পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ আমাদের সরল পথ দেখিয়েছেন, এ অবস্থায় আমরা কেন বিভ্রান্তির পেছনে ছুটব
৭১. ক্বুল আনাদ্ঊ' মিন দূনিল্লা-হি মা লা ইয়ানফাউ'না ওয়া লা ইয়াদ্বুর্রুনা ওয়া নুরাদ্দু আ'লা আ'ক্বা-বিনা বা'দা ইয্ হাদা-নাল্লা-হু কাল্লাযীছ্তাহ্ওয়াত্হুশ্ শায়া-ত্বীনু ফিল আরদ্বি হাইরা-না; লাহূ আসহা-বুন ইয়াদ্ঊ'নাহূ ইলাল হুদা'তিনা-; ক্বুল ইন্না হুদাল্লা-হি হুয়াল হুদা; ওয়া উমিরনা লিনুছলিমা লিরাবি্বল আ'-লামীন।
৭২. ওয়া আন আক্বীমুস্সালা-তা ওয়াত্তাক্বূহ্; ওয়া হুওয়াল্লাযী ইলাইহি তুহ্শারূন। ৭৩. ওয়া হুওয়াল্লাযী খালাক্বাচ্ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বা বিলহাক্কি; ওয়া ইয়াওমা ইয়াক্বূলু কুন ফাইয়াকূন, ক্বাওলুহুল হাক্ক; ওয়া লাহুল মুলকু ইয়াওমা ইউনফাখু ফিস্ সূরি; আ'-লিমুল গাইবি ওয়াশ্ শাহা-দাতি ওয়া হুওয়াল হাকীমুল খাবীর।
[সুরা : আল আনয়াম, আয়াত : ৭১-৭৩]
অনুবাদ
৭১. আপনি তাদের বলুন, আমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কাউকে ডাকব, যে না আমাদের কোনো উপকার করতে পারে, না কোনো ক্ষতি করতে পারে। (আপনি বলুন) আমরা কি উল্টোপথে ফিরে যাব, যেখানে আল্লাহ আমাদের সঠিক পথ দেখিয়েছেন? আমরা কি সেই ব্যক্তিটির মতো হব, যাকে শয়তানরা পথহারা করে দেয় এবং সে দিশাহারা হয়ে প্রান্তরে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায়। অথচ তার কিছু সঙ্গীও ছিল, যারা তাকে সঠিক পথের দিকে আহ্বান করে বলেছে, আমাদের দিকে এসো। (হে নবী!) আপনি বলে দিন, নিশ্চয়ই প্রকৃত সরল পথ একমাত্র আল্লাহর ওপর। আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আমরা যেন জগতের পালনকর্তার পূর্ণ আনুগত্য করি।
৭২. আমরা যেন সালাত কায়েম করি এবং শুধু আল্লাহর প্রতিই দায়িত্বনিষ্ঠ থাকি। তিনি হচ্ছেন এমন সত্তা, যার সামনে তোমাদের সবাইকে সমবেত করা হবে।
৭৩. তিনিই যথাযথভাবে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যেদিন তিনি বলেন, হয়ে যাও, তখন হয়ে যায়। তাঁর কথাই চূড়ান্ত সত্য। যেদিন শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখন সমগ্র কর্তৃত্ব হবে একমাত্র তাঁর (অর্থাৎ মানুষের স্বাধীনতার জগৎ বিলীন হয়ে যাবে)। তিনি দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সব কিছু সম্পর্কেই সম্যক অবগত আছেন। তিনি প্রজ্ঞাময় এবং তিনি সম্যক অবগত।
ব্যাখ্যা
৭১ নম্বর আয়াতে কিছু যুক্তি ও উদাহরণ দিয়ে শিরককে নাকচ করা হয়েছে এবং আল্লাহর একত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মুশরিকরা আল্লাহর সঙ্গে যাদের শরিক বানায়, তাদের অনেকেরই একেবারে কোনো শক্তি নেই বা সক্ষমতা নেই; যেমন মূর্তি বা মৃত ব্যক্তি। আবার কোনো কোনোটির কিছু ক্ষমতা আছে, যেমন জীবিত মানুষ_গোত্রপতি, নৃপতি বা সাধক-তাপস। তবে সেই ক্ষমতা তাঁর নিজস্ব নয়, সেটা আল্লাহতায়ালা প্রদত্ত। আমরা অতিসাধারণ বুদ্ধিতেই বুঝতে পারি, মাবুদ হওয়ার জন্য অবশ্যই ক্ষমতা থাকা উচিত, যে উপাসকের উপকার বা অপকার করতে পারে। মুশরিকরা যাদের ওপর এই ক্ষমতা আরোপ করে বা বিশ্বাস করে, তাদের হয়তো আদৌ কোনো ক্ষমতা নেই বা চূড়ান্ত ক্ষমতা নেই।
