টিপাইমুখ বাঁধ দেশ পাবে সমৃদ্ধির স্বাদ! by ইকবাল খন্দকার
এক.নিন্দুকদের কি খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নেই? সব বিষয়ে নিন্দা করতে হবে? আরে বাবা শত হলেও তো নিন্দুকেরা এ দেশেরই নাগরিক। দেশের জন্য যে বিষয়গুলো উপকারী, সেই বিষয়গুলো নিয়ে কেন তারা নাক গলায়? কেন নিন্দা জানায়? সম্প্রতি তারা নিন্দা জানিয়েছে এমনকি এখনও পর্যন্ত নিন্দা অব্যাহত রেখেছে টিপাইমুখ বাঁধ বিষয়ে। এই বাঁধটা আমাদের জন্য এত উপকারী, আর সেই বাঁধ নিয়ে কি-না তারা কথা বলছে।
এই দুঃখ রাখার আসলে জায়গা নেই। যারা ইতিমধ্যে নিন্দুকদের কথায় পটে গিয়ে মনে মনে টিপাইমুখ বাঁধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নিয়েছেন, তাদের কাছে খোলাসা করা দরকার-কেন টিপাইমুখ বাঁধ আমাদের জন্য উপকারী। বলছি, একটু আরাম করে বসেন।
টিপাইমুখ বাঁধের কারণে আমাদের দেশ পানি সংকটে পড়বে এবং সেই সংকট দীর্ঘস্থায়ী হতে হতে একদিন দেশের কিছু অংশ মরুভূমিতে রূপান্তরিত হবে। প্রাথমিকভাবে দেশের কিছু অংশ মরুভূমিতে রূপান্তরিত হলেও একদিন যে পুরো দেশ মরুভূমি হবে না তার কিন্তু নিশ্চয়তা নেই। আর সেখানেই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য সৌভাগ্য। কারণ মরুভূমি মানেই বিপুল সম্ভাবনা। সৌদি আরবে মরুভূমি আছে বলেই তারা আমাদের চেয়ে এত বেশি এগিয়ে। আর কোথাও থাক বা না থাক, মরুভূমির দেশে প্রচুর খনিজসম্পদ থাকবেই। বিশেষ করে তেল। কেউ কেউ বলে, আমাদের দেশে নাকি গ্যাস ছাড়া আর কোনো খনিজসম্পদ নেই। যারা এটা বলে মরুভূমি হওয়ার পর তাদের মুখে ছাই পড়বে। কারণ তখন যেখানে সেখানে তেলের খনি পাওয়া যাবে। আগেকার দিনে কুয়া থেকে যেভাবে বালতি দিয়ে পানি তুলে রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহার করা হতো, ঠিক সেভাবেই আমরা খনি থেকে বালতি দিয়ে তেল তুলে কাজে লাগাতে পারব। কাজে তো লাগাবই, রোজ কয়েক বালতি বাজারেও বিক্রি করব। এতে হাত খরচটা হয়ে যাবে। তার মানে টাকা কামানোর জন্য আমাদের চাকরি-বাকরি না করলেও চলছে। আমরা এখন ধান, গম, আলু, পটল ছাড়া আর কোনো ফসল উৎপাদন করতে পারছি না। কিন্তু দেশ যখন মরুভূমি হবে, তখন আমাদের পেশা হয়ে দাঁড়াবে খোরমা খেজুর উৎপাদন করা। তারপর সেগুলো প্যাকেটজাত করে বিদেশে রফতানি করে দেব। ঘরে বসেই বিদেশি মুদ্রা আর্ন, বুঝুন অবস্থা।
গরু-ছাগলের দাম এখন এত বেশি যে, কোরবানি বা অন্য কোনো আয়োজনের জন্য গরু-ছাগল কিনতে গেলে পাওয়াই যায় না। দেশটা মরুভূমি হয়ে গেলেই এ সংকট কেটে যাবে। কারণ তখন দেশে প্রচুর উট পাওয়া যাবে। আর এই উট দিয়ে যাতায়াতও করতে পারব। সিএনজি কিংবা রিকশাওয়ালাকে আর অনুনয়-বিনয় করতে হবে না। বাহ্ কী চমৎকার যাতায়াত ব্যবস্থাপনা!
দুই.
