সদরে অন্দরে-জাতীয় স্বার্থেই যেন চলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় by মোস্তফা হোসেইন
দেশের ১২ লাখ শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে যেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থতা, সেখানকার দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার কারণে গোটা দেশের শিক্ষার্থীদের জীবনে নেমে এসেছে চরম অনিশ্চয়তা। এই অনিশ্চয়তার গোড়ায় আছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন। কিছু রাজনৈতিক ক্যাডার এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের অভিলাষ চরিতার্থ করার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে একসময়।
নানা অভিযোগ আর দুর্নীতির খতিয়ান বারবার জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার পরও রাজনৈতিক কারণেই বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি সেসবের বিরুদ্ধে। গত সরকারের আমলে যে দুর্বৃত্তপনা করা হয়েছে, তার খেসারত এখনো দিচ্ছে মানুষ। লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের দুর্ভোগ, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ; তার পরও কি দুর্বৃত্তদের দাপট কমেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে? যারা এই দুর্যোগ সৃষ্টি করেছে, তারা যেহেতু এখন দৃশ্যপট থেকে অনেক দূরে চলে গেছে, তাই দুর্ভোগ সৃষ্টি কমে গেছে কিংবা কমে যাবে_এমন ভাবনার কি সুযোগ আছে এখনো? কিংবা সেই দুর্বৃত্তদের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে না কেউ_এমনও বলার কি উপায় আছে? বাস্তবতার নিরিখে মনে করার কারণ আছে, দুর্বৃত্তায়ন তার খোলসই পাল্টেছে যেন। দূর হয়নি দুর্বৃত্তপনা। নিকট-অতীতের কথা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ফলে তখন এর সুফল পেয়ে আসছিল সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর লোকজন। সেই প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগের শেষ পরিণতিও নির্ধারিত হয়েছে আদালতের মাধ্যমে। এর মধ্যে আবার ৮০৭ জনের চাকরি চলে গেছে। চাকরিচ্যুতদের এখন আবেদন-নিবেদনের পালা চলছে। সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। বলছেন, এই ৮০৭ জনের এখন আর চাকরি পাওয়ার বয়স নেই। তাঁদের পরিবার-পরিজনের দিকে তাকিয়ে যেন পুনর্বহালের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। তাঁদের এ দাবি মানবিক নিঃসন্দেহে। তাঁদের চাকরিচ্যুতি আইনানুগ এবং আবশ্যক হওয়ার পরও আলোচনার সুযোগ থেকে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কতজন আছেন সরাসরি নিয়োগ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত? তাঁরা কি সবাই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িত? সেখানে কিছু নির্দোষ মানুষও বলি হয়েছেন। বোধ করি তাঁদের সংখ্যা বেশি নয়। তার পরও তাঁদের প্রতি সহানুভূতি জানানো যায়। সমাধানটা কি পুনর্বহালের মাধ্যমে শেষ হতে পারে?
আজকে আদালতের রায় কার্যকর করার পরও প্রশ্ন আসতে পারে এ প্রতিষ্ঠানটির কাজ নিয়ে। এত লোক থাকার পরও ১২ লাখ শিক্ষার্থীর জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে কেন? কোন কারণে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় পরীক্ষা দেওয়ার জন্য? আড়াই-তিন বছর পর্যন্ত একেকজন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে এই অনিয়মকারী ব্যক্তিরা। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি হয়েছিল এই সেশনজট থেকে দেশের শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়ার জন্য। আজকে একটি গ্রুপের বক্তব্য হচ্ছে, ৮০৭ জন কর্মীর বিদায়ের পরও সেখানে কর্মী সংকট হবে না। এই গ্রুপটি আশঙ্কা করছে, আগের সরকারের আমলে যেমন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল, সেখানে আরেকটি চক্র গজিয়েছে কি না, যারা আরেকবার নিয়োগ-বাণিজ্য করতে চাইছে! সেখানেও রাজনৈতিক একটি গোষ্ঠী দা-ছুরি শান দিতে শুরু করেছে কি না ইতিমধ্যে!
এই নিয়োগ নিয়ে আদালতের নির্দেশে যে ফয়সালা হলো, তার রেশ এত তাড়াতাড়ি শেষ হবে_এমন ভাবনার কোনো কারণ নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির অদক্ষতা ও অবহেলার কী হবে?
আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর যথেষ্ট সুনাম আছে। তাঁর মন্ত্রণালয় সুষ্ঠুভাবে চলছে_এমন বলা হয়ে থাকে। বিশেষ করে জাতিকে যুগের উপযোগী একটি শিক্ষানীতি উপহার দিতে পেরেছেন, সে জন্যও তিনি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানটির ক্ষেত্রে তিনি কতটা পদক্ষেপ নিতে পেরেছেন? তিনি নিজেও এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়। আমরা মনে করি, এই অসন্তোষের পাশাপাশি তিনি যদি প্রতিষ্ঠানটির মরিচাগুলো দূর করার পদক্ষেপ নেন, তাহলে দেশের ১২ লাখ সন্তানের মা-বাবা ও নিকটজন শান্তি পেতে পারে। দেশ অন্তত অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। তিনি নজর দিতে পারেন ২৫টি প্রধান পদের দিকে। একটি প্রতিষ্ঠানের ২৫টি প্রধান পদের ১২টিই চলছে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দিয়ে। এই ১২ জনই যে যোগ্য নন, সে তথ্যও নিশ্চিত জানা আছে মাননীয় মন্ত্রীর। তিনি নিশ্চয়ই জানেন, এই ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন আছেন, যাঁরা জুনিয়র শিক্ষক-কর্মকর্তা। এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য পড়ে আছে। একদিকে শূন্যপদ, অন্যদিকে কম যোগ্য কিংবা অযোগ্য লোকদের দিয়ে প্রশাসন চালানো_এ অবস্থা যখন নিত্যসঙ্গী হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের, তখন সেখানে সেশনজট লাগাটাই তো স্বাভাবিক। ৮০৭ জন কর্মী বিদায় হওয়ার কারণে এই মুহূর্তে গণমাধ্যমে তাঁদের বিষয়টি নিয়েই হৈচৈ হচ্ছে। কিন্তু এর বাইরে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় এবং কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়োগলাভকারী বিএনপি-জামায়াতের কর্মী নিয়োগের বিষয়টির খবর কী? তাঁদের পরিচয় কী? তাঁদের নিয়োগপ্রক্রিয়া সঠিক ছিল কি না তলিয়ে দেখা প্রয়োজন। এক হাজার ৫০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীবাহিনী, সেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষারত ১২ লাখ শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকেই এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন। সেই উদ্বেগ যে গণ-উদ্বেগে রূপান্তরিত হতে পারে, তা বিবেচনা করা দরকার সরকারের।
১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠার পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনগুলো গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ করতে হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠ্যসূচির আধুনিকায়ন ও উন্নতিসাধন, শিক্ষার মানগত উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা বৃদ্ধিসহ কলেজের যাবতীয় বিষয় ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ন্যস্ত করার উদ্দেশ্যেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ উদ্দেশ্যটির কত ভাগ অর্জিত হয়েছে এত বছরে, সেটা দেখার সময় এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির অর্জনের দিকে নজর দিলে বলতে হবে, নিশ্চয়ই এটি ব্যর্থতার ভারে ন্যুব্জ।
মনে রাখা প্রয়োজন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লেখাপড়া চালাতে হয়। কলেজগুলোতে সাধারণত পড়ে বেশির ভাগই নিম্ন কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সেই পরিবারগুলো যদি সন্তানের লেখাপড়া শেষ করার জন্য দিনের পর দিন খরচ বহন করতে বাধ্য হয়, তার দায় কে নেবে? শুধু তা-ই নয়, শিক্ষার্থীদের চাকরির বয়সও চলে যায় সময়মতো পরীক্ষা দিতে না পারার কারণে। এই সময়ক্ষেপণের জন্য জাতীয় ক্ষতি হচ্ছে শ্রমশক্তির। বিষয়গুলোকে তাই কোনোভাবেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই।
একটি প্রতিষ্ঠানে যখন বড়মাপের অনিয়ম হয়, সেই অনিয়মের কারণে সেখানকার যোগ্য ও নিয়মনিষ্ঠ ব্যক্তিদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। সেখানকার কর্মপরিবেশ দূষিত হওয়াটা একান্তই স্বাভাবিক বলে গণ্য হয়। কর্মপরিবেশ যদি অনুকূল না থাকে, তাহলে যত যোগ্য কর্মীই সেখানে নিয়োজিত হোন না কেন, তার পক্ষে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। যোগ্য কর্মীর কাজপ্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হয় প্রতিষ্ঠান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আজকে সেই অবস্থায় গিয়ে পেঁৗছেছে। সেখানকার কর্মপরিবেশ যত দ্রুত নিশ্চিত করা যায়, ততই মঙ্গল।
mhussain_71@yahoo.com
আজকে আদালতের রায় কার্যকর করার পরও প্রশ্ন আসতে পারে এ প্রতিষ্ঠানটির কাজ নিয়ে। এত লোক থাকার পরও ১২ লাখ শিক্ষার্থীর জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে কেন? কোন কারণে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় পরীক্ষা দেওয়ার জন্য? আড়াই-তিন বছর পর্যন্ত একেকজন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে এই অনিয়মকারী ব্যক্তিরা। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি হয়েছিল এই সেশনজট থেকে দেশের শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়ার জন্য। আজকে একটি গ্রুপের বক্তব্য হচ্ছে, ৮০৭ জন কর্মীর বিদায়ের পরও সেখানে কর্মী সংকট হবে না। এই গ্রুপটি আশঙ্কা করছে, আগের সরকারের আমলে যেমন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল, সেখানে আরেকটি চক্র গজিয়েছে কি না, যারা আরেকবার নিয়োগ-বাণিজ্য করতে চাইছে! সেখানেও রাজনৈতিক একটি গোষ্ঠী দা-ছুরি শান দিতে শুরু করেছে কি না ইতিমধ্যে!