এই আয়াতেই পথভ্রষ্টদের কিছু উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। এসব ব্যক্তির একটা উদাহরণ এ রকম যে শয়তান তাদের প্রবৃত্তির দ্বারা প্ররোচিত করে পথহারা করে দেয় এবং তারা দিশাহারা হয়ে পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায়। এদের আরেকটা উদাহরণ এ রকম যে তার কিছু সুপথপ্রাপ্ত বন্ধু আছে, তারা তাকে সুপথের দিকে আহ্বান জানিয়ে বলে, আমাদের সঙ্গে এসো। কিন্তু সে সেদিকে যায় না, যায় পথভ্রষ্টতার দিকে।
৭২ নম্বর আয়াতে নামাজ কায়েম করার কথা এবং আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতার অর্থ হলো, আল্লাহর হুকুম-আহকাম সঠিকভাবে মেনে চলা। সব কিছুর জন্য যে শেষবিচারের দিন আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে এমন দায়িত্ববোধের দ্বারা পরিচালিত হওয়া। ৭৩ নম্বর আয়াতে এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টির মধ্যে যে আল্লাহর অস্তিত্ব ও একত্ববাদের প্রমাণ পাওয়া যায়, তা-ই বর্ণনা করা হয়েছে। একমাত্র তাঁর ইচ্ছার মাধ্যমে এই জগৎ সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁর ইচ্ছার মাধ্যমে তা বিলীনও হয়ে যাবে। যখন শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে এবং বিদ্যমান জগৎ বিলীন হয়ে যাবে, তখন একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোনো ইচ্ছা বা কর্মশক্তি থাকবে না। বিদ্যমান জগতে মানুষের যে স্বাধীনতা আছে, তা তখন পুরোপুরি তিরোহিত হয়ে যাবে। তখন জগতের সর্বময় কর্তৃত্ব কেবল আল্লাহর হাতেই থাকবে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আল আনয়াম, আয়াত : ৭১-৭৩]
অনুবাদ
৭১. আপনি তাদের বলুন, আমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কাউকে ডাকব, যে না আমাদের কোনো উপকার করতে পারে, না কোনো ক্ষতি করতে পারে। (আপনি বলুন) আমরা কি উল্টোপথে ফিরে যাব, যেখানে আল্লাহ আমাদের সঠিক পথ দেখিয়েছেন? আমরা কি সেই ব্যক্তিটির মতো হব, যাকে শয়তানরা পথহারা করে দেয় এবং সে দিশাহারা হয়ে প্রান্তরে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায়। অথচ তার কিছু সঙ্গীও ছিল, যারা তাকে সঠিক পথের দিকে আহ্বান করে বলেছে, আমাদের দিকে এসো। (হে নবী!) আপনি বলে দিন, নিশ্চয়ই প্রকৃত সরল পথ একমাত্র আল্লাহর ওপর। আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আমরা যেন জগতের পালনকর্তার পূর্ণ আনুগত্য করি।
৭২. আমরা যেন সালাত কায়েম করি এবং শুধু আল্লাহর প্রতিই দায়িত্বনিষ্ঠ থাকি। তিনি হচ্ছেন এমন সত্তা, যার সামনে তোমাদের সবাইকে সমবেত করা হবে।
