কয়েক জনের অবরোধে ভোগান্তিতে লাখো মানুষ
সকাল
৭টা। ব্যস্ত শাহবাগ মোড়ের সড়কে শুয়ে ছিলেন ৫ যুবক। সরকারি চাকরিতে ৩০
শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবিতে তাদের অবস্থান। পাঁচ জনের অবস্থানে
চারপাশের সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ব্যস্ত সড়ক
দিয়ে আসা হাজারো যানবাহনকে ডাইভারসন করে দেয় পুলিশ। এতে আশপাশের সড়কে দেখা
দেয় যানজট। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল
বিশ্ববিদ্যালয়, বারডেম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা রোগী এবং তাদের
স্বজনদের পড়তে হয় দুর্ভোগে। সকাল ১০টা পর্যন্ত এই পাঁচ যুবক সড়কে ছিলেন।
যানবাহনও চলেনি সড়কে। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের যানবাহনকে ডাইভারসন করতে দেখা গেলেও যুবকদের সরাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। দশটার দিকে অবস্থানকারীরা সরে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু করে। বেলা একটার পর আন্দোলনকারীদের ২০ থেকে ২৫ জন ফের সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরো ২০ থেকে ২৫ জন।
এরপর থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে আর যানবাহন চলেনি রাত পর্যন্ত। এতে পুরো এলাকায় যানজট দেখা দেয়। ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী লাখ লাখ মানুষকে পড়তে হয় দুর্ভোগে। গতকালের অবরোধে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এর সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদও যোগ দেয়। সকাল থেকে সড়ক অবরোধ থাকায় সায়েন্সল্যাব, বাটা সিগন্যাল থেকে আসা যানবাহনগুলো সবই বন্ধ ছিল। তবে মাঝে ১০টা থেকে কিছু সময় যানচলাচল শুরু হলেও দুপুরের দিকে আবারো আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও রাস্তা না ছাড়ায় ওই সড়কটির কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। অন্যদিকে কাওরান বাজার থেকে গুলিস্তান যাওয়ার সড়কও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় থেকে ডাইভারসন করে দেয় পুলিশ। ফলে এদিক থেকে যাওয়া যানবাহনগুলোর দীর্ঘ জটলা সৃষ্টি হয়। শাহবাগের এ রাস্তাটিতে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে সড়কটিতে তিনটি হাসপাতাল থাকায় এখানে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন অনেকে। আবার কাউকে ফার্মগেট পর্যন্ত এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পায়ের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা জাহানারা বেগম জানান, গাজীপুর থেকে ডাক্তার দেখাতে আসছি। কিন্তু এখন বাসায় যাইতে পারতেসি না। ওইদিক থেকে সব গাড়ি বন্ধ।
ঢাকায়ও থাকার মতো জায়গা নেই। সুব্রত নামের একজন কচুক্ষেত থেকে এসেছেন। তিনি হাঁপানিসহ বেশ কিছু রোগে ভুগছেন। সুব্রত বলেন, সকাল বেলায় অনেক কষ্ট করে আসছি। এদিকে রাস্তা বন্ধ থাকায় তেজগাঁও পর্যন্ত যানজট লেগে যায়। সেখান থেকে কয়েকবার রাস্তা বদল করে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসছি। এখন বাসায় ফিরবো, কিন্তু কোনো যানবাহন নেই। এই শরীর নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েও থাকতে পারছি না। অপারেশন শেষে খিলগাঁওয়ে বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে ফিরবেন নাজিম উদ্দিন নামের একজন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা কেমন কথা! যখন তখন এ দেশে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। মানুষ মরলেও কারও কোনো খবর থাকবে না। আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাবো? ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন শামসুজ্জামান নামের আরেক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমি হার্টের রোগী। বাসা যাত্রাবাড়ীতে। শরীরের কি অবস্থা যাচ্ছে আমি বুঝছি। কিন্তু কোনো সিএনজি বা বাস পাচ্ছি না এক ঘণ্টা ধরে। এ অবস্থায় কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার স্ত্রী সঙ্গে এসেছে। সে অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কোনো কিছু ম্যানেজ করতে পারছে না। শুধু হাসপাতালের রোগী নন, ব্যস্ততম সড়ক হয়ে যাওয়া আসা করেন ঢাকার কর্মজীবী মানুষের একটি বড় অংশ। ঢাকার উত্তর দক্ষিণ ও পূর্ব পশ্চিমের সবচেয়ে বড় সংযোগস্থল শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ থাকায় কর্মজীবী মানুষদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
আশপাশের সড়কে যানজট তৈরি হওয়ায় তা ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে অনেক রাস্তায়।
এদিকে শনিবার লাগাতার অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও গতকাল আন্দোলনকারীরা কর্মসূচির পরিবর্তন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, আজ থেকে বিকাল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন জানান, আমাদের ছয় দফা দাবি। দাবিগুলো হলো- ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তির বিচার, মুক্তিযোদ্ধা পারিবারিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাড়িতে হামলার বিচার, প্রশাসনে রাজাকার ও রাজাকারদের সন্তানদের তালিকা করে বরখাস্ত করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান। তিনি জানান, যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হবে, তত দিন পর্যন্ত শাহবাগে প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি ও সারা বাংলাদেশে একই কর্মসূচি পালিত হবে।
