উদারপন্থীরা দ্বিধাগ্রস্ত, এগিয়ে মুসলিম ব্রাদারহুড
মিসরে ইসলামপন্থী দল ও ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদের (এসসিএএফ) চাপে একেবারেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন উদারপন্থীরা। 'আরব নবজাগরণের' সাফল্যে মুখ্য ভূমিকা ছিল তাঁদের। অথচ সঠিক রাজনৈতিক দিকনির্দেশনার অভাবে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি তাদের যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারছে না। বরং ব্যর্থ হচ্ছে। এখনো এক পা আনুষ্ঠানিক রাজনীতি এবং অন্য পা রাস্তার বিক্ষোভে রেখে দাঁড়িয়ে আছে তারা। যেকোনো একদিকে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারছে
না।সেদিক থেকে এগিয়ে আছে সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকের আমলে নিষিদ্ধ ঘোষিত দল মুসলিম ব্রাদারহুড। মুবারকের পতনের পর ইসলামপন্থী এ দলকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আজকের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তারা। তারা ছাড়াও আজকের নির্বাচনে আছে মুবারকের দল এনডিপি। মুবারকের পতনের পর থেকে দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া মুসলিম ব্রাদারহুড এক সপ্তাহজুড়ে চলা বিক্ষোভ থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে। এ নির্বাচনে তাদের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করা হয়।
এ দলগুলো সম্পর্কে মানবাধিকারকর্মী খালিদ আবদেল্লাহ বলেন, 'তাঁরা দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন। কিন্তু মনমতো সাড়া পাচ্ছেন না। (মুবারক বিরোধী) বিপ্লবে নিজেদের ভূমিকার কথা বলছেন তাঁরা, অথচ তাঁদের মধ্যে খুব কম লোকই ওই বিপ্লবের অন্তর্নিহিত অর্থ বোঝে। ওই বিপ্লবের মতাদর্শের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মানুষও তাদের ভেতর খুব বেশি নেই।' আবদেল্লাহ জানান, উদারপন্থী দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চলমান সংকটের ব্যাপারে অনেকটাই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। শুরুতে নির্বাচনে আগ্রহী ছিলেন সবাই। তারপর এসসিএএফ খসড়া সংবিধানে সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক প্রশাসনের নজরদারি থেকে বিরত রাখার প্রস্তাব দিলে গত সপ্তাহ থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু হয়। ধীরগতিতে সংস্কারের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ছিল। গত সপ্তাহ থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বিভক্তি তৈরি হয়। অনেকেই সাময়িকভাবে প্রচার থেকে বিরত থাকেন, কেউ কেউ নিজেদের প্রত্যাহার করেন। বাকিরা অবশ্য নির্বাচনের পক্ষেই অবস্থান নেন।
বাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাসী শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের দল দ্য সোশ্যালিস্ট ডেমোক্রেটিক পার্টি গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ ঘোষণার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে এসসিএএফের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তাঁরা। বৈঠক প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে দলের প্রধান মোহামেদ আবু আল-ঘার বলেন, 'মানুষের জীবন এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই জুয়া খেলায় অংশ নেব না আমরা। বিক্ষোভকারীদের ন্যায়সংগত দাবি থেকে মানুষের মনোযোগ অন্য দিকে সরানোর জন্য এ নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে।'
অনেক উদারপন্থী আবার বিপ্লবকে সমর্থন করলেও পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। প্রখ্যাত ব্লগার মাহমুদ সেলিম (৩০) তেমনই একজন। ফ্রি ইজিপশিয়ান পার্টির ব্যানারে নির্বাচন করছেন তিনি। জানালেন, কায়রোতে গত শনিবার বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। তবে নির্বাচন বর্জন করবেন না। তিনি মনে করেন, প্রকৃত পরিবর্তন আনার সবচেয়ে ভালো পথ এটিই। তা ছাড়া তিনি অংশ না নিলে ওই আসনে খুব সহজেই মুসলিম ব্রাদারহুড বা এনডিপির কোনো প্রার্থী জিতে যাবেন। তিনি বলেন, 'নির্বাচন এখন জনগণের দাবি। তাহরির স্কয়ারে যারা বিক্ষোভ করছে এবং এসসিএএফের অধীনে নির্বাচন বাতিলের দাবি করছে, তারা এ বার্তা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পেঁৗছে দিতে পারেনি।'
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ওয়ালিদ কাজ্জিহা বললেন, 'উদারপন্থীরা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কেননা বৃহত্তর পরিসরে নির্বাচন একটি বিতর্কিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তাদের জন্য নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ এখন নেই। সমাজে সেনা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে বিভক্তি রয়েছে এবং নির্বাচন এর ইতি ঘটাতে পারবে না। নতুন প্রধানমন্ত্রীর বয়স ৭৮। তিনি বা বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচিত পার্লামেন্ট তরুণদের নতুন কী বার্তা শোনাতে পারবে?' তিনি বলেন, 'সেলিমের মতো উদারপন্থীরা বিপ্লবের মূল বিষয়টিই ধরতে পারেননি। আমরা কোনো রাজনৈতিক দল বা সামরিক বাহিনী বা মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। আমাদের যুদ্ধ একটি কাঠামোর বিরুদ্ধে। এ বিষয়টিই হয়তো উদারপন্থীরা বুঝতে পারছেন না। ফলে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।' মত ও পথের এ বিভক্তিকেই তাঁদের সাফল্যের পথে মূল অন্তরায় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
এ দলগুলো সম্পর্কে মানবাধিকারকর্মী খালিদ আবদেল্লাহ বলেন, 'তাঁরা দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন। কিন্তু মনমতো সাড়া পাচ্ছেন না। (মুবারক বিরোধী) বিপ্লবে নিজেদের ভূমিকার কথা বলছেন তাঁরা, অথচ তাঁদের মধ্যে খুব কম লোকই ওই বিপ্লবের অন্তর্নিহিত অর্থ বোঝে। ওই বিপ্লবের মতাদর্শের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মানুষও তাদের ভেতর খুব বেশি নেই।' আবদেল্লাহ জানান, উদারপন্থী দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চলমান সংকটের ব্যাপারে অনেকটাই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। শুরুতে নির্বাচনে আগ্রহী ছিলেন সবাই। তারপর এসসিএএফ খসড়া সংবিধানে সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক প্রশাসনের নজরদারি থেকে বিরত রাখার প্রস্তাব দিলে গত সপ্তাহ থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু হয়। ধীরগতিতে সংস্কারের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ছিল। গত সপ্তাহ থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বিভক্তি তৈরি হয়। অনেকেই সাময়িকভাবে প্রচার থেকে বিরত থাকেন, কেউ কেউ নিজেদের প্রত্যাহার করেন। বাকিরা অবশ্য নির্বাচনের পক্ষেই অবস্থান নেন।
বাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাসী শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের দল দ্য সোশ্যালিস্ট ডেমোক্রেটিক পার্টি গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ ঘোষণার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে এসসিএএফের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তাঁরা। বৈঠক প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে দলের প্রধান মোহামেদ আবু আল-ঘার বলেন, 'মানুষের জীবন এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই জুয়া খেলায় অংশ নেব না আমরা। বিক্ষোভকারীদের ন্যায়সংগত দাবি থেকে মানুষের মনোযোগ অন্য দিকে সরানোর জন্য এ নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে।'
অনেক উদারপন্থী আবার বিপ্লবকে সমর্থন করলেও পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। প্রখ্যাত ব্লগার মাহমুদ সেলিম (৩০) তেমনই একজন। ফ্রি ইজিপশিয়ান পার্টির ব্যানারে নির্বাচন করছেন তিনি। জানালেন, কায়রোতে গত শনিবার বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। তবে নির্বাচন বর্জন করবেন না। তিনি মনে করেন, প্রকৃত পরিবর্তন আনার সবচেয়ে ভালো পথ এটিই। তা ছাড়া তিনি অংশ না নিলে ওই আসনে খুব সহজেই মুসলিম ব্রাদারহুড বা এনডিপির কোনো প্রার্থী জিতে যাবেন। তিনি বলেন, 'নির্বাচন এখন জনগণের দাবি। তাহরির স্কয়ারে যারা বিক্ষোভ করছে এবং এসসিএএফের অধীনে নির্বাচন বাতিলের দাবি করছে, তারা এ বার্তা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পেঁৗছে দিতে পারেনি।'
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ওয়ালিদ কাজ্জিহা বললেন, 'উদারপন্থীরা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কেননা বৃহত্তর পরিসরে নির্বাচন একটি বিতর্কিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তাদের জন্য নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ এখন নেই। সমাজে সেনা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে বিভক্তি রয়েছে এবং নির্বাচন এর ইতি ঘটাতে পারবে না। নতুন প্রধানমন্ত্রীর বয়স ৭৮। তিনি বা বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচিত পার্লামেন্ট তরুণদের নতুন কী বার্তা শোনাতে পারবে?' তিনি বলেন, 'সেলিমের মতো উদারপন্থীরা বিপ্লবের মূল বিষয়টিই ধরতে পারেননি। আমরা কোনো রাজনৈতিক দল বা সামরিক বাহিনী বা মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। আমাদের যুদ্ধ একটি কাঠামোর বিরুদ্ধে। এ বিষয়টিই হয়তো উদারপন্থীরা বুঝতে পারছেন না। ফলে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।' মত ও পথের এ বিভক্তিকেই তাঁদের সাফল্যের পথে মূল অন্তরায় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
No comments