ঢাকার রাজনীতির নন্দিত নায়ক by মোহাম্মদ হাবিবুল ইসলাম সুমন
ঢাকার রাজনীতির নন্দিত নায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহভাজন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত সফল মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন মোহাম্মদ হানিফ।মোহাম্মদ হানিফ যৌবনের শুরু থেকে সারাজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। দলীয় রাজনীতি করলেও তার উদার চিন্তা-চেতনা ও সংবেদনশীল মনোভাবের কারণে
দলমত নির্বিশেষে সব মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল। তার জীবন ছিল কর্মময়, ধ্যান-ধারণা ছিল অত্যন্ত সুন্দর, ব্যক্তিগত চরিত্র ছিল স্বচ্ছতা ও সততার সৌরভে উজ্জ্বল। একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা, যিনি নগরবাসীর প্রত্যক্ষ ভোটে প্রথম নির্বাচিত একজন সফল মেয়র। নিজ বিশ্বাসে অটল থেকে তা অকপটে প্রকাশ করতে পারা একজন ব্যক্তিত্ব। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প তাকে কোনোদিন স্পর্শ করতে পারেনি। কিন্তু একজন ইমানদার মুসলমান হিসেবে শুধু ধর্ম-কর্ম পালন করেই ক্ষান্ত হতেন না বরং ইসলামের মহিমা সম্পর্কেও ছিলেন সোচ্চার।
মোহাম্মদ হানিফ ১৯৪৪ সালের ১ এপ্রিল সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আবদুল আজিজ, মাতা মুনি্ন বেগমের পরিবারে মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন সবচেয়ে ছোট ছেলে। ১৯৬৭ সালে ঢাকার প্রখ্যাত পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মরহুম আলহাজ মাজেদ সরদারের কন্যা ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
মোহাম্মদ হানিফ ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব থেকে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তিনি একান্ত সচিব থাকাকালীন ছয় দফা আন্দোলনের প্রস্তুতি, ছয় দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন এবং প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, '৭০-এর জাতীয় নির্বাচন, মহান মুক্তি সংগ্রামে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা চিরস্মরণীয়। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সব আন্দোলনে তিনি রাজপথে সংগ্রামের প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অতুলনীয় সাংগঠনিক দক্ষতা এবং সম্মোহনী বাগ্মিতার কারণে সদস্য নির্বাচিত হন এবং পরবর্তী সময়ে হুইপের মহান দায়িত্ব পালন করেন। সংগ্রামী জীবনে ১৯৭৬ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মাঝখানে কয়েক দিন বিরত থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ৩০ বছর এ মহান দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
'৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৯৪ সালে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ঢাকার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন এই নেতা। তার নেতৃত্বে '৯৬-এ মার্চের শেষ সপ্তাহে 'জনতার মঞ্চ' গঠন করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট তৈরি করেন।
২০০৪ সালের ভয়াল ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ট্রাকমঞ্চে শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে তার প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হানিফ। একের পর এক ছোড়া গ্রেনেডের সামনে নির্ভয়ে পেতে দেন নিজেকে, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও গুরুতর আহত হন তিনি। মস্তিষ্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য ঘাতক স্পিল্গন্টার ঢুকে পড়ে। দীর্ঘদিনের চিকিৎসাও কোনো ফল দেয়নি বরং মাথার গভীরে বিঁধে থাকা স্পিল্গন্টার অস্ত্রোপ্রচার করেও অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। দুঃসহ যন্ত্রণা সহ্য করেই রাজনৈতিক জীবনে সক্রিয় থেকেছেন মোহাম্মদ হানিফ।
২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গনে এক সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতা দেওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। মাথায় বিদ্ধ স্পিল্গন্টারের প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতিও মৃত্যুর কারণ হিসেবে কাজ করেছে। তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরে ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অবশেষে চির অবসান ঘটে তার কর্মময় বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের। তার মৃত্যুতে সৃষ্ট শূন্যতা কখনও পূরণ হওয়ার নয়। দেশের রাজনীতিতে তার অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
মোহাম্মদ হানিফ ১৯৪৪ সালের ১ এপ্রিল সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আবদুল আজিজ, মাতা মুনি্ন বেগমের পরিবারে মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন সবচেয়ে ছোট ছেলে। ১৯৬৭ সালে ঢাকার প্রখ্যাত পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মরহুম আলহাজ মাজেদ সরদারের কন্যা ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
মোহাম্মদ হানিফ ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব থেকে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তিনি একান্ত সচিব থাকাকালীন ছয় দফা আন্দোলনের প্রস্তুতি, ছয় দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন এবং প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, '৭০-এর জাতীয় নির্বাচন, মহান মুক্তি সংগ্রামে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা চিরস্মরণীয়। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সব আন্দোলনে তিনি রাজপথে সংগ্রামের প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অতুলনীয় সাংগঠনিক দক্ষতা এবং সম্মোহনী বাগ্মিতার কারণে সদস্য নির্বাচিত হন এবং পরবর্তী সময়ে হুইপের মহান দায়িত্ব পালন করেন। সংগ্রামী জীবনে ১৯৭৬ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মাঝখানে কয়েক দিন বিরত থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ৩০ বছর এ মহান দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
'৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৯৪ সালে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ঢাকার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন এই নেতা। তার নেতৃত্বে '৯৬-এ মার্চের শেষ সপ্তাহে 'জনতার মঞ্চ' গঠন করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট তৈরি করেন।
২০০৪ সালের ভয়াল ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ট্রাকমঞ্চে শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে তার প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হানিফ। একের পর এক ছোড়া গ্রেনেডের সামনে নির্ভয়ে পেতে দেন নিজেকে, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও গুরুতর আহত হন তিনি। মস্তিষ্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য ঘাতক স্পিল্গন্টার ঢুকে পড়ে। দীর্ঘদিনের চিকিৎসাও কোনো ফল দেয়নি বরং মাথার গভীরে বিঁধে থাকা স্পিল্গন্টার অস্ত্রোপ্রচার করেও অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। দুঃসহ যন্ত্রণা সহ্য করেই রাজনৈতিক জীবনে সক্রিয় থেকেছেন মোহাম্মদ হানিফ।
২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গনে এক সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতা দেওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। মাথায় বিদ্ধ স্পিল্গন্টারের প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতিও মৃত্যুর কারণ হিসেবে কাজ করেছে। তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরে ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অবশেষে চির অবসান ঘটে তার কর্মময় বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের। তার মৃত্যুতে সৃষ্ট শূন্যতা কখনও পূরণ হওয়ার নয়। দেশের রাজনীতিতে তার অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
No comments