যানবাহনও চলেনি সড়কে। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের যানবাহনকে ডাইভারসন করতে দেখা গেলেও যুবকদের সরাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। দশটার দিকে অবস্থানকারীরা সরে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু করে। বেলা একটার পর আন্দোলনকারীদের ২০ থেকে ২৫ জন ফের সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরো ২০ থেকে ২৫ জন।
এরপর থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে আর যানবাহন চলেনি রাত পর্যন্ত। এতে পুরো এলাকায় যানজট দেখা দেয়। ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী লাখ লাখ মানুষকে পড়তে হয় দুর্ভোগে। গতকালের অবরোধে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এর সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদও যোগ দেয়। সকাল থেকে সড়ক অবরোধ থাকায় সায়েন্সল্যাব, বাটা সিগন্যাল থেকে আসা যানবাহনগুলো সবই বন্ধ ছিল। তবে মাঝে ১০টা থেকে কিছু সময় যানচলাচল শুরু হলেও দুপুরের দিকে আবারো আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও রাস্তা না ছাড়ায় ওই সড়কটির কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। অন্যদিকে কাওরান বাজার থেকে গুলিস্তান যাওয়ার সড়কও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় থেকে ডাইভারসন করে দেয় পুলিশ। ফলে এদিক থেকে যাওয়া যানবাহনগুলোর দীর্ঘ জটলা সৃষ্টি হয়। শাহবাগের এ রাস্তাটিতে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে সড়কটিতে তিনটি হাসপাতাল থাকায় এখানে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন অনেকে। আবার কাউকে ফার্মগেট পর্যন্ত এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পায়ের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা জাহানারা বেগম জানান, গাজীপুর থেকে ডাক্তার দেখাতে আসছি। কিন্তু এখন বাসায় যাইতে পারতেসি না। ওইদিক থেকে সব গাড়ি বন্ধ।
ঢাকায়ও থাকার মতো জায়গা নেই। সুব্রত নামের একজন কচুক্ষেত থেকে এসেছেন। তিনি হাঁপানিসহ বেশ কিছু রোগে ভুগছেন। সুব্রত বলেন, সকাল বেলায় অনেক কষ্ট করে আসছি। এদিকে রাস্তা বন্ধ থাকায় তেজগাঁও পর্যন্ত যানজট লেগে যায়। সেখান থেকে কয়েকবার রাস্তা বদল করে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসছি। এখন বাসায় ফিরবো, কিন্তু কোনো যানবাহন নেই। এই শরীর নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েও থাকতে পারছি না। অপারেশন শেষে খিলগাঁওয়ে বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে ফিরবেন নাজিম উদ্দিন নামের একজন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা কেমন কথা! যখন তখন এ দেশে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। মানুষ মরলেও কারও কোনো খবর থাকবে না। আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাবো? ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন শামসুজ্জামান নামের আরেক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমি হার্টের রোগী। বাসা যাত্রাবাড়ীতে। শরীরের কি অবস্থা যাচ্ছে আমি বুঝছি। কিন্তু কোনো সিএনজি বা বাস পাচ্ছি না এক ঘণ্টা ধরে। এ অবস্থায় কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার স্ত্রী সঙ্গে এসেছে। সে অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কোনো কিছু ম্যানেজ করতে পারছে না। শুধু হাসপাতালের রোগী নন, ব্যস্ততম সড়ক হয়ে যাওয়া আসা করেন ঢাকার কর্মজীবী মানুষের একটি বড় অংশ। ঢাকার উত্তর দক্ষিণ ও পূর্ব পশ্চিমের সবচেয়ে বড় সংযোগস্থল শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ থাকায় কর্মজীবী মানুষদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
আশপাশের সড়কে যানজট তৈরি হওয়ায় তা ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে অনেক রাস্তায়।
এদিকে শনিবার লাগাতার অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও গতকাল আন্দোলনকারীরা কর্মসূচির পরিবর্তন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, আজ থেকে বিকাল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন জানান, আমাদের ছয় দফা দাবি। দাবিগুলো হলো- ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তির বিচার, মুক্তিযোদ্ধা পারিবারিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাড়িতে হামলার বিচার, প্রশাসনে রাজাকার ও রাজাকারদের সন্তানদের তালিকা করে বরখাস্ত করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান। তিনি জানান, যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হবে, তত দিন পর্যন্ত শাহবাগে প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি ও সারা বাংলাদেশে একই কর্মসূচি পালিত হবে।
No comments