আমরা জানতে পেরেছি, ভারত নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য টিপাইমুখ বাঁধ দিয়েছে। তার মানে আমরা কতটা লাভবান হতে যাচ্ছি একবার চিন্তা করেছেন? ভারত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার মানেই হচ্ছে, তারা বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ তাদের দেশে কোনো রকম লোডশেডিং থাকবে না। এমনকি আমাদের দেশে যখন লোডশেডিং চলবে, তখনও তারা মরিচবাতিসহ নানা ধরনের বাতি জ্বালিয়ে রাখবে। আমাদের লাভটা সেখানেই। তাদের জ্বালিয়ে রাখা বাত্তির আলোতেই আমাদের চলে যাবে। আরে বাপু, প্রতিবেশীর বাড়িতে যদি বড় ধরনের আলো জ্বলে, তাহলে নিজের বাড়িতে আলো না জ্বালালেও চলে।
বলা হচ্ছে, টিপাইমুখ বাঁধের কারণে নদী-নালা-ডোবা-পুকুরসহ সব রকম জলাশয় শুকিয়ে যাবে। সত্যিই অত্যন্ত আনন্দের খবর। বিশেষ করে যারা রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করে। দেখা যায় তারা গভীর পানির মধ্যে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে লিখে রেখেছে, অমুক বিল্ডার্স লিমিটেড। মানুষ এত পানির মধ্যে জমি কিনে বাড়ি বানানোর সাহসও পায় না, তাই অনেকে কেনেও না। কিন্তু যখন কোথাও কোনো জলাশয়ই থাকবে না, তখন ইনাদের আর পানিতে সাইনবোর্ড ঝোলাতে হবে না। মানুষ জমি কিনে মাটি ভরাট না করেই বাড়ি বানিয়ে ফেলতে পারবে। ফলে জমির দাম হয়ে যাবে কয়েকগুণ, যা আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত শুভ একটা বিষয়।
ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কথা না বলেই বাঁধটা নির্মাণ করেছে বলে কারও কারও মনে ব্যাপক ক্ষোভ। আরে দাদা এখানে ক্ষোভের কী হলো। আমাদের তো বরং খুশি হওয়া উচিত। কারণ এতে আমাদের খরচ বেঁচে গেছে। কিছুদিন আগে তিস্তা চুক্তির নামে মনোমোহন সিং বাংলাদেশে এসে কত কিছু খেয়ে গেল। এই দুর্মূল্যের বাজারে একজন গেস্টকে খাওয়ানো-দাওয়ানো কম খরচের? টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে চুক্তি করার জন্য আবার যদি কেউ আসত তাহলে আমরা খরচের ভাগে পড়ে যেতাম। তার মানে তারা টিপাইমুখ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য না এসে সত্যি সত্যি আমাদের ম্যালা খরচ বাঁচিয়ে দিয়েছে।
যাদের বাড়ি গ্রামে, তারা নিশ্চয়ই জানেন নদীতে বাঁধ দিলে প্রচুর টাটকা মাছ পাওয়া যায়। অতএব টিপাইমুখ বাঁধের কল্যাণে আজ হোক আর কাল হোক মাছ ধরার একটা ব্যবস্থা হতেই পারে। বাজারে এখন মাছের দাম সবচেয়ে বেশি। এক ভাগা কাঁচকির দাম ১০০ টাকা। টিপাইমুখ বাঁধের কল্যাণে যদি মাছ ধরার ব্যবস্থাটা হয়ে যায়, তাহলে বাজারের ফরমালিন দেওয়া মাছ আমরা খাবই না। টাটকা আর তরতাজা মাছ খেয়ে খেয়ে আমরা হয়ে উঠব সত্যিকারের মাছে ভাতে বাঙালি! ইশ, কবে বাঁধটা শেষ হবে!
টিপাইমুখ বাঁধের কারণে আমাদের দেশ পানি সংকটে পড়বে এবং সেই সংকট দীর্ঘস্থায়ী হতে হতে একদিন দেশের কিছু অংশ মরুভূমিতে রূপান্তরিত হবে। প্রাথমিকভাবে দেশের কিছু অংশ মরুভূমিতে রূপান্তরিত হলেও একদিন যে পুরো দেশ মরুভূমি হবে না তার কিন্তু নিশ্চয়তা নেই। আর সেখানেই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য সৌভাগ্য। কারণ মরুভূমি মানেই বিপুল সম্ভাবনা। সৌদি আরবে মরুভূমি আছে বলেই তারা আমাদের চেয়ে এত বেশি এগিয়ে। আর কোথাও থাক বা না থাক, মরুভূমির দেশে প্রচুর খনিজসম্পদ থাকবেই। বিশেষ করে তেল। কেউ কেউ বলে, আমাদের দেশে নাকি গ্যাস ছাড়া আর কোনো খনিজসম্পদ নেই। যারা এটা বলে মরুভূমি হওয়ার পর তাদের মুখে ছাই পড়বে। কারণ তখন যেখানে সেখানে তেলের খনি পাওয়া যাবে। আগেকার দিনে কুয়া থেকে যেভাবে বালতি দিয়ে পানি তুলে রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহার করা হতো, ঠিক সেভাবেই আমরা খনি থেকে বালতি দিয়ে তেল তুলে কাজে লাগাতে পারব। কাজে তো লাগাবই, রোজ কয়েক বালতি বাজারেও বিক্রি করব। এতে হাত খরচটা হয়ে যাবে। তার মানে টাকা কামানোর জন্য আমাদের চাকরি-বাকরি না করলেও চলছে। আমরা এখন ধান, গম, আলু, পটল ছাড়া আর কোনো ফসল উৎপাদন করতে পারছি না। কিন্তু দেশ যখন মরুভূমি হবে, তখন আমাদের পেশা হয়ে দাঁড়াবে খোরমা খেজুর উৎপাদন করা। তারপর সেগুলো প্যাকেটজাত করে বিদেশে রফতানি করে দেব। ঘরে বসেই বিদেশি মুদ্রা আর্ন, বুঝুন অবস্থা।
গরু-ছাগলের দাম এখন এত বেশি যে, কোরবানি বা অন্য কোনো আয়োজনের জন্য গরু-ছাগল কিনতে গেলে পাওয়াই যায় না। দেশটা মরুভূমি হয়ে গেলেই এ সংকট কেটে যাবে। কারণ তখন দেশে প্রচুর উট পাওয়া যাবে। আর এই উট দিয়ে যাতায়াতও করতে পারব। সিএনজি কিংবা রিকশাওয়ালাকে আর অনুনয়-বিনয় করতে হবে না। বাহ্ কী চমৎকার যাতায়াত ব্যবস্থাপনা!
