নতুন নতুন ফ্রন্ট খুলছে
কে
জানে? রাজনীতি হয়তো এমনই। সেই কৌটিল্যের কাল থেকেই। বছর পাঁচেক আগের কথা।
হঠাৎ করেই জামায়াতের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় শাপলা চত্বর। বাধা ছাড়া
রাজপথে নামতে পেরে উল্লাস দেখান দলটির নেতাকর্মীরা। কাদের মোল্লাও
ট্রাইব্যুনালে ‘ভি’ চিহ্ন দেখান। পরে কী হয়েছে তা সবারই জানা। গত এক দশকে
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা একটা চেনা দৃশ্যই।
ক্ষমতাসীনরা বার বার ইস্যু তৈরি করেছে। নতুন নতুন ফ্রন্ট খুলেছে। দিশেহারা বিরোধী শক্তি এর পেছনে ছুটে চলেছে। তাদের অবশ্য খুব বেশি কিছু করার ছিল কি না তা নিয়ে বিতর্ক আছে।
বাংলাদেশের রাজনীতি একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অতিক্রম করছে। সংসদ নির্বাচনের তিন মাসও বাকি নেই। মাঠ অবশ্য ক্ষমতাসীনদের একতরফা দখলে। এই অবস্থাতেও বসে নেই নীতিনির্ধারকরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে মাঠে নামে ছাত্ররা। গ্রেপ্তার, নির্যাতন থেকে শুরু করে হাতুড়িপেটা। ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। যদিও এখন তারা থিতু হওয়ার চেষ্টা করছে। এই অবস্থায় সংস্কার নয়, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাই বাতিল করে দেয়া হয়েছে। কেন বাতিল করা হলো কোটা? অনেক বিশ্লেষকই বিশ্বাস করেন, এর পেছনে অন্য খেলা আছে। এরইমধ্যে কোটা বহালের দাবিতে শাহবাগসহ দেশের বিভিন্নস্থানে অবস্থান, বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশ কোথাও বাধা দেয়নি। এইসব জমায়েতে উপস্থিতি কম হলেও ইশারা পেলে উপস্থিতি যে বহুমাত্রায় বেড়ে যাবে তা কে-না জানে।
কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন, এর মাধ্যমে এক ঢিলে বহু পাখি মারা হতে পারে। নির্বাচন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ইস্যুকে রাজপথে রাখা হতে পারে। আর অন্য কোনো উপায়ে কোটাও ফিরিয়ে আনা হতে পারে। এটা অবশ্য ঠিক যে, অনেক যুক্তিবান ব্যক্তিই মনে করেন, ১৫-২০ ভাগ কোটা এখনো প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী কোটা উঠিয়ে দেয়া কিছুতেই উচিত নয়।
কোটা ইস্যুতেই কী রাজনীতি আটকে থাকবে। কিছুতেই নয়। আরো একাধিক ফ্রন্ট খোলার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় ঘোষণা করা হবে ১০ই অক্টোবর। এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানও আসামি। মামলাটিকে সর্বোচ্চ আলোচনায় আনার চেষ্টা স্পষ্ট। তবে, বিএনপির নীতিনির্ধারকরা চেষ্টা করছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিটি যেন সামনে থাকে সেটা নিশ্চিত করা। যদিও গায়েবি মামলায় দলটির নেতাকর্মীদের এরই মধ্যে জেরবার। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে সহিংসতা সারা দুনিয়ার মানুষই দেখেছে। এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের নিজস্ব ব্যাখ্যা রয়েছে। কিন্তু কর্মসূচি ঘোষণাকারী দল হিসেবে সে সময় বিএনপিকেই দায় নিতে হয়েছে। দলটির নেতাকর্মীরা হয়েছেন আসামি। আন্তর্জাতিক মহল সহিংসতার জন্য সেসময় অত্যন্ত কড়া ভাষায় বিএনপি-জামায়াতকে অভিযুক্ত করে। তবে, এবারের ঘটনাটা বেশ অদ্ভূত। কোনো বিস্ফোরণ নেই, ভাঙচুর নেই। তবুও মামলা হচ্ছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কোনো প্রতিক্রিয়া অবশ্য এখনো চোখে পড়েনি।
