প্রধানমন্ত্রী গিলানি অভিযুক্ত
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে আদালত অবমাননার দায়ে গতকাল সোমবার অভিযুক্ত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। হারাতে পারেন প্রধানমন্ত্রিত্ব।প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা পুনরুজ্জীবিত করতে সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করায় গিলানিকে অভিযুক্ত করা হয়।
গিলানিই পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাকে পদে থাকাকালে এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হলো।
গিলানি পদ হারালেও ক্ষমতাসীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের পতন হবে না। পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে নিজেদের মধ্য থেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে তাদের। তবে দেশের বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে পিপিপি সরকার দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক সংকটের কারণে সরকার আগাম নির্বাচন দিলে পিপিপির জয়ের সম্ভাবনা কমে যাবে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রেসিডেন্ট জারদারি ও তাঁর স্ত্রী প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজীর ভুট্টো একটি সুইস ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার পাচার করেন। নব্বইয়ের দশকে কাস্টম বিভাগের কাজ পাওয়ার বিনিময়ে কয়েকটি কোম্পানি ওই অর্থ তাদের ঘুষ দেয়।
গিলানি গতকাল আদালতে হাজির হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ সময় আদালতের বিচারক নাসির উল-মুলক অভিযোগপত্র পড়ে শোনান। অভিযোগপত্রে বলা হয়, জারদারির মুদ্রাপাচারের অভিযোগসংক্রান্ত মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে অবজ্ঞা ও অমান্য করেছেন।
গিলানিকে উদ্দেশ করে বিচারক মুলক বলেন, ‘আপনি কি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন?’ জবাবে গিলানি বলেন, ‘আমি লিখিতভাবে এর জবাব দেব।’
এরপর আদালত আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে কাগজপত্র নথিভুক্ত করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেন। আদালত সেগুলো ২২ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাছাই করবেন। বিবাদী পক্ষকে ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে নথিপত্র উপস্থাপন করতে হবে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গিলানিকে আদালতে হাজিরা দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গিলানি প্রথম থেকেই বলে আসছেন, প্রেসিডেন্ট মামলা থেকে পূর্ণ দায়মুক্তি সুবিধা ভোগ করেন। আর প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
গতকাল শুনানি উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আদালত চত্বরে শত শত দাঙ্গাপুলিশ মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তা চৌকি ও গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। আকাশে চক্কর দিতে থাকে হেলিকপ্টার। এএফপি ও বিবিসি।
No comments