হাসিনাকে বাস্তবতা বুঝতে হবেঃ কূলদীপ নায়ার by কল্লোল কর্মকার
তিস্তার পানি চুক্তি এবং টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যু আগামী নির্বাচনে নিঃসন্দেহে প্রভাব ফেলবে বলে অভিমত দিয়েছেন ভারতের প্রখ্যাত কলাম লেখক সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। বাংলাদেশ-ভারত বর্তমান সম্পর্ক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যক্রম নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দৈনিক গলফ নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মতামত দেন তিনি।
তার সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের জন্য ভাষান্তর করে উপস্থাপন করা হলো।
কূলদীপ নায়ার বলেন, জনপ্রিয়তা একটা দুর্লভ ব্যাপার। প্রয়োজনের সময় শাসকরা জনপ্রিয়তা পায় না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। যখন তার জনপ্রিয়তা আসলেই দরকার, তখন তিনি তা হারাচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষ তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অপশাসন না হলেও সুশাসনের অভাবে বাংলাদেশের মানুষের জীবন শুধু দুর্বিষহই হয়ে উঠছে। আর ক্ষমতায় বসার তিন বছর পার হওয়ার পরও তিনি তার বুঝতে পারছেন না।
‘বাংলাদেশে পাঁচ দিন থাকার পর আমার মনে হয়েছে, হাসিনা শুধু যে তার কারিশমাই হারিয়েছেন তা নয়, এক সময় তিনি যাদের বিশ্বাস করতেন, তাদেরও তিনি হারিয়েছেন। জনগণ তার কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করেছিল। কিন্তু বলার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ জনগণ দেখতে পাচ্ছে না।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি বিদ্যুৎ খাতের কথা উল্লেখ করেন।
নায়ার বলেন, ‘স্বল্প সম্পদ দিয়ে দারিদ্র্য হ্রাস করা সবসময়ই চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এই বাস্তবতা মানতে নারাজ। তিনি যা করছেন, তা নিয়ে তাকে বেশ সন্তুষ্ট দেখাচ্ছে। সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনগুলো যখন বিদ্যুৎ ঘাটতির কথা চিহ্নিত করলো, তখন তিনি আদেশ দিলেন, ‘যাদের কক্ষে এয়ারকন্ডিশন আছে, সেগুলো যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
তবে সন্দেহ নেই, হাসিনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। কারণ তার সময়ে অন্তত বাংলা ভাইয়ের মতো মৌলবাদীদের কোনো প্রকার প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। সেক্যুলারিজম তার প্রতিশ্রুতির মধ্যে একটি। এর জন্য তিনি নিরলস চেষ্টা চারিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অনেকটা ধরাশায়ী করে দিয়েছেন। এর জন্য অবশ্য বিএনপির ভারতবিরোধী বক্তব্যও অনেকটা সাহায্য করেছে হাসিনাকে। তিনি একপক্ষীয়ভাবে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যার জায়গাটি হলো, তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি। বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, নয়াদিল্লি এবং কলকাতার মধ্যকার রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে চুক্তিটি হচ্ছে না। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, তিস্তার পানি সময় মতোই প্রবাহিত হবে, যেমন ফারাক্কা ব্যারেজ সংক্রান্ত জটিলতা নিষ্পত্তি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আমলে। আবারও এটা নির্ভর করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। কারণ, মনমোহন সিংয়ের সরকার মমতার দলের লোকসভা সদস্যদের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।
তবে ভারতের মনিপুরের বরাক নদীর ওপরে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প যখন সামনে আসলো তখন ওই বিষয়টি আবারও পেছনে চলে গেল। বিবিসি সর্বপ্রথম এ বিষয়ে রিপোর্ট করে। তবে পরবর্তীতে অন্যরাও এ বিষয়টিকে সমর্থন জানায়। মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের একমাস পর ২৩ অক্টোবর মনিপুর সরকার এবং নয়াদিল্লির সঙ্গে এই চুক্তিটি হয়। আর এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ বাস্তবিক অর্থেই আঘাত পেয়েছে। কারণ, এই চুক্তির ফলে প্রমাণ হয়, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের সুবধা-অসুবিধার কথা ভাবছে না।
চুক্তির বাহাত্তর ঘণ্টা পর এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। তাতে বলা হয়, এই বাঁধ শুধুমাত্র বন্যা মোকাবেলার জন্য, নদীর পানি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য নয়। আর এই বক্তব্য বাংলাদেশিদের উদ্বেগ প্রশমিত করতে পারেনি। এই বাঁধটি বিশাল একটি অঞ্চলের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং বনাঞ্চল ধ্বংস করে দেবে। মোট বাহান্নটি নদী ভারত থেকে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে আসে। আমার মনে হয়, নয়াদিল্লির উচিত অন্তত এই বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে স্বচ্ছ আলোচনায় যাওয়া।
