মেয়র লোকমান হত্যাকাণ্ড-আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি পুলিশ নিয়ে পরিবারের প্রশ্ন

রসিংদীর পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেনের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গতকাল রবিবার দুপুর ১২টায় শহরের বাসাইলে মেয়রের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ দাবি জানান। সেই সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তার সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে লোকমানের পরিবার।


সংবাদ সম্মেলনে লোকমানের মা মাজেদা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান নিহত মেয়রের ছোট ভাই নরসিংদী সরকারি কলেজের ভিপি ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ। এতে মাজেদা বেগম বলেন, '১৯৯৩ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে বড় ছেলে লোকমান হোসেন পরিবারের সবার দেখাশোনা করত। আজ আমি প্রিয় সন্তানকে হারিয়েছি, পুত্রবধূ অকালে বিধবা হয়েছে, সন্তানরা হারিয়েছে ভাইকে, লোকমানের অবুঝ দুই শিশু সন্তান হারিয়েছে তাদের বাবাকে। ফলে আমরা সবাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমাদের সবার একটাই চাওয়া, খুনিদের বিচার।'
লিখিত বক্তব্যে লোকমানের মা আরো বলেন, 'নরসিংদী জেলাবাসী তথা সমগ্র দেশবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করবেন। আর মামলার তদন্তে কোনো প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপ থাকবে না। আমাদের পরিবার থেকে এ মুহূর্তে কেউ নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না। সবার আগে আমরা খুনিদের বিচার চাই। আর এজাহারভুক্ত সব আসামির দ্রুত গ্রেপ্তার দেখতে চাই।'
সংবাদ সম্মেলনে শামীম নেওয়াজ বলেন, 'পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, আমাদের হাতে যেসব প্রমাণ রয়েছে, তা মিলিয়েই আমরা মামলা করেছি। কে দোষী, কে নির্দোষ, সেই রায় তো আদালত দেবে, পুলিশ নয়। পুলিশের কাজ দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও মামলার চার্জশিট দেওয়া। তাই ঘটনার প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা আশাহত।'
শামীম বলেন, 'লোকমান ভাই একাধিক জনসভায় বলে গেছেন, মামলা করে নির্বাচন বন্ধ করার ষড়যন্ত্রই করছে না তারা, আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রও করছে। তারা আমাকে খুন করার জন্য পৌরসভার সামনে হামলা চালিয়েছে, একাধিক স্থানে হামলার চেষ্টা করেছে। তারা চেষ্টা করছে আমাকে মেরে ফেলার জন্য। যিনি আজকে খুন হয়েছেন, তাঁর এসব কথা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের সঙ্গে পুলিশের নেওয়া উচিত।'
সংবাদ সম্মেলনে শোকাহত মাজেদা বেগম ছেলে লোকমান হোসেনকে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান উল্লেখ করে বলেন, 'যারা তাকে নির্দয়ভাবে গুলি করে মেরেছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের বিচার চাই।' এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মামলার বাদী ও নিহত মেয়রের ছোট ভাই কামরুজ্জামান এবং নিহত মেয়রের স্ত্রী তামান্না নুসরাত বুবলী। সংবাদ সম্মেলনে নিহত লোকমানের ছোট দুই ভাই খলিলুর রহমান ও শাহীন নেওয়াজসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.