ওদিকে, বিরোধী শিবিরের বৃহৎ জোট গঠনের প্রক্রিয়া নানা জটিলতায় এখনো চূড়ান্ত রূপ পায়নি। আজ-কালের মধ্যে ড. কামাল হোসেন দেশে ফেরার পর এ প্রক্রিয়া গতি পেতে পারে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। বৃহৎ ঐক্যের নেতারা একমত হলে বিরোধী দলগুলো সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে। তবে, এ নিয়ে নানামত রয়েছে। ওদিকে, এই ঐক্যপ্রক্রিয়ায় একটি মহল বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই মহলটি জামায়াত ইস্যু বারবার সামনে এনে ঐক্যপ্রক্রিয়া নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। তারা বলছেন, ঐক্যপ্রক্রিয়ায় ৯৯ ভাগ নেতাই এটা মেনে নিয়েছেন যে, জামায়াত বৃহৎ জোটে আসতে পারবে না। তবে, ২০ দলীয় জোটে জামায়াত থাকবে কি থাকবে না- সেটা বিএনপির ব্যাপার। কিন্তু দুই একজন ব্যক্তি বিএনপিকে শর্ত দিয়েছেন যে, বৃহৎ জোটে আসতে হলে বিএনপিকে জামায়াত ত্যাগ করে আসতে হবে। এটা জোট যেন না হয় তার তৎপরতা বলে মনে করেন সম্ভাব্য জোটের কোনো কোনো নেতা। ওদিকে, এই পরিস্থিতিতে নীরব জামায়াত। দলটির নেতারা এ ইস্যুতে মুখ না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে, হেফাজত ফ্রন্টের দিকেও দৃষ্টি রাখতে হচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। ক্ষমতাসীন মহল অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে হেফাজতকে কাছে টানতে সক্ষম হয়েছেন বলে কোনো কোনো পর্যবেক্ষকের মত। হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফী সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। ইসলামী ঐক্যজোটের একটি অংশও সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে। এ অবস্থায় হেফাজতে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। নায়েবে আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী হেফাজতের বর্তমান অবস্থানের সমালোচনা করেছেন।
হেফাজত ভাগ হয়ে যেতে পারে এমন গুঞ্জনও রয়েছে। অতীতে সরকারের হেফাজত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের কেউ কেউ সমালোচনামুখর হলেও এবার অবশ্য তারা নীরব রয়েছেন।
কিছু ফ্রন্টের আভাস পাওয়া গেছে। তবে, আগামী ৮০-৮৫ দিনে নতুন নতুন ফ্রন্টের আবির্ভাব ধারণার চেয়েও বেশি মাত্রায় হতে পারে। কারণ এবারের প্রশ্নটি ক্ষমতার।
ক্ষমতাসীনরা বার বার ইস্যু তৈরি করেছে। নতুন নতুন ফ্রন্ট খুলেছে। দিশেহারা বিরোধী শক্তি এর পেছনে ছুটে চলেছে। তাদের অবশ্য খুব বেশি কিছু করার ছিল কি না তা নিয়ে বিতর্ক আছে।
বাংলাদেশের রাজনীতি একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অতিক্রম করছে। সংসদ নির্বাচনের তিন মাসও বাকি নেই। মাঠ অবশ্য ক্ষমতাসীনদের একতরফা দখলে। এই অবস্থাতেও বসে নেই নীতিনির্ধারকরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে মাঠে নামে ছাত্ররা। গ্রেপ্তার, নির্যাতন থেকে শুরু করে হাতুড়িপেটা। ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। যদিও এখন তারা থিতু হওয়ার চেষ্টা করছে। এই অবস্থায় সংস্কার নয়, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাই বাতিল করে দেয়া হয়েছে। কেন বাতিল করা হলো কোটা? অনেক বিশ্লেষকই বিশ্বাস করেন, এর পেছনে অন্য খেলা আছে। এরইমধ্যে কোটা বহালের দাবিতে শাহবাগসহ দেশের বিভিন্নস্থানে অবস্থান, বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশ কোথাও বাধা দেয়নি। এইসব জমায়েতে উপস্থিতি কম হলেও ইশারা পেলে উপস্থিতি যে বহুমাত্রায় বেড়ে যাবে তা কে-না জানে।
কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন, এর মাধ্যমে এক ঢিলে বহু পাখি মারা হতে পারে। নির্বাচন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ইস্যুকে রাজপথে রাখা হতে পারে। আর অন্য কোনো উপায়ে কোটাও ফিরিয়ে আনা হতে পারে। এটা অবশ্য ঠিক যে, অনেক যুক্তিবান ব্যক্তিই মনে করেন, ১৫-২০ ভাগ কোটা এখনো প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী কোটা উঠিয়ে দেয়া কিছুতেই উচিত নয়।
