বাসায় বাসায় মৃত্যুকূপ by শুভ্র দেব
বাসায়
বাসায় তৈরি হচ্ছে মৃত্যুকূপ। বাসায় থাকা বেশির ভাগ রিজার্ভ ও সেপটিক
ট্যাংকি গ্যাস বোমায় পরিণত হয়েছে। এতে করে নিহতের সংখ্যাও বাড়ছে। দীর্ঘদিন
ধরে বদ্ধ অবস্থায় থাকা রিজার্ভ ও সেপটিক ট্যাংকে ধীরে ধীরে গ্যাস তৈরি হয়।
পরিষ্কার বা অন্য কোনো কারণে এসব ট্যাংকির ঢাকনা খুলতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে
পড়তে হয়। এছাড়া গ্যাস লাইন লিকেজ থেকেও দুর্ঘটনা ঘটে। সামান্য ইলেকট্রিক
স্পার্কিং বা আগুনের স্পর্শ পেয়েই বিস্ফোরিত হয়। এতে করে প্রাণহানির মতো
ঘটনা ঘটছে।
গত ১০ বছরে এ ধরনের বিস্ফোরণে অন্তত দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিলসসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তথ্যমতে গত বছরে সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে ১২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালে ১২ জনের মৃত্যু হয়। আর ২০১৪ সালে ১৭, ২০১৫ সালে ৩১, ২০১৬ সালে ৩৩ এবং ২০১৭ সালে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরে সেপটিক ও রিজার্ভ ট্যাংক বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজ, সচেতনতার অভাব, দীর্ঘদিন একই ভাবে ফেলে রেখে দেয়া ও অব্যবস্থাপনাই দায়ী।
গত ২১শে আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের ই-ব্লকের ৪ নম্বর লেনে মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় রিজার্ভ ট্যাংক বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৬ জনসহ মোট নয়জন দগ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে একই পরিবারের ৫ জন নিহত হন। ২৯শে সেপ্টেম্বর মাদারীপুর পৌর শহরের পাকদি এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে দুজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- সিরাজুল মাতব্বর (২৯) ও সুমন মাতব্বর (২২)। পুলিশ জানিয়েছে, সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রথমে সিরাজুল ভেতরে প্রবেশ করেন। অনেক সময় পেরিয়ে গেলে এবং তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন সুমন। পরে দু’জনকেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রিজার্ভ ট্যাংক কিংবা আবদ্ধ কোনো ট্যাংকের খালি জায়গায় গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া আশপাশে থাকা গ্যাসলাইন লিকেজ হয়েও ট্যাংকে গ্যাস জমতে পারে। অন্যদিকে সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে জৈব পদার্থ পচে মিথেন ও হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। জমে থাকা এসব গ্যাস যখন কোনো দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আসে তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। এছাড়া ট্যাংকে তৈরি হতে পারে সালফিউরিক এসিড, যা ওয়াল বা স্লাব ধসের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন পরিষ্কার করা না হলে ট্যাংক গ্যাস চেম্বার বা গ্যাসবোমায় পরিণত হতে পারে। এর বিষক্রিয়া খুবই তীব্র হয়। বদ্ধ ট্যাংকে যে বিষাক্ত গ্যাস জমা হয়, এ বিষয়ে শ্রমিকসহ অনেকেই অজ্ঞ। সাধারণ কিছু নিয়ম মানলেই দুর্ঘটনা রোধ করা যেতে পারে। যেমন, ট্যাংক খোলার পরপরই ভেতরে না ঢোকা। ফ্যানের বাতাস দিয়ে ভেতরের বিষাক্ত গ্যাসকে সহনীয় করে তোলা। ট্যাংক পরিষ্কারের আগে তা পানি দিয়ে পুরোমাত্রায় ভরে দেয়া। এরপর পানি ফেলে দিয়ে ট্যাংক পরিষ্কার করলে আর গ্যাস বিস্ফোরণের ঝুঁকি থাকে না।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সরওয়ার জাহান মানবজমিনকে বলেন, এটি একটি ভয়ঙ্কর ব্যাপার। ঢাকা শহরের লাখ লাখ বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক আছে। এগুলো এক একটি মৃত্যুফাঁদ হয়ে আছে। এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কিন্তু এ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। নেই কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। এটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন সঠিক নিয়ম মেনে তৈরি করা হচ্ছে না। সময়মতো পরিষ্কার করা হয় না। তিনি বলেন, আবার অনেক সময় সেপটিক ট্যাংকের সঙ্গে অন্যান্য লাইন লিকেজ হয়ে মিশে যাওয়াতে দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার।