ভারতের এই পদক্ষেপে অবরুদ্ধ হাসিনার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ভারতের সঙ্গে হাসিনার বন্ধুতা চেষ্টা উপেক্ষিত হয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই, দুই বছর পর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তিস্তা এবং টিপাইমুখ ইস্যু হাসিনার ভোট কমিয়ে দেবে। আর এতে লাভবান হবে খালেদা জিয়া। কারণ তিনি এই বিষয়গুলো নিয়ে কোনো কথাই বলছেন না বরং চুপচাপ বসে আছেন।
কিন্তু বাংলাদেশিরা কি ব্যাডমিন্টনের কর্ক যে, হাসিনা এবং খালেদা তাদের মতো করে খেলবে? তারা অসহায় এবং তাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে বলে মনে হয়।
উভয় দল প্রকাশ্যেই সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিয়ে উদ্বেগের কথা বলছে। হাসিনা সরকারের খেয়াল খুশি মতো সেনা কর্মকর্তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন এবং বদলির সেনাবাহিনী ততোটা খুশি নয়। কিন্তু তারপরও দেশে সেনা অভ্যুত্থান (ক্যু) হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে।
তিন বছর আগের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল। সে সময় তারা চাইলেই প্রশাসন ভেঙে দিতে এবং দুই নেতার বিকল্প দাঁড় করাতে পারতো।
বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক একটা খড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষ স্রেফ ঝুলে আছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যত আছে কি না সে বিষয়ে তারা আজ উদ্বিগ্ন।
অপর দিকে চীন বাংলাদেশের সুখ-দুঃখের অংশীদার হতে চাইছে। কিন্তু চীন গণতান্ত্রিক দেশ না হওয়ায় তাও সম্ভব হচ্ছে না। তবে চীন যে কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে সেই কাঠামোকে মূল ভিত্তি করেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
ভারতের মতো বাংলাদেশেও দুর্নীতির দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের সর্বত্র দুর্নীতি এমন ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির ভয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণে তাদের সহায়তা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সর্বশেষ জানা যায়, এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সরাসরি দেখছে।
শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বাস্তবতাকে অনেকটাই ঢেকে রেখেছে। যার কারণে তিনি এ বিষয়টি নিয়ে অতোটা চিন্তিত নন। তিনি বিশ্বাস করেন, কিছু সংবাদপত্র তার সুনাম নষ্ট করছে। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছেন না ওই সংবাদপত্রগুলোর বিক্রয় সংখ্যা তাদের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ। তারা যদি সঠিক এবং সত্য সংবাদ না ছাপাতো তাহলে তারা শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র হতে পারতো না।
এছাড়া, আবারও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কমিউনিস্টদের মতো দলত্যাগীদের সমালোচনার বদলে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
(কুলদীপ নায়ার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং সাবেক রাজ্যসভা সদস্য।)
কূলদীপ নায়ার বলেন, জনপ্রিয়তা একটা দুর্লভ ব্যাপার। প্রয়োজনের সময় শাসকরা জনপ্রিয়তা পায় না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। যখন তার জনপ্রিয়তা আসলেই দরকার, তখন তিনি তা হারাচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষ তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অপশাসন না হলেও সুশাসনের অভাবে বাংলাদেশের মানুষের জীবন শুধু দুর্বিষহই হয়ে উঠছে। আর ক্ষমতায় বসার তিন বছর পার হওয়ার পরও তিনি তার বুঝতে পারছেন না।
‘বাংলাদেশে পাঁচ দিন থাকার পর আমার মনে হয়েছে, হাসিনা শুধু যে তার কারিশমাই হারিয়েছেন তা নয়, এক সময় তিনি যাদের বিশ্বাস করতেন, তাদেরও তিনি হারিয়েছেন। জনগণ তার কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করেছিল। কিন্তু বলার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ জনগণ দেখতে পাচ্ছে না।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি বিদ্যুৎ খাতের কথা উল্লেখ করেন।
নায়ার বলেন, ‘স্বল্প সম্পদ দিয়ে দারিদ্র্য হ্রাস করা সবসময়ই চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এই বাস্তবতা মানতে নারাজ। তিনি যা করছেন, তা নিয়ে তাকে বেশ সন্তুষ্ট দেখাচ্ছে। সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনগুলো যখন বিদ্যুৎ ঘাটতির কথা চিহ্নিত করলো, তখন তিনি আদেশ দিলেন, ‘যাদের কক্ষে এয়ারকন্ডিশন আছে, সেগুলো যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
তবে সন্দেহ নেই, হাসিনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। কারণ তার সময়ে অন্তত বাংলা ভাইয়ের মতো মৌলবাদীদের কোনো প্রকার প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। সেক্যুলারিজম তার প্রতিশ্রুতির মধ্যে একটি। এর জন্য তিনি নিরলস চেষ্টা চারিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অনেকটা ধরাশায়ী করে দিয়েছেন। এর জন্য অবশ্য বিএনপির ভারতবিরোধী বক্তব্যও অনেকটা সাহায্য করেছে হাসিনাকে। তিনি একপক্ষীয়ভাবে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যার জায়গাটি হলো, তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি। বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, নয়াদিল্লি এবং কলকাতার মধ্যকার রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে চুক্তিটি হচ্ছে না। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, তিস্তার পানি সময় মতোই প্রবাহিত হবে, যেমন ফারাক্কা ব্যারেজ সংক্রান্ত জটিলতা নিষ্পত্তি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আমলে। আবারও এটা নির্ভর করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। কারণ, মনমোহন সিংয়ের সরকার মমতার দলের লোকসভা সদস্যদের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।
