দিল্লির শতবর্ষ উদযাপন নিয়ে মতভেদ
আগামী মাসেই ১০০ বছরে পা দিচ্ছে নয়াদিলি্ল। নথিপত্র অনুযায়ী, ১২ ডিসেম্বর শহরটির ১০০তম জন্মদিন। আর তা ঘটা করেই পালন করতে প্রস্তুত গোটা দেশ। তবে জন্মদিন উদ্যাপন ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুর বর্তমান শানশওকত ও উন্নতির ধারাকে মূল ধরে করা হবে নাকি ব্রিটিশ উপনিবেশের স্মৃতি না ঘেঁটে নিভৃতেই পার করা হবে_তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক ও মতভেদ।
তৎকালীন ভারত শাসক ব্রিটিশদের হাতে রাজধানী হিসেবে দিলি্লর আত্মপ্রকাশের পর গত ১০০ বছরে দেশটির অন্যতম বড় শহরে পরিণত হয়েছে এটি। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু এখন দিলি্ল। মেগাসিটির তকমা আঁটা এই মহানগরের বর্তমান লোকসংখ্যা প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ। মেট্রোরেল, হাইওয়ের পাশাপাশি দিলি্লকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অনেক স্যাটেলাইট শহর। এই আধুনিক ব্যবস্থা ও আয়োজনের ভিড়ে ব্রিটিশ স্মৃতিচিহ্ন কার্যত আর সেভাবে বেঁচে নেই। গোটাকতক সুরম্য ভবন ও স্থাপনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ঔপনিবেশিক আমল!
চলতি মাসের গোড়ার দিকে মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতও স্বীকার করেন, দিলি্লর জন্মদিন পালন নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তিনি বলেন, 'কী উদ্যাপন করা হবে এবং কিভাবে উদ্যাপন করা হবে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী দুটি মত রয়েছে।' মুখ্যমন্ত্রী জানান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা করেছে। তাঁর ধারণা, মন্ত্রণালয়ের কাছেও পরিষ্কার কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই।
ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজা পঞ্চম জর্জ ভারতের সব অঞ্চলের রাজন্য ও শাসকদের 'দরবারে' ডেকে পাঠান। পুরাতন দিলি্লর ওই দরবার থেকেই পঞ্চম জর্জ কলকাতার পরিবর্তে দিলি্লকে রাজধানী ঘোষণা করেন। তাঁর এ ঘোষণায় ভারতবাসী তো বটেই, তৎকালীন ব্রিটিশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পর্যন্ত অবাক হয়েছিলেন।
সে সময় কলকাতা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছিল। পাশাপাশি কৌশলগত দিক থেকে কলকাতার চেয়ে দিলি্ল অবস্থান ছিল সুদৃঢ়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ রাজ ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
ব্রিটিশদের আগে ভারতের শাসনভার ছিল মোগলদের হাতে। সে সময়ও দিলি্ল ছিল গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী। এ ব্যাপারটিকেও অনেকে সামনে টেনে ব্রিটিশদের পাশ কাটাতে চান। পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য হলো, ব্রিটিশদের হাতে দিলি্লতে রাজধানীর গোড়াপত্তন হলেও তারা বেশি দিন রাজত্ব করতে পারেনি। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারত। এর পর ভারতীয়দের শ্রমে-ঘামেই দিলি্লর বাড়বাড়ন্ত।
শিল্প ও সাংস্কৃতিক হেরিটেজবিষয়ক ভারতের জাতীয় ট্রাস্টের (আইএনটিএসিএইচ) প্রধান এ জি কৃষ্ণ মেননের মত, 'যে যাই বলুক, ইতিহাস অগ্রাহ্য করা যাবে না। দিলি্লর ব্যাপারটি আমাদের ইতিহাসেরই অংশ এবং এটিকে স্বীকৃতি দিতে হবে।' তিনি বলেন, 'ব্রিটিশদের নকশার ওপর নয়াদিলি্ল গড়ে ওঠেছে। কিন্তু ভারতীয় শিল্পী, নির্মাতা এবং দেশের ঐতিহ্যের ছোঁয়া ছাড়া কোনো স্থাপনাই নির্মিত হয়নি তখন।' ব্রিটিশ স্থপতি এডউইন লুটিয়েনস ও হার্বার্ট বাকের রাজধানী দিলি্লর নকশা তৈরি করেন।
