মনোনয়ন-প্রক্রিয়ায় নজর দেওয়ার এখনই সময়-সংসদে সময়ের অপচয়
জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের অনুপস্থিতি এখন আর একমাত্র বড় সমস্যা হিসেবে গণ্য হচ্ছে না। সংসদকে অকার্যকর করতে সরকারদলীয় সাংসদেরাও পিছিয়ে নেই। পরিস্থিতির এতটাই অবনতি ঘটেছে যে সংসদের চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ প্রথম আলোকে বলেছেন, কোরাম-সংকট রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এর আগে সংসদে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ব্যাপক অনুপস্থিতির কারণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছিল স্পিকারের আসন থেকে।
একসময় কোরাম-সংকট কালেভদ্রে দেখা যেত। বিশ্বের কোনো কার্যকর সংসদ মেনে নেবে না যে এমন সংকট কখনো রেওয়াজে পরিণত হতে পারে।
বর্তমান সংসদে এখন পর্যন্ত কোরাম-সংকটের কারণে অপচয়ের পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা চরম হতাশাজনক। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে জাতীয় সংসদ সব রাজনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া থেকে অনেক দূরে আছে। এমনকি সরকারি কার্যক্রমের যে রুটিন দিকগুলো রয়েছে, সেগুলোতেও সরকারদলীয় সদস্যরা আকর্ষণ বোধ করছেন না। এটা দুঃখজনক।
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্র অকার্যকর থাকার সঙ্গে এই কোরাম-সংকটের একটি যোগসূত্র রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্তরের কমিটিগুলো যথাযথভাবে গঠিত হয় না, সক্রিয়ও থাকে না। বহু স্থানে পকেট কমিটি হয়ে উঠেছে দলটির অমোঘ নিয়তি। সে কারণে সাধারণ নির্বাচন এলে এই কমিটির ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে মনোনয়নের বিষয়টি সচল করা সম্ভব হয় না। রাজধানী ঢাকায় হাইকমান্ডের সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের যে সভা বসে তাতে আসলে তদবির, ধরাধরি, স্বজনপ্রীতি এবং কে কত বেশি টাকা খরচ করতে সক্ষম; সেটাই হয়ে ওঠে মনোনয়নপত্র লাভের ক্ষেত্রে বড় বিবেচনা। এর ফলে নির্বাচিত সাংসদেরা নামে নির্বাচিত হলেও সমাজ কিংবা দলের প্রতি তাঁদের সত্যিকারের কোনো অঙ্গীকার থাকে না। এই রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান হওয়া প্রয়োজন।
এর আগেও আমরা জেনেছি, সাংসদেরা সংসদ অধিবেশন থাকাকালে সচিবালয়কেন্দ্রিক নানা ধরনের তদবির এবং নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে ব্যস্ত থাকেন। সে কারণেই তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থের সংঘাতসংশ্লিষ্ট বিবৃতি এবং সম্পদের দায়দেনার হিসাব নিয়মিতভাবে প্রকাশ করার বিষয়টি উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অপরিহার্য শর্ত হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। বর্তমান বিরোধী দল এক দিনের একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে উথালপাথাল আন্দোলন করলেও সেই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না। কিন্তু এখানে জনগণের জন্য একটা শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।
দলের হাইকমান্ড যাঁকে ইচ্ছা তাঁকে মনোনয়ন দেবে, আর তার অনিবার্য বিষময় ফল হিসেবে সরকারি দল কোরাম-সংকট সৃষ্টি করে মানুষকে ধোঁকা দেবে এবং বিরোধী দলের সাংসদেরা সংসদ বয়কট করবে—এ ধারা চলতে পারে না। এই অপরাজনীতি বন্ধ করতে হলে সংসদে কোরাম-সংকট সৃষ্টি করার জন্য দায়ী সাংসদদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শৃঙ্খলামূলক বিধিবিধান চালু করতে হবে। একই সঙ্গে সদস্যপদ রক্ষায় যে ৯০ দিনের বাধ্যবাধকতা আছে, তাও কমিয়ে আনা প্রয়োজন।
বর্তমান সংসদে এখন পর্যন্ত কোরাম-সংকটের কারণে অপচয়ের পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা চরম হতাশাজনক। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে জাতীয় সংসদ সব রাজনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া থেকে অনেক দূরে আছে। এমনকি সরকারি কার্যক্রমের যে রুটিন দিকগুলো রয়েছে, সেগুলোতেও সরকারদলীয় সদস্যরা আকর্ষণ বোধ করছেন না। এটা দুঃখজনক।
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্র অকার্যকর থাকার সঙ্গে এই কোরাম-সংকটের একটি যোগসূত্র রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্তরের কমিটিগুলো যথাযথভাবে গঠিত হয় না, সক্রিয়ও থাকে না। বহু স্থানে পকেট কমিটি হয়ে উঠেছে দলটির অমোঘ নিয়তি। সে কারণে সাধারণ নির্বাচন এলে এই কমিটির ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে মনোনয়নের বিষয়টি সচল করা সম্ভব হয় না। রাজধানী ঢাকায় হাইকমান্ডের সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের যে সভা বসে তাতে আসলে তদবির, ধরাধরি, স্বজনপ্রীতি এবং কে কত বেশি টাকা খরচ করতে সক্ষম; সেটাই হয়ে ওঠে মনোনয়নপত্র লাভের ক্ষেত্রে বড় বিবেচনা। এর ফলে নির্বাচিত সাংসদেরা নামে নির্বাচিত হলেও সমাজ কিংবা দলের প্রতি তাঁদের সত্যিকারের কোনো অঙ্গীকার থাকে না। এই রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান হওয়া প্রয়োজন।
এর আগেও আমরা জেনেছি, সাংসদেরা সংসদ অধিবেশন থাকাকালে সচিবালয়কেন্দ্রিক নানা ধরনের তদবির এবং নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে ব্যস্ত থাকেন। সে কারণেই তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থের সংঘাতসংশ্লিষ্ট বিবৃতি এবং সম্পদের দায়দেনার হিসাব নিয়মিতভাবে প্রকাশ করার বিষয়টি উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অপরিহার্য শর্ত হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। বর্তমান বিরোধী দল এক দিনের একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে উথালপাথাল আন্দোলন করলেও সেই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না। কিন্তু এখানে জনগণের জন্য একটা শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।
দলের হাইকমান্ড যাঁকে ইচ্ছা তাঁকে মনোনয়ন দেবে, আর তার অনিবার্য বিষময় ফল হিসেবে সরকারি দল কোরাম-সংকট সৃষ্টি করে মানুষকে ধোঁকা দেবে এবং বিরোধী দলের সাংসদেরা সংসদ বয়কট করবে—এ ধারা চলতে পারে না। এই অপরাজনীতি বন্ধ করতে হলে সংসদে কোরাম-সংকট সৃষ্টি করার জন্য দায়ী সাংসদদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শৃঙ্খলামূলক বিধিবিধান চালু করতে হবে। একই সঙ্গে সদস্যপদ রক্ষায় যে ৯০ দিনের বাধ্যবাধকতা আছে, তাও কমিয়ে আনা প্রয়োজন।
No comments