কৃপণ তিতলী বেগম
তিতলী বেগম দোকানদারকে ফুলকপি দেখিয়ে বললেন, 'একটা ফুলকপির দাম ত্রিশ টাকা! কী বলো মিয়া? পাঁচ টাকায় দিবা?' পাঁচ টাকার কথা শুনে দোকানদার কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন, 'এই টাকায় ফুলকপি খাওয়া লাগবে না। ফুলের দোকান থেকে গেন্দা ফুল কিনে ভাজি করে খান।' দোকানদারের কথা শুনে তিতলী বেগমের মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। ঠিক এই সময় এলো ফোনটা। তিতলী বেগম রিসিভ করলেন। তিন সেকেন্ড কথা শুনলেন।
তারপর এক চিৎকার দিয়ে বাড়ির দিকে দৌড় দিলেন।তিতলী বেগমের স্বামী লেকু মিয়া বাসার মেঝেতে পড়ে আছেন। একটু আগে কাপড় আয়রন করতে গিয়ে তিনি বড় ধরনের ইলেকট্রিক শক খেয়েছেন। সেই থেকে জ্ঞান নেই। তিতলী বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে লেকু মিয়ার পাশে বসে আছেন। তাদের একমাত্র ছেলে জব্বর মিয়া বাবার মাথায় সমানে পানি ঢেলে যাচ্ছে। পানি ঢালায় খুব একটা উপকার হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রতিবেশী এক ভদ্রলোক পরামর্শ দিতে এগিয়ে এলেন, 'বাবা জব্বর, মাথায় পানি ঢালা জ্বরের জন্য উপকারী। কারেন্টে শক খাইলে ভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া লাগে। এই রোগের চিকিৎসা হইল মাইর। সারা শরীরে সেগুন কাঠের তক্তা দিয়া চিপা মাইর দিলে হাফ ঘণ্টার মধ্যে জ্ঞান আসবে। পানি ঢালা বন্ধ কইরা মাইর শুরু করো। যত তাড়াতাড়ি মাইর শুরু করবা, রোগীর জন্য ততই উপকার।' পাশে দাঁড়ানো জনৈক মুরবি্ব এই পরামর্শের সঙ্গে একমত হতে পারলেন না। তিনি বললেন, 'শক খাওয়া রোগীকে মাইর দিতে হবে কেন? মাইর লাগে জিন-ভূতে ধরলে। কারেন্টের রোগীর জন্য দরকার চামড়ার জুতা। চায়না জুতা হইলে হবে না। অরিজিনাল দেশি চামড়ার জুতা রোগীর নাকে ধরলে জুতার গন্ধে পাঁচ মিনিটের মধ্যে রোগীর জ্ঞান আসতে বাধ্য।'
মুরবি্বর কথা শেষ হতে না হতেই উপস্থিত জনৈক ভদ্রলোক বললেন, 'এইটা কী বললেন চাচা মিয়া! চামড়ার জুতা দিয়া মৃগির চিকিৎসা চলে, এইটা তো কারেন্টের কেস। এখানে জুতা-মোজার কারবার নাই। এখানে যেটা দরকার সেটা হলো অরিজিনাল জোকের তেল। এক শিশি জোকের তেল আনতে হবে। শিশির অর্ধেকটা রোগীর মুখে ঢেলে দিয়ে বাকি অর্ধেক সারাশরীরে মর্দন করলে তাৎক্ষণিক ফল পাওয়া যাবে।'
এরই মধ্যে লেকু মিয়ার জ্ঞান ফিরে এলো। মাথার কাছে বউকে দেখে অস্পষ্ট স্বরে বললেন, 'আমার কী হইছে জব্বরের মা?' স্বামীর মুখে কথা শুনে তিতলী বেগম হুঙ্কার দিয়ে বললেন, 'কাইলকা কারেন্টের দাম বাড়াইছে আর আইজকাই তোমার শক খাওনের দরকার হইল! বলি শক খাওনের এত ইচ্ছা হইলে দুইটা দিন আগে খাইতা। তাইলে অন্তত কয়ডা টাকা কম বিল দেওন লাগত। যত্তসব বেবুঝের দল কুনহানকার।'
মুরবি্বর কথা শেষ হতে না হতেই উপস্থিত জনৈক ভদ্রলোক বললেন, 'এইটা কী বললেন চাচা মিয়া! চামড়ার জুতা দিয়া মৃগির চিকিৎসা চলে, এইটা তো কারেন্টের কেস। এখানে জুতা-মোজার কারবার নাই। এখানে যেটা দরকার সেটা হলো অরিজিনাল জোকের তেল। এক শিশি জোকের তেল আনতে হবে। শিশির অর্ধেকটা রোগীর মুখে ঢেলে দিয়ে বাকি অর্ধেক সারাশরীরে মর্দন করলে তাৎক্ষণিক ফল পাওয়া যাবে।'
এরই মধ্যে লেকু মিয়ার জ্ঞান ফিরে এলো। মাথার কাছে বউকে দেখে অস্পষ্ট স্বরে বললেন, 'আমার কী হইছে জব্বরের মা?' স্বামীর মুখে কথা শুনে তিতলী বেগম হুঙ্কার দিয়ে বললেন, 'কাইলকা কারেন্টের দাম বাড়াইছে আর আইজকাই তোমার শক খাওনের দরকার হইল! বলি শক খাওনের এত ইচ্ছা হইলে দুইটা দিন আগে খাইতা। তাইলে অন্তত কয়ডা টাকা কম বিল দেওন লাগত। যত্তসব বেবুঝের দল কুনহানকার।'
No comments