তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া-সহায়তা চাইলে বিশ্বব্যাংকের আপত্তি আমলে নিতে হবে by এম হাফিজউদ্দিন খান
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক ইতিমধ্যে জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে এই প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত ঘোষণা করেছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আশা করছেন, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক দুই উপদেষ্টা আকবর আলি খান ও এম হাফিজউদ্দিন খানের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হলো
পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা দেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেননা, এই সেতুর সঙ্গে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তথা অর্থনীতির উন্নয়ন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষই কেবল উপকৃত হবে না, যোগাযোগব্যবস্থায়ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
সে ক্ষেত্রে সরকারের উচিত, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে যেসব অভিযোগ ও আপত্তি এসেছে, তার দ্রুত সুরাহা করা। এটি দুভাবে হতে পারে: বিশ্বব্যাংক যে তদন্ত করেছে, সরকার সেটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। দ্বিতীয়ত, সরকার নিজেও তদন্ত করে দেখতে পারে। দ্বিতীয় দফা তদন্ত সময়সাপেক্ষ। তা ছাড়া সরকারের একটি বিভাগের বা প্রকল্পের অনিয়মের তদন্ত সরকারেরই আরেকটি সংস্থা করলে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, সেই প্রশ্নও উঠতে পারে। আর দুর্নীতি দমন কমিশনও তো তাদের ভাষায়ই নখদন্তহীন সংস্থা।
আর সরকার যদি মনে করে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ভিত্তিহীন, তার পক্ষে তথ্য-প্রমাণও হাজির করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থসহায়তা নিতে হলে তাদের আপত্তি তো আমলে নিতে হবে।
এর বিকল্প আছে, বিশ্বব্যাংককে বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা। কিন্তু তাতে দেশের অর্থনীতিতে যে চাপ পড়বে, তা মোকাবিলা করার সামর্থ্য আমাদের আছে কি না, তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন।
সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো বলা যাবে না। আমদানি বেড়েছে, বিশেষ করে, রেন্টাল বিদ্যুতের জন্য জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। অন্যদিকে সাম্প্রতিক কালে রপ্তানি কমছে, যা গত অর্থবছরে অনেক বেড়েছিল।
আমরা এ কথাও বলব, বিশ্বব্যাংক ধোয়া তুলসী পাতা নয়। সেখানেও দুর্নীতি আছে। আমাদের যদি নৈতিক জোর থাকে, তাহলে তার সঙ্গে লড়াই করা যায়। আর যদি কোনো ঘাপলা থেকে থাকে, তাহলে লড়াই করে লাভ হবে না। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দেশে আরও অনেক প্রকল্প আছে, সেগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে আমার অভিজ্ঞতা বলছে, বিশ্বব্যাংক বা এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বড় বড় প্রকল্পের ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্ক থাকে। কেননা, এর সঙ্গে তাদের ভাবমূর্তি বা গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নও আছে।
যমুনা সেতুর পুনর্বাসনে দুর্নীতি নিয়ে মুজিবুল হক দুলু নামের একজন বিশ্বব্যাংকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ৭০ হাজার লোক উদ্বাস্তু হয়েছে এবং তারা ক্ষতিপূরণ পায়নি। তারা বিষয়টি তদন্ত করে কোনো সত্যতা পায়নি।
তবে এবারের অভিযোগটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়ে। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত হবে বিষয়টির দ্রুত সুরাহা করা।
এম হাফিজউদ্দিন খান: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা দেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেননা, এই সেতুর সঙ্গে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তথা অর্থনীতির উন্নয়ন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষই কেবল উপকৃত হবে না, যোগাযোগব্যবস্থায়ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
সে ক্ষেত্রে সরকারের উচিত, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে যেসব অভিযোগ ও আপত্তি এসেছে, তার দ্রুত সুরাহা করা। এটি দুভাবে হতে পারে: বিশ্বব্যাংক যে তদন্ত করেছে, সরকার সেটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। দ্বিতীয়ত, সরকার নিজেও তদন্ত করে দেখতে পারে। দ্বিতীয় দফা তদন্ত সময়সাপেক্ষ। তা ছাড়া সরকারের একটি বিভাগের বা প্রকল্পের অনিয়মের তদন্ত সরকারেরই আরেকটি সংস্থা করলে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, সেই প্রশ্নও উঠতে পারে। আর দুর্নীতি দমন কমিশনও তো তাদের ভাষায়ই নখদন্তহীন সংস্থা।
আর সরকার যদি মনে করে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ভিত্তিহীন, তার পক্ষে তথ্য-প্রমাণও হাজির করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থসহায়তা নিতে হলে তাদের আপত্তি তো আমলে নিতে হবে।
এর বিকল্প আছে, বিশ্বব্যাংককে বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা। কিন্তু তাতে দেশের অর্থনীতিতে যে চাপ পড়বে, তা মোকাবিলা করার সামর্থ্য আমাদের আছে কি না, তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন।
সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো বলা যাবে না। আমদানি বেড়েছে, বিশেষ করে, রেন্টাল বিদ্যুতের জন্য জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। অন্যদিকে সাম্প্রতিক কালে রপ্তানি কমছে, যা গত অর্থবছরে অনেক বেড়েছিল।
আমরা এ কথাও বলব, বিশ্বব্যাংক ধোয়া তুলসী পাতা নয়। সেখানেও দুর্নীতি আছে। আমাদের যদি নৈতিক জোর থাকে, তাহলে তার সঙ্গে লড়াই করা যায়। আর যদি কোনো ঘাপলা থেকে থাকে, তাহলে লড়াই করে লাভ হবে না। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দেশে আরও অনেক প্রকল্প আছে, সেগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে আমার অভিজ্ঞতা বলছে, বিশ্বব্যাংক বা এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বড় বড় প্রকল্পের ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্ক থাকে। কেননা, এর সঙ্গে তাদের ভাবমূর্তি বা গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নও আছে।
যমুনা সেতুর পুনর্বাসনে দুর্নীতি নিয়ে মুজিবুল হক দুলু নামের একজন বিশ্বব্যাংকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ৭০ হাজার লোক উদ্বাস্তু হয়েছে এবং তারা ক্ষতিপূরণ পায়নি। তারা বিষয়টি তদন্ত করে কোনো সত্যতা পায়নি।
তবে এবারের অভিযোগটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়ে। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত হবে বিষয়টির দ্রুত সুরাহা করা।
এম হাফিজউদ্দিন খান: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
No comments