তবে ভারতের মনিপুরের বরাক নদীর ওপরে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প যখন সামনে আসলো তখন ওই বিষয়টি আবারও পেছনে চলে গেল। বিবিসি সর্বপ্রথম এ বিষয়ে রিপোর্ট করে। তবে পরবর্তীতে অন্যরাও এ বিষয়টিকে সমর্থন জানায়। মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের একমাস পর ২৩ অক্টোবর মনিপুর সরকার এবং নয়াদিল্লির সঙ্গে এই চুক্তিটি হয়। আর এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ বাস্তবিক অর্থেই আঘাত পেয়েছে। কারণ, এই চুক্তির ফলে প্রমাণ হয়, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের সুবধা-অসুবিধার কথা ভাবছে না।
চুক্তির বাহাত্তর ঘণ্টা পর এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। তাতে বলা হয়, এই বাঁধ শুধুমাত্র বন্যা মোকাবেলার জন্য, নদীর পানি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য নয়। আর এই বক্তব্য বাংলাদেশিদের উদ্বেগ প্রশমিত করতে পারেনি। এই বাঁধটি বিশাল একটি অঞ্চলের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং বনাঞ্চল ধ্বংস করে দেবে। মোট বাহান্নটি নদী ভারত থেকে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে আসে। আমার মনে হয়, নয়াদিল্লির উচিত অন্তত এই বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে স্বচ্ছ আলোচনায় যাওয়া।
ভারতের এই পদক্ষেপে অবরুদ্ধ হাসিনার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ভারতের সঙ্গে হাসিনার বন্ধুতা চেষ্টা উপেক্ষিত হয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই, দুই বছর পর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তিস্তা এবং টিপাইমুখ ইস্যু হাসিনার ভোট কমিয়ে দেবে। আর এতে লাভবান হবে খালেদা জিয়া। কারণ তিনি এই বিষয়গুলো নিয়ে কোনো কথাই বলছেন না বরং চুপচাপ বসে আছেন।
কিন্তু বাংলাদেশিরা কি ব্যাডমিন্টনের কর্ক যে, হাসিনা এবং খালেদা তাদের মতো করে খেলবে? তারা অসহায় এবং তাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে বলে মনে হয়।
উভয় দল প্রকাশ্যেই সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিয়ে উদ্বেগের কথা বলছে। হাসিনা সরকারের খেয়াল খুশি মতো সেনা কর্মকর্তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন এবং বদলির সেনাবাহিনী ততোটা খুশি নয়। কিন্তু তারপরও দেশে সেনা অভ্যুত্থান (ক্যু) হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে।
তিন বছর আগের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল। সে সময় তারা চাইলেই প্রশাসন ভেঙে দিতে এবং দুই নেতার বিকল্প দাঁড় করাতে পারতো।
বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক একটা খড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষ স্রেফ ঝুলে আছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যত আছে কি না সে বিষয়ে তারা আজ উদ্বিগ্ন।
অপর দিকে চীন বাংলাদেশের সুখ-দুঃখের অংশীদার হতে চাইছে। কিন্তু চীন গণতান্ত্রিক দেশ না হওয়ায় তাও সম্ভব হচ্ছে না। তবে চীন যে কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে সেই কাঠামোকে মূল ভিত্তি করেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
ভারতের মতো বাংলাদেশেও দুর্নীতির দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের সর্বত্র দুর্নীতি এমন ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির ভয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণে তাদের সহায়তা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সর্বশেষ জানা যায়, এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সরাসরি দেখছে।
শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বাস্তবতাকে অনেকটাই ঢেকে রেখেছে। যার কারণে তিনি এ বিষয়টি নিয়ে অতোটা চিন্তিত নন। তিনি বিশ্বাস করেন, কিছু সংবাদপত্র তার সুনাম নষ্ট করছে। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছেন না ওই সংবাদপত্রগুলোর বিক্রয় সংখ্যা তাদের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ। তারা যদি সঠিক এবং সত্য সংবাদ না ছাপাতো তাহলে তারা শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র হতে পারতো না।
এছাড়া, আবারও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কমিউনিস্টদের মতো দলত্যাগীদের সমালোচনার বদলে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
(কুলদীপ নায়ার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং সাবেক রাজ্যসভা সদস্য।)
No comments