কোটা ইস্যুতেই কী রাজনীতি আটকে থাকবে। কিছুতেই নয়। আরো একাধিক ফ্রন্ট খোলার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় ঘোষণা করা হবে ১০ই অক্টোবর। এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানও আসামি। মামলাটিকে সর্বোচ্চ আলোচনায় আনার চেষ্টা স্পষ্ট। তবে, বিএনপির নীতিনির্ধারকরা চেষ্টা করছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিটি যেন সামনে থাকে সেটা নিশ্চিত করা। যদিও গায়েবি মামলায় দলটির নেতাকর্মীদের এরই মধ্যে জেরবার। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে সহিংসতা সারা দুনিয়ার মানুষই দেখেছে। এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের নিজস্ব ব্যাখ্যা রয়েছে। কিন্তু কর্মসূচি ঘোষণাকারী দল হিসেবে সে সময় বিএনপিকেই দায় নিতে হয়েছে। দলটির নেতাকর্মীরা হয়েছেন আসামি। আন্তর্জাতিক মহল সহিংসতার জন্য সেসময় অত্যন্ত কড়া ভাষায় বিএনপি-জামায়াতকে অভিযুক্ত করে। তবে, এবারের ঘটনাটা বেশ অদ্ভূত। কোনো বিস্ফোরণ নেই, ভাঙচুর নেই। তবুও মামলা হচ্ছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কোনো প্রতিক্রিয়া অবশ্য এখনো চোখে পড়েনি।
ওদিকে, বিরোধী শিবিরের বৃহৎ জোট গঠনের প্রক্রিয়া নানা জটিলতায় এখনো চূড়ান্ত রূপ পায়নি। আজ-কালের মধ্যে ড. কামাল হোসেন দেশে ফেরার পর এ প্রক্রিয়া গতি পেতে পারে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। বৃহৎ ঐক্যের নেতারা একমত হলে বিরোধী দলগুলো সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে। তবে, এ নিয়ে নানামত রয়েছে। ওদিকে, এই ঐক্যপ্রক্রিয়ায় একটি মহল বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই মহলটি জামায়াত ইস্যু বারবার সামনে এনে ঐক্যপ্রক্রিয়া নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। তারা বলছেন, ঐক্যপ্রক্রিয়ায় ৯৯ ভাগ নেতাই এটা মেনে নিয়েছেন যে, জামায়াত বৃহৎ জোটে আসতে পারবে না। তবে, ২০ দলীয় জোটে জামায়াত থাকবে কি থাকবে না- সেটা বিএনপির ব্যাপার। কিন্তু দুই একজন ব্যক্তি বিএনপিকে শর্ত দিয়েছেন যে, বৃহৎ জোটে আসতে হলে বিএনপিকে জামায়াত ত্যাগ করে আসতে হবে। এটা জোট যেন না হয় তার তৎপরতা বলে মনে করেন সম্ভাব্য জোটের কোনো কোনো নেতা। ওদিকে, এই পরিস্থিতিতে নীরব জামায়াত। দলটির নেতারা এ ইস্যুতে মুখ না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে, হেফাজত ফ্রন্টের দিকেও দৃষ্টি রাখতে হচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। ক্ষমতাসীন মহল অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে হেফাজতকে কাছে টানতে সক্ষম হয়েছেন বলে কোনো কোনো পর্যবেক্ষকের মত। হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফী সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। ইসলামী ঐক্যজোটের একটি অংশও সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে। এ অবস্থায় হেফাজতে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। নায়েবে আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী হেফাজতের বর্তমান অবস্থানের সমালোচনা করেছেন।
হেফাজত ভাগ হয়ে যেতে পারে এমন গুঞ্জনও রয়েছে। অতীতে সরকারের হেফাজত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের কেউ কেউ সমালোচনামুখর হলেও এবার অবশ্য তারা নীরব রয়েছেন।
কিছু ফ্রন্টের আভাস পাওয়া গেছে। তবে, আগামী ৮০-৮৫ দিনে নতুন নতুন ফ্রন্টের আবির্ভাব ধারণার চেয়েও বেশি মাত্রায় হতে পারে। কারণ এবারের প্রশ্নটি ক্ষমতার।
No comments