পানির রঙ বদলে যায় যে দ্বীপের
ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে আরব সাগরের বুকে জেগে আছে অসংখ্য দ্বীপ। সেগুলোর একটি লাক্ষা। মোট ৩৬টি দ্বীপ রয়েছে এ সাগরে, যার মধ্যে ১১টিতে আছে জনবসতি। পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি আছে এর মধ্যে মাত্র ছয়টিতে। এর তিনটি হলো, কাভারাত্তি, কালপেনি আর মিনিকয়। লাক্ষাদ্বীপ একটি প্রবাল দ্বীপপুঞ্জ। সাগরজলে দেখা মেলে হাজার হাজার রঙবেরঙের প্রবাল। দ্বীপগুলোকে ঘিরে আছে পান্না-সবুজ রঙের লেগুন। কাভারাত্তি দ্বীপটি
লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসনিক সদর। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনবদ্য। এখানে সমুদ্রের যেন এক অন্য রূপ। আরব সাগরের এ অংশ খুব শান্ত। ঢেউয়ের আনাগোনা নেই। সূর্যের আলো পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের পানিও মিনিটে মিনিটে বদলে যায়! সৈকতের বালির রঙ পুরো সাদা। সমুদ্রের ধার ঘেঁষে আছে সারি সারি নারিকেল গাছ। গ্রামসহ পুরো দ্বীপটিই প্রায় নারিকেল গাছে ঢাকা। সাগরের পানিতে ইচ্ছেমতো স্নান কিংবা কায়াক রাইডে অংশ নেওয়া যায়। গ্গ্নাস বটম বোটে চেপে দেখে নেওয়া যায় সাগরজলের গভীরে প্রবাল সাম্রাজ্য। সৈকতের আশপাশে আছে রিসোর্ট। কালপেনি দ্বীপের একদিকে অবশ্য লেগুন আর বাকি দিকগুলো সাগর-ঘেরা। দ্বীপের যে অংশে প্রবালের সংখ্যা বেশি, সেই অংশে সমুদ্রের পানি শান্ত থাকে। এখানে জলের রঙ এতটাই স্বচ্ছ যে, ওপর থেকে পানির নিচের সব কিছু স্পষ্ট দেখা যায়। স্নরকেলিং করে দেখা যায় পানির নিচের আশ্চর্য দুনিয়া। জিপে করে ঘুরে দেখা যায় গোটা গ্রাম। লাক্ষাদ্বীপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ মিনিকয়। এখানে পানির অনেক গভীরে স্কুবা ডাইভিং করে দেখে নেওয়া যায় লক্ষাধিক বছরের পুরনো প্রবাল। তবে এক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। এখানে আছে টুনা মাছের প্রসেসিং ইউনিট। এ মাছের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। অন্য দ্বীপের বাসিন্দারা মালয়ালম ভাষায় কথা বললেও এ দ্বীপের নিজস্ব ভাষা মাহি। দ্বীপটির একমাত্র লাইটহাউজ পর্যটকদের কাছে বেশ প্রিয়। ২১৮টি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়। এ কারণে অনেকেই সেখানে না উঠে সাদা বালির সৈকতে হেঁটেই উপভোগ করেন মিনিকয়ের সৌন্দর্য। লাইটহাউজটি নির্মাণ করা হয় ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে। ভেতরে সাজানো আছে অতীতে ব্যবহৃত নানা ধরনের লণ্ঠন।
ফয়সাল আহমেদ
ফয়সাল আহমেদ
No comments