বিএনপির চিঠির জবাব-সেনা মোতায়েন না করা ও ইভিএম ব্যবহারে ইসি অনড়

নির্বাচন কমিশন (ইসি) কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার এবং সেনা মোতায়েন না করার সিদ্ধান্তে অনড়। নিজেদের এ অবস্থানের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে গতকাল রবিবার প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চিঠির জবাব দিয়েছে ইসি।নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক স্বাক্ষরিত চিঠিটি গতকাল পত্রবাহকের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিশন সচিবালয়ের


সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।গত ২২ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লেখা চিঠিতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করা এবং সেনা মোতায়েনের দাবি জানান। চিঠিতে বলা হয়, 'অবাধ, নিরপেক্ষ, সবার অংশগ্রহণ ও প্রতিযোগিতামূলক একটি যথার্থ এবং অর্থবহ নির্বাচন নিশ্চিত করার স্বার্থে অবিলম্বে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগ করা এবং বিতর্কিত ও প্রত্যাখ্যাত ইভিএম ব্যবহার না করার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় জনগণ এ নির্বাচনী প্রহসন বর্জন করলে, তার অনিবার্য পরিণতির দায়ভার আপনাকে বহন করতে হবে।'
নির্বাচন কমিশনের জবাবি চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের মত নিয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মতামত আসে। ইভিএমের মাধ্যমে চট্টগ্রমে প্রথমবারের মতো একটি ওয়ার্ডে এবং নারায়ণগঞ্জে ৯টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ভোটাররা অত্যন্ত সাবলীলভাবে ইভিএমের মাধ্যমে তাঁদের রায় দিয়েছেন। প্রিসাইডিং অফিসাররাও ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ভোটকেন্দ্রের ফল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে সক্ষম হন। চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটার, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমসহ নির্বাচন-সংশ্লিষ্টরা সবাই ইভিএম ব্যবহারের প্রশংসা করে সব নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে অভিমত প্রকাশ করেছেন। বিএনপির আপত্তির বিষয়টি সমাধানকল্পে চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, তাদের কারিগরি প্রতিনিধির সঙ্গে কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের আলোচনা অনুষ্ঠানের জন্য কমিশন সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
সেনাবাহিনী নিয়োগ ইস্যুতে বলা হয়েছে, 'নির্বাচনের সময় কোথায়, কখন, কিভাবে সেনা মোতায়েন হবে_তা নির্ধারণ করা হয় নিরাপত্তার স্তর, পরিস্থিতি ও পরিধির প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণের পর, যার এখতিয়ার কমিশনের। স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রার্থীরা এ বিষয়ে মতামত দিতে পারেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কমিশনের। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না মর্মে কমিশন ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের মতো কোনো পরিস্থিতি বিরাজমান নেই।' নির্বাচন কমিশনের এ চিঠিতে কুমিল্লা সিটির নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে বিএনপির সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ৫ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুসারে এ নির্বাচনে দেশে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণভাবে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে। আর সেনা মোতায়েন না হওয়ার বিষয়টি তফসিল ঘোষণার দিনই জানিয়ে দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

No comments

Powered by Blogger.