ঢাবির ৫১তম সমাবর্তন: কালো গাউনে প্রাণের উচ্ছ্বাস by মুনির হোসেন
ওদের
দম ফেলার ফুরসত নেই। সময় যে ফুরিয়ে যাচ্ছে। হাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা।
স্মৃতিগুলোকে ছবির ফ্রেমে বাঁধতে এখনো বাকি অনেক কিছু। তাইতো তারা অস্থির,
কোথাও স্থির নেই। অস্তিত্বের পরিচয় দেয়া কার্জনের লাল দালান,
সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য কিংবা কখনো হার না মানা অপরাজেয়
বাংলা। চষে বেড়াচ্ছেন পুরো ক্যাম্পাস। আর রঙিন ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি
করছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।
এ যেন অন্য রকম দৃশ্য। আবেগ আর ভালোবাসার মিশ্রণে ফুটে উঠছে প্রাণের উচ্ছ্বাস। ভালো লাগার এমন দৃশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে। ৫১তম সমাবর্তন সামনে রেখে নব্য গ্রাজুয়েটদের এ ব্যস্ততা। আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশ সেরা বিদ্যাপীঠের ৫১তম সমাবর্তন। গত ৩রা অক্টোবর কস্টিউম পাওয়ার পর থেকেই এ ব্যস্ততার শুরু। সকাল, দুপুর, বিকাল কখনো সন্ধ্যা ছাড়িয়ে রাত। হল কিংবা হলের বাইরে, সবাই মেতেছে প্রাণের উচ্ছ্বাসে।
এ ব্যস্ততার ভিড়ে কখনো চলছে খুনসুঁটি। মান অভিমানের ফিরিস্তিও। চলার পথের সঙ্গীদের আজও যে জ্বালাতন করতে ভুলছে না কেউ কেউ। তাদের খুনসুঁটি আর একে অপরকে বকাঝকা করার মধ্য দিয়ে নিজেদের মধ্যে বন্ধনটা যেন আরো মজবুত হচ্ছে। কারণ তাদের সঙ্গেইতো মিশে আছে দিনরাতের কত সুখ-দুঃখের স্মৃতি। তাইতো আজও শেষ সময়ে একে অপরের সঙ্গী তারা। দল বেঁধে ছবি তুলতে অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু করে টিএসসি, কার্জন হল, মল চত্বর, সিনেট, লাইব্রেরি, মধুর ক্যান্টিন, শহীদ মিনার থেকে ভিসি চত্বর সব জায়গায় চষে বেড়াচ্ছেন তারা। রঙিন ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করছেন সুখ স্মৃতিগুলো। আকাশের দিকে সমাবর্তন হ্যাট ছুড়ে দিয়ে অজানা উদ্দেশে পাড়ি দেয়ার বৃথা চেষ্টা। আবার সময় করে ছুটে যাচ্ছেন গত পাঁচ বছর যাদের শাসনে নিজেকে কিছুটা ঘুছিয়ে নেয়া গেছে সেই প্রিয় শিক্ষকদের কাছে।
শুধু নিজেরাই নয়, সমাবর্তনের হাওয়া লেগেছে কারো কারো গর্বিত বাবা-মা’র গায়েও। ছেলে গ্রাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে গ্রাম থেকে ছুটে এসেছেন। ছেলেও দিয়েছে যোগ্য সম্মান। নিজের সমাবর্তন হ্যাট পরিয়েছেন মাকে আর বাবাকে পরিয়েছেন গাউন। এরপর রিকশায় ছড়িয়ে ছুটে চলার দৃশ্যও ক্যামেরাবন্দি হয়েছে গত কয়েকদিনে। এ ছাড়াও বাবা মাকে নিয়েই অনেকে ক্যাম্পাসের মধুর স্থানগুলোতে শেষ স্মৃতি ধারণ করছেন।
আবার কখনো এসব গ্রাজুয়েটদের কিছু বিশেষ কার্য আবেগতাড়িত করবে যে কাউকে। এ যেমন- রিকশাওয়ালা মামাকে নিজের গাউন ও হ্যাট পরিয়ে দিয়ে স্যালুট জানানো, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বুকে জড়িয়ে ছবি তোলা, কখনোবা আনন্দাশ্রু ফেলা, উন্মাদভাবে ঘুরে বেড়ানো পাগলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছবি তোলা।
আছে কিছু হাস্যকর দৃশ্যের ধারণও। হতাশ গ্রাজুয়েট, ভুতুড়ের বেশে গ্রাজুয়েট, ভিক্ষা করছেন গ্রাজুয়েট, সমাবর্তন হ্যাটের আড়ালে মুখ লুকাচ্ছেন কতিপয় গ্রাজুয়েট, গ্রাজুয়েট লুঙ্গি পরে তার ওপর গায়ে জড়িয়েছেন গাউন, মাথায় দিয়েছেন হ্যাট- এরপর ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সুপারম্যানের সাজে গ্রাজুয়েট, গ্রাজুয়েট কাপলরা হ্যাটের আড়ালে মুখ লুকিয়ে কী যেন করছেন।
কথা হয় বিজয় একাত্তর হলের ছাত্র রায়হানুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, সমাবর্তন হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। দেশ সেরা বিদ্যাপীঠ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করতে পারা নিশ্চয় ভালো লাগার। এ অনুভূতি প্রকাশ করার মতো নয়। কিন্তু কেমন জানি একটা খারাপ লাগাও কাজ করছে। বিদায় জানাতে হবে স্বপ্নের বিদ্যাপীঠকে। কত সুখ-দুঃখের উত্থান-পতনের স্মৃতি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ধূলিকণার সঙ্গে।
রোকেয়া হলের ছাত্রী রোকসানা আঞ্জুমানের ভাষায় এ স্বীকৃতিতো শুধু স্বীকৃতি নয়। এর মধ্য দিয়ে আমাদের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করবেন রাষ্ট্র প্রধান। দেশমাতৃকার জন্য কাজ করার যে দায়িত্ব তিনি তুলে দিবেন, চেষ্টা করবো নিজের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য আজীবন কাজ করে যাওয়ার।
এ বছর রেকর্ড সংখ্যক গ্রাজুয়েটের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য ২১ হাজার ১১১জন গ্র্যাজুয়েট রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এই সংখ্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনের ইতিহাসে সর্বাধিক। অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৯৬টি স্বর্ণপদক, ৮১ জনকে পিএইচ ডি এবং ২৭ জনকে এম ফিল ডিগ্রি প্রদান করা হবে। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সভাপতিত্ব করবেন। এবারের সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। অধিভুক্ত সাত কলেজের রেজিস্ট্রেশনকৃত গ্র্যাজুয়েটগণ ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজ ভেন্যু থেকে সরাসরি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
এ যেন অন্য রকম দৃশ্য। আবেগ আর ভালোবাসার মিশ্রণে ফুটে উঠছে প্রাণের উচ্ছ্বাস। ভালো লাগার এমন দৃশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে। ৫১তম সমাবর্তন সামনে রেখে নব্য গ্রাজুয়েটদের এ ব্যস্ততা। আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশ সেরা বিদ্যাপীঠের ৫১তম সমাবর্তন। গত ৩রা অক্টোবর কস্টিউম পাওয়ার পর থেকেই এ ব্যস্ততার শুরু। সকাল, দুপুর, বিকাল কখনো সন্ধ্যা ছাড়িয়ে রাত। হল কিংবা হলের বাইরে, সবাই মেতেছে প্রাণের উচ্ছ্বাসে।
এ ব্যস্ততার ভিড়ে কখনো চলছে খুনসুঁটি। মান অভিমানের ফিরিস্তিও। চলার পথের সঙ্গীদের আজও যে জ্বালাতন করতে ভুলছে না কেউ কেউ। তাদের খুনসুঁটি আর একে অপরকে বকাঝকা করার মধ্য দিয়ে নিজেদের মধ্যে বন্ধনটা যেন আরো মজবুত হচ্ছে। কারণ তাদের সঙ্গেইতো মিশে আছে দিনরাতের কত সুখ-দুঃখের স্মৃতি। তাইতো আজও শেষ সময়ে একে অপরের সঙ্গী তারা। দল বেঁধে ছবি তুলতে অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু করে টিএসসি, কার্জন হল, মল চত্বর, সিনেট, লাইব্রেরি, মধুর ক্যান্টিন, শহীদ মিনার থেকে ভিসি চত্বর সব জায়গায় চষে বেড়াচ্ছেন তারা। রঙিন ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করছেন সুখ স্মৃতিগুলো। আকাশের দিকে সমাবর্তন হ্যাট ছুড়ে দিয়ে অজানা উদ্দেশে পাড়ি দেয়ার বৃথা চেষ্টা। আবার সময় করে ছুটে যাচ্ছেন গত পাঁচ বছর যাদের শাসনে নিজেকে কিছুটা ঘুছিয়ে নেয়া গেছে সেই প্রিয় শিক্ষকদের কাছে।
