কথিত অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে কি করবে ভারত! by জি সীতারামন
আসামে
নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে বিতর্ক কিছুতেই দমছে না। নাগরিকপঞ্জি
নির্ধারণের উদ্দেশ্যই হলো অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করা। বলা হয়, এর বেশির
ভাগই বাংলাদেশী। কিন্তু বহু সংখ্যক অভিবাসী আছেন, যারা নেপালি। বিজেপি
সভাপতি অমিত শাহ সম্প্রতি ভারতে অবস্থানরত কথিত বাংলাদেশীদেরকে উইপোকা
হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিজন অবৈধ অভিবাসীকে ভারত
থেকে বের করে দেয়া হবে। এনআরসিতে আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ। তার
মধ্য থেকে ৪০ লাখের আবেদনপত্র খসড়া চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এ
নিয়ে হৃদয়ে প্রদাহের সৃষ্টি হয়েছে।
একই সঙ্গে এ নিয়ে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। যারা এনআরসিতে ঠাঁই পান নি তারা নাগরিকত্ব দাবি করে আপত্তি উত্থাপন করার সুযোগ পাবেন। এ প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, যাদের আপিল বাতিল হয়ে যাচ্ছে বা যাবে তাদের কি হবে? তাদেরকে কি ভারত থেকে বের করে দেয়া হবে?
এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে নি কেন্দ্রীয় সরকার। ওদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যাবর্তন চুক্তিও নেই। এমন চুক্তি নেপালের সঙ্গেও নেই ভারতে। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে যারা বিবেচিত হবেন তাদের লড়াইটা হবে দীর্ঘ। এরই প্রেক্ষিতে ইকোনমিক টাইমস ম্যাগাজিন ওইসব ভারতের ওইসব কথিত শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছে। দেখার চেষ্টা করেছে বিশ্বের সঙ্গে ভারতের অবস্থানটা কি। শরণার্থীদের বিষয়ে ভারতের অবস্থান কি?
১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কনভেন অথবা ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে স্বাক্ষরকারী দেশ নয় ভারত। এ দুটি কনভেনশন বা প্রটোকলে শরণার্থীদের অধিকার সুরক্ষিত করা হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার (ইউএনএইচসিআর) বলেছে, শরণার্থীদের সুরক্ষা বিষয়ক কোনো জাতীয় ফ্রেমওয়ার্ক নেই ভারতের। তা সত্ত্বেও তারা প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রেখেছে। তারা আফগানিস্তান ও মিয়ানমার সহ অন্য দেশগুলোর জন্যও ইউএনএইচসিআরের ম্যান্ডেটের প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে।
শরণার্থীদের কিভাবে দেখা হবে সে বিষযে বেশ কিছু আইন আছে। এর মধ্যে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন অব ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৩৯, ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬ ও পাসপোর্ট অ্যাক্ট ১৯৬৭। কেন্দ্রীয় সরকার সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ১৯৫৫ সংশোধনের চেষ্টা করছে। এই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কথিত অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। তবে সবাইকে নয়। যারা এ দেশগুলোর হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন ও পারসি সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু শুধু তাদেরকেই এমন সুবিধা দেয়া হবে। প্রস্তাবিত আইনটিতে মুসলিমদের মধ্যকার নির্যাতিতদের ধরা হয় নি।
বৌদ্ধ উপজাতি চাকমা এবং হিন্দু উপজাতি হাজংরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে অভিবাসী হয়েছেন ১৯৬৪-৬৯ সালের মধ্যে। তাদের মধ্য থেকে ১৪৮৮৮ জন বসতি গড়েছেন বর্তমানের অরুণাচল প্রদেশে। তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের বিরোধিতা করছেন তারা। কিন্তু বৈধ শরণার্থীদের নাগরিকত্বক দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে। ২০১২ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, অরুণাচল প্রদেশে ৫৪৫০০ চাকমা ও হাজং রয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ৬০০০ রয়েছেন অরুণাচলের। রাজ্য সরকার বলছে, চাকমা ও হাজংয়ের সংখ্যা ৬৫৮৫০। এরা ১৯৬৪ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে জন্মেছেন শরণার্থীদের ঔরসে। তারা ভারতীয় নাগরিক।
(অনলাইন দ্য ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
একই সঙ্গে এ নিয়ে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। যারা এনআরসিতে ঠাঁই পান নি তারা নাগরিকত্ব দাবি করে আপত্তি উত্থাপন করার সুযোগ পাবেন। এ প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, যাদের আপিল বাতিল হয়ে যাচ্ছে বা যাবে তাদের কি হবে? তাদেরকে কি ভারত থেকে বের করে দেয়া হবে?
এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে নি কেন্দ্রীয় সরকার। ওদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যাবর্তন চুক্তিও নেই। এমন চুক্তি নেপালের সঙ্গেও নেই ভারতে। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে যারা বিবেচিত হবেন তাদের লড়াইটা হবে দীর্ঘ। এরই প্রেক্ষিতে ইকোনমিক টাইমস ম্যাগাজিন ওইসব ভারতের ওইসব কথিত শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছে। দেখার চেষ্টা করেছে বিশ্বের সঙ্গে ভারতের অবস্থানটা কি। শরণার্থীদের বিষয়ে ভারতের অবস্থান কি?
১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কনভেন অথবা ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে স্বাক্ষরকারী দেশ নয় ভারত। এ দুটি কনভেনশন বা প্রটোকলে শরণার্থীদের অধিকার সুরক্ষিত করা হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার (ইউএনএইচসিআর) বলেছে, শরণার্থীদের সুরক্ষা বিষয়ক কোনো জাতীয় ফ্রেমওয়ার্ক নেই ভারতের। তা সত্ত্বেও তারা প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রেখেছে। তারা আফগানিস্তান ও মিয়ানমার সহ অন্য দেশগুলোর জন্যও ইউএনএইচসিআরের ম্যান্ডেটের প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে।
শরণার্থীদের কিভাবে দেখা হবে সে বিষযে বেশ কিছু আইন আছে। এর মধ্যে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন অব ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৩৯, ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬ ও পাসপোর্ট অ্যাক্ট ১৯৬৭। কেন্দ্রীয় সরকার সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ১৯৫৫ সংশোধনের চেষ্টা করছে। এই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কথিত অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। তবে সবাইকে নয়। যারা এ দেশগুলোর হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন ও পারসি সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু শুধু তাদেরকেই এমন সুবিধা দেয়া হবে। প্রস্তাবিত আইনটিতে মুসলিমদের মধ্যকার নির্যাতিতদের ধরা হয় নি।
বৌদ্ধ উপজাতি চাকমা এবং হিন্দু উপজাতি হাজংরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে অভিবাসী হয়েছেন ১৯৬৪-৬৯ সালের মধ্যে। তাদের মধ্য থেকে ১৪৮৮৮ জন বসতি গড়েছেন বর্তমানের অরুণাচল প্রদেশে। তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের বিরোধিতা করছেন তারা। কিন্তু বৈধ শরণার্থীদের নাগরিকত্বক দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে। ২০১২ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, অরুণাচল প্রদেশে ৫৪৫০০ চাকমা ও হাজং রয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ৬০০০ রয়েছেন অরুণাচলের। রাজ্য সরকার বলছে, চাকমা ও হাজংয়ের সংখ্যা ৬৫৮৫০। এরা ১৯৬৪ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে জন্মেছেন শরণার্থীদের ঔরসে। তারা ভারতীয় নাগরিক।
(অনলাইন দ্য ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
No comments