গত ১০ বছরে এ ধরনের বিস্ফোরণে অন্তত দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিলসসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তথ্যমতে গত বছরে সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে ১২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালে ১২ জনের মৃত্যু হয়। আর ২০১৪ সালে ১৭, ২০১৫ সালে ৩১, ২০১৬ সালে ৩৩ এবং ২০১৭ সালে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরে সেপটিক ও রিজার্ভ ট্যাংক বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজ, সচেতনতার অভাব, দীর্ঘদিন একই ভাবে ফেলে রেখে দেয়া ও অব্যবস্থাপনাই দায়ী।
গত ২১শে আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের ই-ব্লকের ৪ নম্বর লেনে মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় রিজার্ভ ট্যাংক বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৬ জনসহ মোট নয়জন দগ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে একই পরিবারের ৫ জন নিহত হন। ২৯শে সেপ্টেম্বর মাদারীপুর পৌর শহরের পাকদি এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে দুজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- সিরাজুল মাতব্বর (২৯) ও সুমন মাতব্বর (২২)। পুলিশ জানিয়েছে, সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রথমে সিরাজুল ভেতরে প্রবেশ করেন। অনেক সময় পেরিয়ে গেলে এবং তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন সুমন। পরে দু’জনকেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রিজার্ভ ট্যাংক কিংবা আবদ্ধ কোনো ট্যাংকের খালি জায়গায় গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া আশপাশে থাকা গ্যাসলাইন লিকেজ হয়েও ট্যাংকে গ্যাস জমতে পারে। অন্যদিকে সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে জৈব পদার্থ পচে মিথেন ও হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। জমে থাকা এসব গ্যাস যখন কোনো দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আসে তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। এছাড়া ট্যাংকে তৈরি হতে পারে সালফিউরিক এসিড, যা ওয়াল বা স্লাব ধসের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন পরিষ্কার করা না হলে ট্যাংক গ্যাস চেম্বার বা গ্যাসবোমায় পরিণত হতে পারে। এর বিষক্রিয়া খুবই তীব্র হয়। বদ্ধ ট্যাংকে যে বিষাক্ত গ্যাস জমা হয়, এ বিষয়ে শ্রমিকসহ অনেকেই অজ্ঞ। সাধারণ কিছু নিয়ম মানলেই দুর্ঘটনা রোধ করা যেতে পারে। যেমন, ট্যাংক খোলার পরপরই ভেতরে না ঢোকা। ফ্যানের বাতাস দিয়ে ভেতরের বিষাক্ত গ্যাসকে সহনীয় করে তোলা। ট্যাংক পরিষ্কারের আগে তা পানি দিয়ে পুরোমাত্রায় ভরে দেয়া। এরপর পানি ফেলে দিয়ে ট্যাংক পরিষ্কার করলে আর গ্যাস বিস্ফোরণের ঝুঁকি থাকে না।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সরওয়ার জাহান মানবজমিনকে বলেন, এটি একটি ভয়ঙ্কর ব্যাপার। ঢাকা শহরের লাখ লাখ বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক আছে। এগুলো এক একটি মৃত্যুফাঁদ হয়ে আছে। এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কিন্তু এ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। নেই কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। এটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন সঠিক নিয়ম মেনে তৈরি করা হচ্ছে না। সময়মতো পরিষ্কার করা হয় না। তিনি বলেন, আবার অনেক সময় সেপটিক ট্যাংকের সঙ্গে অন্যান্য লাইন লিকেজ হয়ে মিশে যাওয়াতে দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার।
No comments