দুই.
আমরা জানতে পেরেছি, ভারত নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য টিপাইমুখ বাঁধ দিয়েছে। তার মানে আমরা কতটা লাভবান হতে যাচ্ছি একবার চিন্তা করেছেন? ভারত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার মানেই হচ্ছে, তারা বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ তাদের দেশে কোনো রকম লোডশেডিং থাকবে না। এমনকি আমাদের দেশে যখন লোডশেডিং চলবে, তখনও তারা মরিচবাতিসহ নানা ধরনের বাতি জ্বালিয়ে রাখবে। আমাদের লাভটা সেখানেই। তাদের জ্বালিয়ে রাখা বাত্তির আলোতেই আমাদের চলে যাবে। আরে বাপু, প্রতিবেশীর বাড়িতে যদি বড় ধরনের আলো জ্বলে, তাহলে নিজের বাড়িতে আলো না জ্বালালেও চলে।
বলা হচ্ছে, টিপাইমুখ বাঁধের কারণে নদী-নালা-ডোবা-পুকুরসহ সব রকম জলাশয় শুকিয়ে যাবে। সত্যিই অত্যন্ত আনন্দের খবর। বিশেষ করে যারা রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করে। দেখা যায় তারা গভীর পানির মধ্যে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে লিখে রেখেছে, অমুক বিল্ডার্স লিমিটেড। মানুষ এত পানির মধ্যে জমি কিনে বাড়ি বানানোর সাহসও পায় না, তাই অনেকে কেনেও না। কিন্তু যখন কোথাও কোনো জলাশয়ই থাকবে না, তখন ইনাদের আর পানিতে সাইনবোর্ড ঝোলাতে হবে না। মানুষ জমি কিনে মাটি ভরাট না করেই বাড়ি বানিয়ে ফেলতে পারবে। ফলে জমির দাম হয়ে যাবে কয়েকগুণ, যা আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত শুভ একটা বিষয়।
ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কথা না বলেই বাঁধটা নির্মাণ করেছে বলে কারও কারও মনে ব্যাপক ক্ষোভ। আরে দাদা এখানে ক্ষোভের কী হলো। আমাদের তো বরং খুশি হওয়া উচিত। কারণ এতে আমাদের খরচ বেঁচে গেছে। কিছুদিন আগে তিস্তা চুক্তির নামে মনোমোহন সিং বাংলাদেশে এসে কত কিছু খেয়ে গেল। এই দুর্মূল্যের বাজারে একজন গেস্টকে খাওয়ানো-দাওয়ানো কম খরচের? টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে চুক্তি করার জন্য আবার যদি কেউ আসত তাহলে আমরা খরচের ভাগে পড়ে যেতাম। তার মানে তারা টিপাইমুখ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য না এসে সত্যি সত্যি আমাদের ম্যালা খরচ বাঁচিয়ে দিয়েছে।
যাদের বাড়ি গ্রামে, তারা নিশ্চয়ই জানেন নদীতে বাঁধ দিলে প্রচুর টাটকা মাছ পাওয়া যায়। অতএব টিপাইমুখ বাঁধের কল্যাণে আজ হোক আর কাল হোক মাছ ধরার একটা ব্যবস্থা হতেই পারে। বাজারে এখন মাছের দাম সবচেয়ে বেশি। এক ভাগা কাঁচকির দাম ১০০ টাকা। টিপাইমুখ বাঁধের কল্যাণে যদি মাছ ধরার ব্যবস্থাটা হয়ে যায়, তাহলে বাজারের ফরমালিন দেওয়া মাছ আমরা খাবই না। টাটকা আর তরতাজা মাছ খেয়ে খেয়ে আমরা হয়ে উঠব সত্যিকারের মাছে ভাতে বাঙালি! ইশ, কবে বাঁধটা শেষ হবে!
No comments