প্রবাসী আয় সবচেয়ে বেশি কমছে বাংলাদেশেই
বিশ্বের প্রতিটি দেশেই প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রাপ্তি কমেছে। তবে দেশগুলোর মধ্যে প্রবাসী আয় সবচেয়ে বেশি কমেছে বাংলাদেশ ও ভারতে। সে তুলনায় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় প্রবাসী আয় কমে যাওয়া এতটা প্রকট হয়নি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কমে যাওয়া এখন একটি বৈশ্বিক প্রবণতা। দুই বছর ধরেই এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০১৭ সালেও একই প্রবণতা। যেমন ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স কমেছিল ১ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৪২৯ বিলিয়ন বা ৪২ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ নিয়ে তাদের ‘হালনাগাদ উন্নয়ন’ নামে সেপ্টেম্বর সংখ্যার প্রতিবেদনে প্রবাসী আয় পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী সব দেশে প্রবাসী আয় কমলেও এর গভীরতা ও ধারাবাহিকতার দিক থেকে পরিস্থিতি খারাপ বেশি বাংলাদেশ ও ভারতের। অর্থাৎ এই দেশ দুটিতে প্রবাসী আয় বেশি কমেছে এবং তা ধারাবাহিকভাবেই কমছে। বাংলাদেশ ও অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় পায় মূলত মধ্য উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে। এসব দেশের অর্থনীতির আয়ের মূল উৎস জ্বালানি তেল। আর এই জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণেই প্রবাসী আয়ে ধাক্কা লেগেছে। তেল থেকে আয় কমে যাওয়ায় উপসাগরীয় দেশগুলো নানা ধরনের আর্থিক নীতি গ্রহণ করেছে। যেমন, অনাবাসী নাগরিকদের ওপর কর আরোপ, জ্বালানি ব্যয় বৃদ্ধি ও ভর্তুকি হ্রাস। এসব কারণে দেশগুলোতে থাকা মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। আর এরই প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয় প্রবাহে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমেছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা পাঠান ১ হাজার ২৭৬ কোটি ডলার। আর তারও আগের অর্থবছরে (২০১৫-১৬) প্রবাসী আয় আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। এই অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমেছিল আড়াই শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। যদিও চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) অবশ্য প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। ঈদের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করা হয়।
বাংলাদেশও প্রবাসী আয়ের জন্য উপসাগরীয় দেশগুলোর ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। মোট প্রবাসী আয়ের ৬০ শতাংশই আসে এসব দেশ থেকে। একমাত্র কাতার ছাড়া বাকি সব উপসাগরীয় দেশ থেকেই প্রবাসী আয় হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কুয়েত থেকে প্রবাসী আয় আসা কমেছে সবচেয়ে বেশি।
আয় কমলেও প্রবাসে কাজ করতে যাওয়া বাংলাদেশের মানুষের সংখ্যা কমেনি, বরং বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপসাগরীয় দেশগুলোতে বাংলাদেশি যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। এ সময় ৭ লাখ ৫১ হাজার ৪১০ জন উপসাগরীয় দেশগুলোতে কাজ করতে গেছেন। এই সংখ্যা গত অর্থবছরের মোট জনশক্তি রপ্তানির ৮৪ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি গেছে সৌদি আরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। এত মানুষ গেলেও বিপরীতে কত মানুষ একই সময়ে ফিরে এসেছেন, তার কোনো নির্ভরযোগ্য উপাত্ত নেই, উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, নতুন যাঁরা গেছেন, তাঁদের প্রতি চারজনের একজন নারী। তাঁরা অত্যন্ত কম বেতনে যাচ্ছেন। এটিও প্রবাসী আয় কমার আরেকটি কারণ।
কেন কমছে
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার কারণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে। দেখা গেছে, প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে অর্থ পাঠানোর অনানুষ্ঠানিক পথ ব্যবহার করা হচ্ছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। বলে রাখা ভালো, পরিমাণের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় কমেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে নানা ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিরই ব্যবহার বেশি হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সমীক্ষায়ও দেখা গেছে, ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং ও হুন্ডির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। এর একটি কারণ হতে পারে বিনিময় হারের পার্থক্য, দ্রুত অর্থ পাঠানোর সুবিধা ও কম খরচ।