৭৩. তিনিই যথাযথভাবে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যেদিন তিনি বলেন, হয়ে যাও, তখন হয়ে যায়। তাঁর কথাই চূড়ান্ত সত্য। যেদিন শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখন সমগ্র কর্তৃত্ব হবে একমাত্র তাঁর (অর্থাৎ মানুষের স্বাধীনতার জগৎ বিলীন হয়ে যাবে)। তিনি দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সব কিছু সম্পর্কেই সম্যক অবগত আছেন। তিনি প্রজ্ঞাময় এবং তিনি সম্যক অবগত।
ব্যাখ্যা
৭১ নম্বর আয়াতে কিছু যুক্তি ও উদাহরণ দিয়ে শিরককে নাকচ করা হয়েছে এবং আল্লাহর একত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মুশরিকরা আল্লাহর সঙ্গে যাদের শরিক বানায়, তাদের অনেকেরই একেবারে কোনো শক্তি নেই বা সক্ষমতা নেই; যেমন মূর্তি বা মৃত ব্যক্তি। আবার কোনো কোনোটির কিছু ক্ষমতা আছে, যেমন জীবিত মানুষ_গোত্রপতি, নৃপতি বা সাধক-তাপস। তবে সেই ক্ষমতা তাঁর নিজস্ব নয়, সেটা আল্লাহতায়ালা প্রদত্ত। আমরা অতিসাধারণ বুদ্ধিতেই বুঝতে পারি, মাবুদ হওয়ার জন্য অবশ্যই ক্ষমতা থাকা উচিত, যে উপাসকের উপকার বা অপকার করতে পারে। মুশরিকরা যাদের ওপর এই ক্ষমতা আরোপ করে বা বিশ্বাস করে, তাদের হয়তো আদৌ কোনো ক্ষমতা নেই বা চূড়ান্ত ক্ষমতা নেই।
এই আয়াতেই পথভ্রষ্টদের কিছু উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। এসব ব্যক্তির একটা উদাহরণ এ রকম যে শয়তান তাদের প্রবৃত্তির দ্বারা প্ররোচিত করে পথহারা করে দেয় এবং তারা দিশাহারা হয়ে পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায়। এদের আরেকটা উদাহরণ এ রকম যে তার কিছু সুপথপ্রাপ্ত বন্ধু আছে, তারা তাকে সুপথের দিকে আহ্বান জানিয়ে বলে, আমাদের সঙ্গে এসো। কিন্তু সে সেদিকে যায় না, যায় পথভ্রষ্টতার দিকে।
৭২ নম্বর আয়াতে নামাজ কায়েম করার কথা এবং আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতার অর্থ হলো, আল্লাহর হুকুম-আহকাম সঠিকভাবে মেনে চলা। সব কিছুর জন্য যে শেষবিচারের দিন আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে এমন দায়িত্ববোধের দ্বারা পরিচালিত হওয়া। ৭৩ নম্বর আয়াতে এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টির মধ্যে যে আল্লাহর অস্তিত্ব ও একত্ববাদের প্রমাণ পাওয়া যায়, তা-ই বর্ণনা করা হয়েছে। একমাত্র তাঁর ইচ্ছার মাধ্যমে এই জগৎ সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁর ইচ্ছার মাধ্যমে তা বিলীনও হয়ে যাবে। যখন শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে এবং বিদ্যমান জগৎ বিলীন হয়ে যাবে, তখন একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোনো ইচ্ছা বা কর্মশক্তি থাকবে না। বিদ্যমান জগতে মানুষের যে স্বাধীনতা আছে, তা তখন পুরোপুরি তিরোহিত হয়ে যাবে। তখন জগতের সর্বময় কর্তৃত্ব কেবল আল্লাহর হাতেই থাকবে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments