বাঁশ টানানো ছিল। সেই বাঁশ বেয়ে নেমে পড়েন রিখা। তাঁর দেখাদেখি আরো অনেকেই চারতলা থেকে এভাবে নেমে আসেন। ফলে বেঁচে যান তাঁরা। রবিবার কালের কণ্ঠের কাছে নিজেদের বেঁচে আসার কাহিনী বর্ণনা করেন অনেকেই।
শাহেনা আক্তার বলেন, 'যখন বুঝতে পারছি মৃত্যু নিশ্চিত, তখন আর বসে থেকে কী করব। তাই ঝুঁকি নিয়ে বাঁশ বেয়ে নামতে শুরু করি। পূর্ব পাশে দ্বিতল ভবনের ছাদে লাফ দিয়ে হাত-পা ভাঙে অনেকের। তবু শুকরিয়া, বেঁচে আছি।'
আবদুল হামিদের স্ত্রী আলে নূর লাফিয়ে বাঁচতে গিয়ে পা ভাঙেন। বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তখন ভেতরে শুধু একটাই রব, বাঁচাও বাঁচাও। সবাই হাউমাউ করছিল। ঠিক মতো দেখা যাচ্ছিল না, সব কিছু আবছা লাগছিল।'
মরিয়ম বিবি বলেন, 'আবছা অন্ধকারের মধ্যে অনুমান করে সামনে গিয়ে সিঁড়ি খুঁজে পাই। সিঁড়ির রেলিং ধরে নামতে শুরু করি। ফলে প্রাণে বাঁচতে পেরেছি।'
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা নারী-পুরুষ জানায়, প্রাণে বাঁচার প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল সবার মাঝে। অনেক হুড়োহুড়ি করেও অনেকের শেষরক্ষা হয়নি। অনেকেই ভবনের তিন-চারতলার ওপর থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছে, অনেকে ভেঙেছে হাত-পা।
সেলিনা আক্তার (৪৫) নামের এক শ্রমিক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সংকেত শুনে প্রথমে ভাবি মহড়া। একটু পর ধোঁয়া দেখে দৌড় দিই। কিন্তু মহড়ার কথা বলে আমাদের নিয়ন্ত্রক নামতে বাধা দেন। পরে সবাই মিলে একপ্রকার জোর করে বেরিয়ে যাই।'
শ্রমিক রাহেলা আক্তার, করিমন বিবি বলেন, মহড়ার দিন সংকেত বাজানোর পর পাঁচ মিনিট লাগেনি সব শ্রমিক নিরাপদে যেতে। শনিবার যখন সত্যিই আগুনের সংকেত বাজানো হলো, তা সঠিক সময়ে বুঝতে পারলে এত মৃত্যু ঘটত না। মহড়ার সময় সংকেতের পাশাপাশি কারখানার নিজস্ব মাইকে আগুনের খবর প্রচার হয়েছিল, কিন্তু যখন সত্যিই আগুন লাগল মাইকে সে ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
প্রাণ নিয়ে ফিরে আসা : আগুন লাগার কথা শুনে দৌড়ে গেটে গিয়ে রিখা আক্তার (৩০) দেখেন গেট তালাবদ্ধ। ফিরে আসেন পূর্ব পাশে। সামনের এক পুরুষ গ্রিলের তালা ভেঙে পথ তৈরি করেন। কারখানার ভবনের দেওয়ালে পলেস্তরার কাজ চলার কারণে অনেকটা মই আকৃতির বাঁশ টানানো ছিল। সেই বাঁশ বেয়ে নেমে পড়েন রিখা। তাঁর দেখাদেখি আরো অনেকেই চারতলা থেকে এভাবে নেমে আসেন। ফলে বেঁচে যান তাঁরা। রবিবার কালের কণ্ঠের কাছে নিজেদের বেঁচে আসার কাহিনী বর্ণনা করেন অনেকেই।
শাহেনা আক্তার বলেন, 'যখন বুঝতে পারছি মৃত্যু নিশ্চিত, তখন আর বসে থেকে কী করব। তাই ঝুঁকি নিয়ে বাঁশ বেয়ে নামতে শুরু করি। পূর্ব পাশে দ্বিতল ভবনের ছাদে লাফ দিয়ে হাত-পা ভাঙে অনেকের। তবু শুকরিয়া, বেঁচে আছি।'
আবদুল হামিদের স্ত্রী আলে নূর লাফিয়ে বাঁচতে গিয়ে পা ভাঙেন। বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তখন ভেতরে শুধু একটাই রব, বাঁচাও বাঁচাও। সবাই হাউমাউ করছিল। ঠিক মতো দেখা যাচ্ছিল না, সব কিছু আবছা লাগছিল।'
মরিয়ম বিবি বলেন, 'আবছা অন্ধকারের মধ্যে অনুমান করে সামনে গিয়ে সিঁড়ি খুঁজে পাই। সিঁড়ির রেলিং ধরে নামতে শুরু করি। ফলে প্রাণে বাঁচতে পেরেছি।'
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা নারী-পুরুষ জানায়, প্রাণে বাঁচার প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল সবার মাঝে। অনেক হুড়োহুড়ি করেও অনেকের শেষরক্ষা হয়নি। অনেকেই ভবনের তিন-চারতলার ওপর থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছে, অনেকে ভেঙেছে হাত-পা।
No comments