কোর কমিটির সুপারিশ আমলে নিন-তবু কেন ট্রানজিট?
গত আগস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালে ভারতকে বাংলাদেশের সড়ক, রেল ও নৌপথে বহুমাত্রিক ট্রানজিট-সুবিধা দেওয়ার সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করার কথা ছিল। কিন্তু তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করা থেকে ভারত পিছিয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ট্রানজিট-সংক্রান্ত সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করেনি।
এখন দেখা যাচ্ছে, দুই দেশের মধ্যকার পুরোনো নৌ প্রটোকলের আওতায় আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় এ-সংক্রান্ত এক সচিত্র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারের জন্য কোনো স্থায়ী অবকাঠামো নেই, বালুর বস্তা দিয়ে বানানো হয়েছে অস্থায়ী ঘাট, পেট্রলপাম্পের দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে দাপ্তরিক কাজ চালাচ্ছে আমাদের অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ; কর্মকর্তা মাত্র একজন। এই পরিস্থিতিতেই শুরু হয়েছে ভারতকে পরীক্ষামূলক ট্রানজিট-সুবিধা দেওয়ার প্রক্রিয়া। ভারতীয় পণ্যের দুটি চালান ইতিমধ্যে ত্রিপুরার আগরতলায় গেছে এবং আরও কয়েকটি চালান যাওয়ার কথা রয়েছে। নৌ প্রটোকলের শর্ত অনুযায়ী ভারতকে এভাবে পণ্য পরিবহনের জন্য কোনো মাশুল দিতে হচ্ছে না। শুধু আশুগঞ্জ নৌবন্দর আর আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহারের মাশুল দিচ্ছে ভারত।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের সরকার ভারতকে এই ট্রানজিট-সুবিধা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়াই। উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আশুগঞ্জ নৌবন্দরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই রুট ব্যবহার শুরু করার আগে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে; সে জন্য প্রয়োজন বড় ধরনের বিনিয়োগ। ট্রানজিট বিষয়ে সরকার যে কোর কমিটি গঠন করেছিল, সেই কমিটির সুপারিশ ছিল, ট্রানজিট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাশুল এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ ফিরে পাওয়ার পরেও আর্থিকভাবে লাভবান হয়। কিন্তু নৌ প্রটোকলের সুযোগ নিয়ে যেভাবে এই সুবিধা দেওয়া শুরু হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের সরকার কোর কমিটির ওই সুপারিশ বিবেচনায় নেয়নি।
আমরা অবশ্যই ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক চাই। কিন্তু এর বিনিময়ে ভারত যদি অভিন্ন নদীগুলোর পানির ন্যায্য ভাগসহ আমাদের অন্যান্য ন্যায্য অধিকারগুলো দিতে অনীহা দেখাতে থাকে, তাহলে তো সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলা কঠিন। সরকারের উচিত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে লাভালাভের বিষয়টি নিশ্চিত করা। বহুমুখী ট্রানজিট-সুবিধা যেহেতু স্থগিত রয়েছে, সে বিষয়ে নতুন বোঝাপড়া না হওয়া পর্যন্ত শুধু নৌ প্রটোকলের আওতায় আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারের সুযোগ ভারতকে দেওয়া কতটা যুক্তিসংগত, তা নীতিনির্ধারকদের ভেবে দেখতে হবে। আর যদি দিতেই হয়, ১৯৭২ সালের নৌ প্রটোকল সংশোধন করে মাশুল আরোপের বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
খবরে প্রকাশ, সরকার সে রকম চিন্তাভাবনা থেকে বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সেই বিধিমালা তৈরিতে কোর কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। কেবল ট্রানজিট নয়, যেকোনো পণ্য পরিবহনে অবকাঠামোর উন্নয়ন যে অপরিহার্য, সেই কথাটিও কি নীতিনির্ধারকেরা ভুলে গেছেন?
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের সরকার ভারতকে এই ট্রানজিট-সুবিধা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়াই। উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আশুগঞ্জ নৌবন্দরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই রুট ব্যবহার শুরু করার আগে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে; সে জন্য প্রয়োজন বড় ধরনের বিনিয়োগ। ট্রানজিট বিষয়ে সরকার যে কোর কমিটি গঠন করেছিল, সেই কমিটির সুপারিশ ছিল, ট্রানজিট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাশুল এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ ফিরে পাওয়ার পরেও আর্থিকভাবে লাভবান হয়। কিন্তু নৌ প্রটোকলের সুযোগ নিয়ে যেভাবে এই সুবিধা দেওয়া শুরু হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের সরকার কোর কমিটির ওই সুপারিশ বিবেচনায় নেয়নি।
আমরা অবশ্যই ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক চাই। কিন্তু এর বিনিময়ে ভারত যদি অভিন্ন নদীগুলোর পানির ন্যায্য ভাগসহ আমাদের অন্যান্য ন্যায্য অধিকারগুলো দিতে অনীহা দেখাতে থাকে, তাহলে তো সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলা কঠিন। সরকারের উচিত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে লাভালাভের বিষয়টি নিশ্চিত করা। বহুমুখী ট্রানজিট-সুবিধা যেহেতু স্থগিত রয়েছে, সে বিষয়ে নতুন বোঝাপড়া না হওয়া পর্যন্ত শুধু নৌ প্রটোকলের আওতায় আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারের সুযোগ ভারতকে দেওয়া কতটা যুক্তিসংগত, তা নীতিনির্ধারকদের ভেবে দেখতে হবে। আর যদি দিতেই হয়, ১৯৭২ সালের নৌ প্রটোকল সংশোধন করে মাশুল আরোপের বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
খবরে প্রকাশ, সরকার সে রকম চিন্তাভাবনা থেকে বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সেই বিধিমালা তৈরিতে কোর কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। কেবল ট্রানজিট নয়, যেকোনো পণ্য পরিবহনে অবকাঠামোর উন্নয়ন যে অপরিহার্য, সেই কথাটিও কি নীতিনির্ধারকেরা ভুলে গেছেন?
No comments