বিশ্বব্যাংক সবশেষে বলছে, কমে গেলেও এখনো বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস এই প্রবাসী আয়। এই আয় মোট ঋণ ও বিদেশি বিনিয়োগের চেয়েও বেশি। তা ছাড়া, বিশেষ করে বাংলাদেশের পল্লি অঞ্চলের বিশালসংখ্যক পরিবার এই প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং এভাবে প্রবাসী আয় কমে যাওয়া অব্যাহত থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতিতেই এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কমে যাওয়া এখন একটি বৈশ্বিক প্রবণতা। দুই বছর ধরেই এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০১৭ সালেও একই প্রবণতা। যেমন ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স কমেছিল ১ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৪২৯ বিলিয়ন বা ৪২ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ নিয়ে তাদের ‘হালনাগাদ উন্নয়ন’ নামে সেপ্টেম্বর সংখ্যার প্রতিবেদনে প্রবাসী আয় পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী সব দেশে প্রবাসী আয় কমলেও এর গভীরতা ও ধারাবাহিকতার দিক থেকে পরিস্থিতি খারাপ বেশি বাংলাদেশ ও ভারতের। অর্থাৎ এই দেশ দুটিতে প্রবাসী আয় বেশি কমেছে এবং তা ধারাবাহিকভাবেই কমছে। বাংলাদেশ ও অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় পায় মূলত মধ্য উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে। এসব দেশের অর্থনীতির আয়ের মূল উৎস জ্বালানি তেল। আর এই জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণেই প্রবাসী আয়ে ধাক্কা লেগেছে। তেল থেকে আয় কমে যাওয়ায় উপসাগরীয় দেশগুলো নানা ধরনের আর্থিক নীতি গ্রহণ করেছে। যেমন, অনাবাসী নাগরিকদের ওপর কর আরোপ, জ্বালানি ব্যয় বৃদ্ধি ও ভর্তুকি হ্রাস। এসব কারণে দেশগুলোতে থাকা মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। আর এরই প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয় প্রবাহে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমেছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা পাঠান ১ হাজার ২৭৬ কোটি ডলার। আর তারও আগের অর্থবছরে (২০১৫-১৬) প্রবাসী আয় আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। এই অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমেছিল আড়াই শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। যদিও চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) অবশ্য প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। ঈদের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করা হয়।
বাংলাদেশও প্রবাসী আয়ের জন্য উপসাগরীয় দেশগুলোর ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। মোট প্রবাসী আয়ের ৬০ শতাংশই আসে এসব দেশ থেকে। একমাত্র কাতার ছাড়া বাকি সব উপসাগরীয় দেশ থেকেই প্রবাসী আয় হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কুয়েত থেকে প্রবাসী আয় আসা কমেছে সবচেয়ে বেশি।
আয় কমলেও প্রবাসে কাজ করতে যাওয়া বাংলাদেশের মানুষের সংখ্যা কমেনি, বরং বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপসাগরীয় দেশগুলোতে বাংলাদেশি যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। এ সময় ৭ লাখ ৫১ হাজার ৪১০ জন উপসাগরীয় দেশগুলোতে কাজ করতে গেছেন। এই সংখ্যা গত অর্থবছরের মোট জনশক্তি রপ্তানির ৮৪ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি গেছে সৌদি আরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। এত মানুষ গেলেও বিপরীতে কত মানুষ একই সময়ে ফিরে এসেছেন, তার কোনো নির্ভরযোগ্য উপাত্ত নেই, উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, নতুন যাঁরা গেছেন, তাঁদের প্রতি চারজনের একজন নারী। তাঁরা অত্যন্ত কম বেতনে যাচ্ছেন। এটিও প্রবাসী আয় কমার আরেকটি কারণ।
কেন কমছে
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার কারণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে। দেখা গেছে, প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে অর্থ পাঠানোর অনানুষ্ঠানিক পথ ব্যবহার করা হচ্ছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। বলে রাখা ভালো, পরিমাণের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় কমেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে নানা ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিরই ব্যবহার বেশি হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সমীক্ষায়ও দেখা গেছে, ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং ও হুন্ডির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। এর একটি কারণ হতে পারে বিনিময় হারের পার্থক্য, দ্রুত অর্থ পাঠানোর সুবিধা ও কম খরচ।
বিশ্বব্যাংক সবশেষে বলছে, কমে গেলেও এখনো বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস এই প্রবাসী আয়। এই আয় মোট ঋণ ও বিদেশি বিনিয়োগের চেয়েও বেশি। তা ছাড়া, বিশেষ করে বাংলাদেশের পল্লি অঞ্চলের বিশালসংখ্যক পরিবার এই প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং এভাবে প্রবাসী আয় কমে যাওয়া অব্যাহত থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতিতেই এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
No comments