মুন্সিগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা-সব খাল থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত

মুন্সিগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় গতকাল বুধবার মিরকাদিমে চার খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। সভায় খাল নিয়ে প্রথম আলোর ভূমিকা প্রশংসিত হয় এবং জেলার ছয় উপজেলায় সব খাল থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ছাড়া শিগগিরই মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার গণকপাড়া খাল ও মুন্সিরহাটের খাল থেকে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়।


খুন, চুরি ও মাদকদ্রব্য ইয়াবার ব্যবসা বাড়ায় শঙ্কা প্রকাশ করেন আলোচকেরা। সিরাজদিখানে ইটভাটা নিয়ে মানববন্ধনকারীদের ওপর ইটভাটার মালিকপক্ষের হামলার বিষয়েও আলোচনা হয়।
সভায় মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মিরকাদিমের খালগুলো থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের ঘটনা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই উচ্ছেদের কারণে এলাকার কিছু দখলদার ছাড়া সবাই আনন্দিত।’
মেয়র আরও বলেন, তাঁর পৌরসভার নৈদীঘিরপাথর এলাকায় ইয়াবা বড়ির ব্যবসা চলছে। এ ব্যবসা দমন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মেহেরুন নেসা বলেন, দিনদুপুরে তাঁর বাড়ির দরজার তালা কেটে দুই লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে। একই এলাকায় এর আগে আইনজীবী আবদুল মতিনের বাড়িসহ আরও কয়েকটি বাড়িতেও চুরির ঘটনা ঘটে। এতে মনে হচ্ছে, একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল ওই এলাকায় সক্রিয় রয়েছে।
মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর নাসির উদ্দিন বলেন, মিরকাদিমে চার খাল দখলমুক্ত হওয়ার ঘটনা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। মিরকাদিম খালের মুখগুলোও দখলমুক্ত করা উচিত। মুন্সিগঞ্জে আরও অনেক খাল প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। সম্প্রতি টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পুরাবাজার স্বর্ণের দোকানে চুরি, শহরের ফায়ার সার্ভিস এলাকা থেকে পল্লী বিদ্যুতের তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি, সিরাজদিখানের একটি কালীমন্দিরের মূর্তি চুরি, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি স্থানে চুরির ঘটনা ঘটে। খুনের ঘটনাও বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে পুলিশকে আরও সতর্ক হতে হবে।
জেলা প্রশাসক মো. আজিজুল আলম বলেন, মিরকাদিমে খাল উচ্ছেদের পরে খননকাজ ও পয়োনিষ্কাশন-ব্যবস্থা করার জন্য মেয়রকে উদ্যোগ নিতে হবে। জেলায় আরও যেসব খালে অবৈধ দখল রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। গণকপাড়া ও মুন্সিরহাটের খাল থেকে শিগগিরই অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে উচ্ছেদ করা হবে। মাদক ও চুরির ঘটনায় পুলিশকে আরও তৎপর হতে হবে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। চুরির ঘটনাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে পুলিশ আরও সতর্কভাবে কাজ করবে।

No comments

Powered by Blogger.