ঢাবির 'গ' ইউনিটে ভর্তি জটিলতা শুধু সুনামে কালিমা নয় ক্ষতি ৫০ লাখ টাকা by মাসুম বিল্লাহ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) 'গ' ইউনিটে ভর্তি জটিলতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবোজ্জ্বল সুনামে কালিমা লেপনের পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে ৫০ লক্ষাধিক টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া বরাদ্দের বাইরে খরচ হলে সে অর্থ অনুষদকে জোগাড় করতে হবে অন্য খাত থেকে। এ ক্ষেত্রে অনুষদকে অতিরিক্ত টাকা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিন। অন্যদিকে সচেতন শিক্ষক সমাজ ও ছাত্রদের দাবি, যেসব


শিক্ষকের অবহেলার কারণে ভর্তি জটিলতা হয়েছে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
সূত্র জানায়, 'গ' ইউনিটের প্রশ্নপত্র তৈরি, প্রশ্ন তৈরিতে ভর্তি কমিটির ভাতা, তার মূল্যায়ন, পরীক্ষা গ্রহণকালে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাতাসহ বিভিন্ন কাজে ৫০ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। যা ব্যয় করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় বাজেট থেকে বরাদ্দ দেওয়া ৭৮ লাখ টাকা থেকে। ফের পরীক্ষা নেওয়ার সময় সমপরিমাণ অর্থ আবারও খরচ হবে।
আশরাফ উদ্দিন বলেন, 'অর্থবছরের শুরুতে আমরা পরীক্ষা সংক্রান্ত খাতে নির্দিষ্ট টাকা অনুষদকে দিই। যা অনুষদের নামে ব্যাংকে জমা হয়। তারা সেখান থেকে খরচ করে। বছর শেষে খরচের হিসাব আমাদের কাছে আসে।' তিনি বলেন, আমাদের দেওয়া টাকার সবগুলো খরচ হয় না। এ বছর দু'বার পরীক্ষা নেওয়া হলে সে খরচ তারা অন্য খাত থেকে পুষিয়ে নেবে।
দ্বিতীয়বার পরীক্ষা খরচের উৎস জানতে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ও ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র অধ্যাপক সমকালকে বলেন, 'শিক্ষকদের অবহেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আগে স্বচ্ছতার জন্য ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা উদাহরণ হয়ে ছিল। এখন তা ধুলোয় মিশে গেছে। পুনঃপরীক্ষার খরচও হবে আগের সমপরিমাণ। তাই দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ আদায় করা হোক।'
শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসাইন বলেন, 'এগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা নয়, এটা সাধারণ মানুষের শ্রমে-ঘামে কষ্টার্জিত টাকা। যাদের অবহেলায় এসব ক্ষতি হচ্ছে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হোক। যেহেতু তারা সাধারণ মানুষের টাকা ক্ষতি করেছে, সেহেতু গণমাধ্যমের সাহায্যে সাধারণ মানুষের কাছে দোষীদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তদন্ত কমিটি নির্ধারিত সময় শেষে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের আলোকে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
গত ২৮ অক্টোবর 'গ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ৩১ অক্টোবর ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রশ্নপত্রে ব্যাপক ভুলের অভিযোগ ওঠায় ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করা হয়। এতে উত্তীর্ণের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়ে যায়। পুনঃপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৯ ডিসেম্বর। ফের ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ২২ নভেম্বর ১২ জন ভর্তিচ্ছুর করা রিটের আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে আজ সোমবার।

No comments

Powered by Blogger.