৩৪০ কক্ষবিশিষ্ট রাষ্ট্রপতি ভবনসহ ব্রিটিশ আমলে নির্মিত অন্যান্য স্থাপনা এখন ভারতের জাতীয় অহংকারের প্রতীক বলেই বিশ্বাস করেন মেনন। যদিও তার মধ্যে অনেকে ব্রিটিশদের 'ভূত' দেখতে পান। ভারতীয় ইতিহাসবিদ মহেশ রঙ্গরাজনও মেননের সঙ্গে একমত হয়ে বলেন, 'ঔপনিবেশিক শাসন হয়তো যন্ত্রণাদায়ক ছিল। কিন্তু সে আমলকে ইতিহাসের একটি পর্যায় হিসেবেই দেখতে হবে।' সূত্র : এএফপি।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতও স্বীকার করেন, দিলি্লর জন্মদিন পালন নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তিনি বলেন, 'কী উদ্যাপন করা হবে এবং কিভাবে উদ্যাপন করা হবে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী দুটি মত রয়েছে।' মুখ্যমন্ত্রী জানান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা করেছে। তাঁর ধারণা, মন্ত্রণালয়ের কাছেও পরিষ্কার কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই।
ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজা পঞ্চম জর্জ ভারতের সব অঞ্চলের রাজন্য ও শাসকদের 'দরবারে' ডেকে পাঠান। পুরাতন দিলি্লর ওই দরবার থেকেই পঞ্চম জর্জ কলকাতার পরিবর্তে দিলি্লকে রাজধানী ঘোষণা করেন। তাঁর এ ঘোষণায় ভারতবাসী তো বটেই, তৎকালীন ব্রিটিশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পর্যন্ত অবাক হয়েছিলেন।
সে সময় কলকাতা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছিল। পাশাপাশি কৌশলগত দিক থেকে কলকাতার চেয়ে দিলি্ল অবস্থান ছিল সুদৃঢ়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ রাজ ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
ব্রিটিশদের আগে ভারতের শাসনভার ছিল মোগলদের হাতে। সে সময়ও দিলি্ল ছিল গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী। এ ব্যাপারটিকেও অনেকে সামনে টেনে ব্রিটিশদের পাশ কাটাতে চান। পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য হলো, ব্রিটিশদের হাতে দিলি্লতে রাজধানীর গোড়াপত্তন হলেও তারা বেশি দিন রাজত্ব করতে পারেনি। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারত। এর পর ভারতীয়দের শ্রমে-ঘামেই দিলি্লর বাড়বাড়ন্ত।
শিল্প ও সাংস্কৃতিক হেরিটেজবিষয়ক ভারতের জাতীয় ট্রাস্টের (আইএনটিএসিএইচ) প্রধান এ জি কৃষ্ণ মেননের মত, 'যে যাই বলুক, ইতিহাস অগ্রাহ্য করা যাবে না। দিলি্লর ব্যাপারটি আমাদের ইতিহাসেরই অংশ এবং এটিকে স্বীকৃতি দিতে হবে।' তিনি বলেন, 'ব্রিটিশদের নকশার ওপর নয়াদিলি্ল গড়ে ওঠেছে। কিন্তু ভারতীয় শিল্পী, নির্মাতা এবং দেশের ঐতিহ্যের ছোঁয়া ছাড়া কোনো স্থাপনাই নির্মিত হয়নি তখন।' ব্রিটিশ স্থপতি এডউইন লুটিয়েনস ও হার্বার্ট বাকের রাজধানী দিলি্লর নকশা তৈরি করেন।
৩৪০ কক্ষবিশিষ্ট রাষ্ট্রপতি ভবনসহ ব্রিটিশ আমলে নির্মিত অন্যান্য স্থাপনা এখন ভারতের জাতীয় অহংকারের প্রতীক বলেই বিশ্বাস করেন মেনন। যদিও তার মধ্যে অনেকে ব্রিটিশদের 'ভূত' দেখতে পান। ভারতীয় ইতিহাসবিদ মহেশ রঙ্গরাজনও মেননের সঙ্গে একমত হয়ে বলেন, 'ঔপনিবেশিক শাসন হয়তো যন্ত্রণাদায়ক ছিল। কিন্তু সে আমলকে ইতিহাসের একটি পর্যায় হিসেবেই দেখতে হবে।' সূত্র : এএফপি।
No comments