লড়াইয়ের আগেই ‘লড়াই’ শেষ
এই বলটা দিয়েই ৬ উইকেট নিয়েছেন জুবায়ের হোসেন। কাল ফতুল্লায় কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের শেষ উইকেটটি নেওয়ার পর আবাহনীর লেগ স্পিনার মাঠ ছাড়লেন দলের মধ্যমণি হয়ে |
মুখোমুখি মাশরাফি বিন মুর্তজার কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ও তামিম ইকবালের আবাহনী। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের নতুন মৌসুমের উদ্বোধনী দিনে তাই ফতুল্লার এই ম্যাচকে ঘিরেই ছিল সর্বোচ্চ কৌতূহল। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপ উপেক্ষা করে কয়েক শ দর্শকের ম্যাচ দেখতে আসাটাই দিল প্রমাণ। কিন্তু সবাই হতাশই হলেন একতরফা ম্যাচ দেখে। যে ম্যাচে কাল কলাবাগানের ১৪০ রান আবাহনী টপকে গেছে ৭ উইকেট ও ১২৯ বল হাতে রেখেই। আর তামিম-মাশরাফির ম্যাচের নায়ক ‘উপেক্ষিত’ জুবায়ের হোসেন। মেঘলা আকাশ সঙ্গে দখিনা হাওয়া, ম্যাচের শুরুতে সহনীয় আবহাওয়াই ছিল। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া কলাবাগানের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট নেই। তাসকিন আহমেদের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটকিপার লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়েছেন শাদমান ইসলাম। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ তাসকিন ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেন উইকেট মেডেন নিয়ে। কলাবাগানের স্কোরবোর্ডে প্রথম রান জমা পড়ে ইনিংসের নবম বলে। রানের খাতা খুলতেই যা একটু দেরি হয়েছে, না হলে ভালোই গতি ছিল কলাবাগানের ইনিংসে। প্রথমে জসীমউদ্দিন ও পরে তাসামুল হককে নিয়ে রানের চাকাটা সচল রাখেন জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। দ্বিতীয় উইকেটে জসীমউদ্দিনকে নিয়ে ৩৪ বলে ৩৭ ও তৃতীয় উইকেটে তাসামুলের সঙ্গে ৫৭ বলে ৪১ রান যোগ করেন তিনবার জীবন পাওয়া মাসাকাদজা। ১৫ ওভার শেষে কলাবাগানের স্কোর ২ উইকেটে ৭৭। অবস্থাটা পাল্টে যায় ১৬তম ওভারে জুবায়ের হোসেন আক্রমণে আসতেই। গত মৌসুমে ঢাকা লিগে ম্যাচের পর ম্যাচ বাইরে বসে থাকা জাতীয় দলের এই লেগ স্পিনার তৃতীয় বলেই গুগলিতে বিভ্রান্ত করেন মাসাকাদজাকে। পরের ২ ওভারে ২ উইকেট—লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংই হয়ে যায় জুবায়েরের। পরে উইকেট নিয়েছেন আরও ৩টি। টানা ৯.১ ওভারের এক স্পেলেই ৩৪ রানে ৬ উইকেট এই লেগ স্পিনারের। ১৭.৫ ওভারে ৬২ রান তুলতেই শেষ ৮ উইকেট হারায় কলাবাগান। আবাহনীর শুরুটাও ভালো হয়নি। দলকে ১১ রানে রেখেই রানআউট অধিনায়ক তামিম। লাঞ্চের আগেই দলীয় ৩৩ রানে আউট লিটন দাসও। চাপটা অবশ্য ধরে রাখতে পারেনি কলবাগান। তৃতীয় উইকেটে ওপেনার অভিষেক মিত্রকে নিয়ে ৫২ রান যোগ করেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান উদয় কৌল। কলাবাগানের ইনিংসের অধিকাংশ সময় উইকেটকিপিং করা কৌল এরপর নাজমুল হোসেনকে (শান্ত) নিয়ে ৫৭ রান যোগ করে ম্যাচের সমাপ্তি টানেন। জুবায়েরের ম্যাচে ভুলে যাওয়ার মতো পারফরম্যান্স মাশরাফির। তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে ব্যাটিংয়ে এসে ৬ বলে ১ রান করেছেন, ৪ ওভারের এক স্পেলে ১৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থেকে গেছেন কলাবাগানের অধিনায়ক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কলাবাগান কেসি: ৩৩.১ ওভারে ১৪০ (মাসাকাদজা ৪১, তাসামুল ৩৭; জুবায়ের ৬/৩৪, সাকলাইন ২/২৫)।
আবাহনী: ২৮.৩ ওভারে ১৪২/৩ (কৌল ৪৪*, নাজমুল ৩৫*, অভিষেক ৩২; সাব্বির ১/৭)।
ফল: আবাহনী ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জুবায়ের হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কলাবাগান কেসি: ৩৩.১ ওভারে ১৪০ (মাসাকাদজা ৪১, তাসামুল ৩৭; জুবায়ের ৬/৩৪, সাকলাইন ২/২৫)।
আবাহনী: ২৮.৩ ওভারে ১৪২/৩ (কৌল ৪৪*, নাজমুল ৩৫*, অভিষেক ৩২; সাব্বির ১/৭)।
ফল: আবাহনী ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জুবায়ের হোসেন।
No comments