এই নিয়োগ নিয়ে আদালতের নির্দেশে যে ফয়সালা হলো, তার রেশ এত তাড়াতাড়ি শেষ হবে_এমন ভাবনার কোনো কারণ নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির অদক্ষতা ও অবহেলার কী হবে?
আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর যথেষ্ট সুনাম আছে। তাঁর মন্ত্রণালয় সুষ্ঠুভাবে চলছে_এমন বলা হয়ে থাকে। বিশেষ করে জাতিকে যুগের উপযোগী একটি শিক্ষানীতি উপহার দিতে পেরেছেন, সে জন্যও তিনি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানটির ক্ষেত্রে তিনি কতটা পদক্ষেপ নিতে পেরেছেন? তিনি নিজেও এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়। আমরা মনে করি, এই অসন্তোষের পাশাপাশি তিনি যদি প্রতিষ্ঠানটির মরিচাগুলো দূর করার পদক্ষেপ নেন, তাহলে দেশের ১২ লাখ সন্তানের মা-বাবা ও নিকটজন শান্তি পেতে পারে। দেশ অন্তত অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। তিনি নজর দিতে পারেন ২৫টি প্রধান পদের দিকে। একটি প্রতিষ্ঠানের ২৫টি প্রধান পদের ১২টিই চলছে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দিয়ে। এই ১২ জনই যে যোগ্য নন, সে তথ্যও নিশ্চিত জানা আছে মাননীয় মন্ত্রীর। তিনি নিশ্চয়ই জানেন, এই ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন আছেন, যাঁরা জুনিয়র শিক্ষক-কর্মকর্তা। এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য পড়ে আছে। একদিকে শূন্যপদ, অন্যদিকে কম যোগ্য কিংবা অযোগ্য লোকদের দিয়ে প্রশাসন চালানো_এ অবস্থা যখন নিত্যসঙ্গী হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের, তখন সেখানে সেশনজট লাগাটাই তো স্বাভাবিক। ৮০৭ জন কর্মী বিদায় হওয়ার কারণে এই মুহূর্তে গণমাধ্যমে তাঁদের বিষয়টি নিয়েই হৈচৈ হচ্ছে। কিন্তু এর বাইরে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় এবং কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়োগলাভকারী বিএনপি-জামায়াতের কর্মী নিয়োগের বিষয়টির খবর কী? তাঁদের পরিচয় কী? তাঁদের নিয়োগপ্রক্রিয়া সঠিক ছিল কি না তলিয়ে দেখা প্রয়োজন। এক হাজার ৫০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীবাহিনী, সেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষারত ১২ লাখ শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকেই এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন। সেই উদ্বেগ যে গণ-উদ্বেগে রূপান্তরিত হতে পারে, তা বিবেচনা করা দরকার সরকারের।
১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠার পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনগুলো গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ করতে হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠ্যসূচির আধুনিকায়ন ও উন্নতিসাধন, শিক্ষার মানগত উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা বৃদ্ধিসহ কলেজের যাবতীয় বিষয় ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ন্যস্ত করার উদ্দেশ্যেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ উদ্দেশ্যটির কত ভাগ অর্জিত হয়েছে এত বছরে, সেটা দেখার সময় এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির অর্জনের দিকে নজর দিলে বলতে হবে, নিশ্চয়ই এটি ব্যর্থতার ভারে ন্যুব্জ।
মনে রাখা প্রয়োজন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লেখাপড়া চালাতে হয়। কলেজগুলোতে সাধারণত পড়ে বেশির ভাগই নিম্ন কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সেই পরিবারগুলো যদি সন্তানের লেখাপড়া শেষ করার জন্য দিনের পর দিন খরচ বহন করতে বাধ্য হয়, তার দায় কে নেবে? শুধু তা-ই নয়, শিক্ষার্থীদের চাকরির বয়সও চলে যায় সময়মতো পরীক্ষা দিতে না পারার কারণে। এই সময়ক্ষেপণের জন্য জাতীয় ক্ষতি হচ্ছে শ্রমশক্তির। বিষয়গুলোকে তাই কোনোভাবেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই।
একটি প্রতিষ্ঠানে যখন বড়মাপের অনিয়ম হয়, সেই অনিয়মের কারণে সেখানকার যোগ্য ও নিয়মনিষ্ঠ ব্যক্তিদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। সেখানকার কর্মপরিবেশ দূষিত হওয়াটা একান্তই স্বাভাবিক বলে গণ্য হয়। কর্মপরিবেশ যদি অনুকূল না থাকে, তাহলে যত যোগ্য কর্মীই সেখানে নিয়োজিত হোন না কেন, তার পক্ষে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। যোগ্য কর্মীর কাজপ্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হয় প্রতিষ্ঠান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আজকে সেই অবস্থায় গিয়ে পেঁৗছেছে। সেখানকার কর্মপরিবেশ যত দ্রুত নিশ্চিত করা যায়, ততই মঙ্গল।
mhussain_71@yahoo.com
No comments