তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া-এখন সরকার কী করে সেটাই দেখার বিষয় by আকবর আলি খান
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক ইতিমধ্যে জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে এই প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত ঘোষণা করেছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আশা করছেন, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক দুই উপদেষ্টা আকবর আলি খান ও এম হাফিজউদ্দিন খানের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হলো
পদ্মা সেতুর প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে অভিযোগ করেছে, তাদের কাজের রীতি অনুযায়ী সেটি নাটকীয়ভাবে হয়নি। এর আগে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে এ সম্পর্কে আভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক যেকোনো অভিযোগ পেলেই তার ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। তাদের কাজ করার একটি রীতি বা প্রক্রিয়া আছে। বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ আছে। কোনো প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এলে তা তদন্তের কাজটি করে থাকে ইন্টেগ্রিটি বিভাগ। এ বিভাগে আইন উপদেষ্টা আছেন। তাঁর পরামর্শ না নিয়ে তারা কোনো কাজ করবে না। আবার পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশীয় প্রকল্প-সহায়তার জন্য যে বিভাগ আছে, এ নিয়ে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করার কথা।
বিশ্বব্যাংকে যেকোনো অভিযোগের ফাইল সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। যদি দেখা যায়, অভিযোগটির পক্ষে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ নেই, তখন এ নিয়ে আর তারা এগোবে না। আর যদি তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তখন তারা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে জানায়। অর্থমন্ত্রী যেহেতু বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, সেহেতু তাঁকেই বিষয়টি জানানো হয়। হয়তো সরকারপ্রধানকে সরাসরি জানায় না। পদ্মা সেতুর বিষয়ে তার ব্যতিক্রম হয়নি বলেই আমার বিশ্বাস। অর্থাৎ তাদের রিপোর্টটি অর্থমন্ত্রীকে দেওয়ার আগে অনেক প্রক্রিয়া সমাপ্ত করেছে।
প্রথমে এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা সরকারকে জানায়, বাইরে প্রকাশ করে না। সরকার যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়, তখন আর কোনো সমস্যা থাকে না। কিন্তু সরকার যদি সেটি করতে ব্যর্থ হয়, তখন তারা তাদের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে।
যমুনা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছিল, সেটি মূল কাজের দরপত্র আহ্বান বা পরামর্শক নিয়োগ নিয়ে নয়। অভিযোগ উঠেছিল, সেতু নির্মাণের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাদের পুনর্বাসন নিয়ে। সেবারেও অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্বব্যাংক শুনানির ব্যবস্থা করেছিল।
এ ছাড়া দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক দীর্ঘদিন জ্বালানি খাতে ঋণ দেওয়া বন্ধ রেখেছিল, যার প্রধান কারণ ছিল বিদ্যুৎ চুরি বা সিস্টেম লস। আর ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
আমরা মনে করি, সরকার উদ্যোগ নিলে এখনো বিষয়টির সন্তোষজনক নিষ্পত্তি হতে পারে। বিশ্বব্যাংক যেহেতু অর্থায়ন করবে, সেহেতু তাদের আপত্তি অগ্রাহ্য করলে সহায়তার অর্থ প্রত্যাশা করা যায় না।
এখন সরকার কী করে, সেটাই দেখার বিষয়।
আকবর আলি খান: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
পদ্মা সেতুর প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে অভিযোগ করেছে, তাদের কাজের রীতি অনুযায়ী সেটি নাটকীয়ভাবে হয়নি। এর আগে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে এ সম্পর্কে আভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক যেকোনো অভিযোগ পেলেই তার ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। তাদের কাজ করার একটি রীতি বা প্রক্রিয়া আছে। বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ আছে। কোনো প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এলে তা তদন্তের কাজটি করে থাকে ইন্টেগ্রিটি বিভাগ। এ বিভাগে আইন উপদেষ্টা আছেন। তাঁর পরামর্শ না নিয়ে তারা কোনো কাজ করবে না। আবার পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশীয় প্রকল্প-সহায়তার জন্য যে বিভাগ আছে, এ নিয়ে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করার কথা।
বিশ্বব্যাংকে যেকোনো অভিযোগের ফাইল সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। যদি দেখা যায়, অভিযোগটির পক্ষে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ নেই, তখন এ নিয়ে আর তারা এগোবে না। আর যদি তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তখন তারা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে জানায়। অর্থমন্ত্রী যেহেতু বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, সেহেতু তাঁকেই বিষয়টি জানানো হয়। হয়তো সরকারপ্রধানকে সরাসরি জানায় না। পদ্মা সেতুর বিষয়ে তার ব্যতিক্রম হয়নি বলেই আমার বিশ্বাস। অর্থাৎ তাদের রিপোর্টটি অর্থমন্ত্রীকে দেওয়ার আগে অনেক প্রক্রিয়া সমাপ্ত করেছে।
প্রথমে এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা সরকারকে জানায়, বাইরে প্রকাশ করে না। সরকার যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়, তখন আর কোনো সমস্যা থাকে না। কিন্তু সরকার যদি সেটি করতে ব্যর্থ হয়, তখন তারা তাদের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে।
যমুনা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছিল, সেটি মূল কাজের দরপত্র আহ্বান বা পরামর্শক নিয়োগ নিয়ে নয়। অভিযোগ উঠেছিল, সেতু নির্মাণের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাদের পুনর্বাসন নিয়ে। সেবারেও অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্বব্যাংক শুনানির ব্যবস্থা করেছিল।
এ ছাড়া দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক দীর্ঘদিন জ্বালানি খাতে ঋণ দেওয়া বন্ধ রেখেছিল, যার প্রধান কারণ ছিল বিদ্যুৎ চুরি বা সিস্টেম লস। আর ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
আমরা মনে করি, সরকার উদ্যোগ নিলে এখনো বিষয়টির সন্তোষজনক নিষ্পত্তি হতে পারে। বিশ্বব্যাংক যেহেতু অর্থায়ন করবে, সেহেতু তাদের আপত্তি অগ্রাহ্য করলে সহায়তার অর্থ প্রত্যাশা করা যায় না।
এখন সরকার কী করে, সেটাই দেখার বিষয়।
আকবর আলি খান: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
No comments