নদীগুলো মরে যাচ্ছে-খননসহ পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে
চলতি মাসের প্রথমার্ধেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-চ্যানেলে পাঁচটি ফেরি মোট প্রায় ২৫০ ঘণ্টা ডুবোচরে আটকা পড়ে থাকে। এতে যাত্রীদের যেমন ভোগান্তি হয়, তেমনি পরিবহনে থাকা পচনশীল খাদ্যসামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাওয়া-কাওরাকান্দিসহ অন্যান্য ফেরি রুটেরও প্রায় একই অবস্থা। শুধু ফেরি রুট নয়, সারা দেশের নদীপথের অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। ১৯৭৫ সালে যেখানে আমাদের ২৪ হাজার কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ নদীপথ ছিল, সেখানে বর্তমানে আছে ছয় হাজার কিলোমিটারের মতো।
শুষ্ক মৌসুমে তা নেমে আসে তিন হাজার ৮০০ কিলোমিটারে। তদুপরি নদীপথগুলোর গভীরতা এত কম যে, অধিকাংশ নৌপথেই বড় নৌযান চলাচল করতে পারে না। দেশে প্রথম শ্রেণীর বা ১২ ফুটের বেশি গভীরতার নৌপথ আছে মাত্র ৬৮৩ কিলোমিটার। গভীরতা পাঁচ ফুটের নিচে চলে আসায় কেবল গত দুই বছরেই ৪০৭ কিলোমিটার নদীপথ বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই অধিকাংশ নৌপথ বন্ধ হয়ে যাবে। বর্ষায় সারা দেশ বন্যায় ভাসবে, অন্য সময় খরায় শুকিয়ে মরবে। চাষাবাদ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও নেমে আসবে চরম বিপর্যয়। আমরা কী সেই পরিণতির জন্যই অপেক্ষা করব, নাকি এর প্রতিকারে সর্বশক্তি নিয়োগ করব?
বাংলাদেশের নদী মরে যাওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে উজানে নদীগুলোর পানিপ্রবাহকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করা, পানির যথেষ্ট প্রবাহ না থাকায় এবং ভূমিক্ষয় বেড়ে যাওয়ায় নদীগুলোতে ক্রমবর্ধমান হারে পলি জমা হওয়া, নিয়মিত নদীখননের ব্যবস্থা না থাকা, অপরিকল্পিত নদীশাসন ও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ইত্যাদি। এ ছাড়া অতীতের সরকারগুলোর অবহেলা ও অপরাজনীতিও এই সমস্যাকে প্রকট করেছে। সরকার বদলের পর আগের সরকারের আমলে গৃহীত প্রকল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা না করাও নদী মরে যাওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী। পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের (১৯৯৬-২০০১) সময় একটি প্রকল্পের আওতায় গড়াই নদীর ১৯ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজিং করা হয়েছিল। মোট ৩০ কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিং করা এবং পরবর্তী তিন বছর এর রক্ষণাবেক্ষণ কাজটিও এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিল। কিন্তু সরকার বদলের পর ২২৫ কোটি টাকার এই প্রকল্পের বাকি কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে ড্রেজিং করা অংশও ভরাট হয়ে গেছে। বর্তমান সরকার নদীখননের একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছে। আরো কিছু ড্রেজার সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। ১৫টি ড্রেজার ভাড়ায় আনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবছর যে পরিমাণ পলি জমে, তা খনন করার জন্য আরো ড্রেজার সংগ্রহ করতে হবে। তা না হলে প্রতিবছরই নদীখননের চেয়ে পলি জমে নদী ভরাটের প্রক্রিয়াই বেশি হবে। নদীগুলোর জীবন ফিরে আসবে না। সে ক্ষেত্রে শুধু খনন নয়, নদীতে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। শিরা-উপশিরার মতো ছড়িয়ে রয়েছে নদী, শাখা নদী, খাল-বিল। এ সবের পানিপ্রবাহের সঙ্গে সম্পর্কিত এই দেশের ভূমির ধরন, কৃষিকাজ তথা মানুষের জীবন। কাজেই নদীরক্ষা করা না গেলে এ দেশের মানুষকেও রক্ষা করা যাবে না। বন্যা, খরা, এমনকি মরুময়তা আকারে যে পরিণতি প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে, তার প্রতিকার করতেই হবে। তাই একে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মনে করে সরকারি ও বিরোধী দলের সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। অন্তত অস্তিত্বের স্বার্থে ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ ত্যাগ করতেই হবে। এ ছাড়া সরকার বদল হলে ভবিষ্যতে যাতে জনকল্যাণমুখী কোনো উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।
বাংলাদেশের নদী মরে যাওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে উজানে নদীগুলোর পানিপ্রবাহকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করা, পানির যথেষ্ট প্রবাহ না থাকায় এবং ভূমিক্ষয় বেড়ে যাওয়ায় নদীগুলোতে ক্রমবর্ধমান হারে পলি জমা হওয়া, নিয়মিত নদীখননের ব্যবস্থা না থাকা, অপরিকল্পিত নদীশাসন ও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ইত্যাদি। এ ছাড়া অতীতের সরকারগুলোর অবহেলা ও অপরাজনীতিও এই সমস্যাকে প্রকট করেছে। সরকার বদলের পর আগের সরকারের আমলে গৃহীত প্রকল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা না করাও নদী মরে যাওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী। পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের (১৯৯৬-২০০১) সময় একটি প্রকল্পের আওতায় গড়াই নদীর ১৯ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজিং করা হয়েছিল। মোট ৩০ কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিং করা এবং পরবর্তী তিন বছর এর রক্ষণাবেক্ষণ কাজটিও এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিল। কিন্তু সরকার বদলের পর ২২৫ কোটি টাকার এই প্রকল্পের বাকি কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে ড্রেজিং করা অংশও ভরাট হয়ে গেছে। বর্তমান সরকার নদীখননের একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছে। আরো কিছু ড্রেজার সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। ১৫টি ড্রেজার ভাড়ায় আনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবছর যে পরিমাণ পলি জমে, তা খনন করার জন্য আরো ড্রেজার সংগ্রহ করতে হবে। তা না হলে প্রতিবছরই নদীখননের চেয়ে পলি জমে নদী ভরাটের প্রক্রিয়াই বেশি হবে। নদীগুলোর জীবন ফিরে আসবে না। সে ক্ষেত্রে শুধু খনন নয়, নদীতে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। শিরা-উপশিরার মতো ছড়িয়ে রয়েছে নদী, শাখা নদী, খাল-বিল। এ সবের পানিপ্রবাহের সঙ্গে সম্পর্কিত এই দেশের ভূমির ধরন, কৃষিকাজ তথা মানুষের জীবন। কাজেই নদীরক্ষা করা না গেলে এ দেশের মানুষকেও রক্ষা করা যাবে না। বন্যা, খরা, এমনকি মরুময়তা আকারে যে পরিণতি প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে, তার প্রতিকার করতেই হবে। তাই একে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মনে করে সরকারি ও বিরোধী দলের সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। অন্তত অস্তিত্বের স্বার্থে ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ ত্যাগ করতেই হবে। এ ছাড়া সরকার বদল হলে ভবিষ্যতে যাতে জনকল্যাণমুখী কোনো উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।
No comments