শুধু নিজেরাই নয়, সমাবর্তনের হাওয়া লেগেছে কারো কারো গর্বিত বাবা-মা’র গায়েও। ছেলে গ্রাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে গ্রাম থেকে ছুটে এসেছেন। ছেলেও দিয়েছে যোগ্য সম্মান। নিজের সমাবর্তন হ্যাট পরিয়েছেন মাকে আর বাবাকে পরিয়েছেন গাউন। এরপর রিকশায় ছড়িয়ে ছুটে চলার দৃশ্যও ক্যামেরাবন্দি হয়েছে গত কয়েকদিনে। এ ছাড়াও বাবা মাকে নিয়েই অনেকে ক্যাম্পাসের মধুর স্থানগুলোতে শেষ স্মৃতি ধারণ করছেন।
আবার কখনো এসব গ্রাজুয়েটদের কিছু বিশেষ কার্য আবেগতাড়িত করবে যে কাউকে। এ যেমন- রিকশাওয়ালা মামাকে নিজের গাউন ও হ্যাট পরিয়ে দিয়ে স্যালুট জানানো, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বুকে জড়িয়ে ছবি তোলা, কখনোবা আনন্দাশ্রু ফেলা, উন্মাদভাবে ঘুরে বেড়ানো পাগলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছবি তোলা।
আছে কিছু হাস্যকর দৃশ্যের ধারণও। হতাশ গ্রাজুয়েট, ভুতুড়ের বেশে গ্রাজুয়েট, ভিক্ষা করছেন গ্রাজুয়েট, সমাবর্তন হ্যাটের আড়ালে মুখ লুকাচ্ছেন কতিপয় গ্রাজুয়েট, গ্রাজুয়েট লুঙ্গি পরে তার ওপর গায়ে জড়িয়েছেন গাউন, মাথায় দিয়েছেন হ্যাট- এরপর ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সুপারম্যানের সাজে গ্রাজুয়েট, গ্রাজুয়েট কাপলরা হ্যাটের আড়ালে মুখ লুকিয়ে কী যেন করছেন।
কথা হয় বিজয় একাত্তর হলের ছাত্র রায়হানুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, সমাবর্তন হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। দেশ সেরা বিদ্যাপীঠ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করতে পারা নিশ্চয় ভালো লাগার। এ অনুভূতি প্রকাশ করার মতো নয়। কিন্তু কেমন জানি একটা খারাপ লাগাও কাজ করছে। বিদায় জানাতে হবে স্বপ্নের বিদ্যাপীঠকে। কত সুখ-দুঃখের উত্থান-পতনের স্মৃতি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ধূলিকণার সঙ্গে।
রোকেয়া হলের ছাত্রী রোকসানা আঞ্জুমানের ভাষায় এ স্বীকৃতিতো শুধু স্বীকৃতি নয়। এর মধ্য দিয়ে আমাদের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করবেন রাষ্ট্র প্রধান। দেশমাতৃকার জন্য কাজ করার যে দায়িত্ব তিনি তুলে দিবেন, চেষ্টা করবো নিজের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য আজীবন কাজ করে যাওয়ার।
এ বছর রেকর্ড সংখ্যক গ্রাজুয়েটের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য ২১ হাজার ১১১জন গ্র্যাজুয়েট রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এই সংখ্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনের ইতিহাসে সর্বাধিক। অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৯৬টি স্বর্ণপদক, ৮১ জনকে পিএইচ ডি এবং ২৭ জনকে এম ফিল ডিগ্রি প্রদান করা হবে। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সভাপতিত্ব করবেন। এবারের সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। অধিভুক্ত সাত কলেজের রেজিস্ট্রেশনকৃত গ্র্যাজুয়েটগণ ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজ ভেন্যু থেকে সরাসরি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
No comments