পবিত্র কোরআনের আলো-কাবিল হাবিলকে হত্যা করল এবং পরে অনুতপ্ত হলো
২৮. লায়িম্ বাছাত্ত্তা ইলাইয়্যা ইয়াদাকা লিতাক্বতুলানী মা আনা বিবাছিতিন ইয়াদিয়া ইলাইকা লিআক্বতুলাকা; ইন্নী আখা-ফুল্লাহা রাব্বাল 'আলামীন। ২৯. ইন্নী উরীদু আন তাবূআ বিইছমী ওয়া ইছমিকা ফাতাকূনা মিন্ আসহাবিন নারি; ওয়া যালিকা জাযাউয্ যা-লিমীন।
৩০. ফাত্বাওয়্যা'আত লাহূ নাফছুহূ ক্বাতলা আখীহি ফাক্বাতালাহূ ফাআসবাহা মিনাল খা-ছিরীন। ৩১. ফাবা'আছাল্লাহু গুরাবান ইয়াবহাছু ফিল আরদ্বি লিইউরিইয়াহূ কাইফা ইউওয়ারী ছাওআতা আখীহি; ক্বা-লা ইয়া-ওয়াইলাতা আ'আজায্তু আন আকূনা মিছলা হাযাল গুরাবি ফাউওয়ারিয়া ছাওয়াতা আখী; ফাআসবাহা মিনান্ নাদিমীন।
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ২৮-৩১]
অনুবাদ : ২৮. (হাবিল বলল) তুমি যদি আজ আমাকে হত্যা করার জন্য আমার দিকে তোমার হাত বাড়াও, তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তোমার প্রতি আমার হাত বাড়াব না। কারণ, আমি আল্লাহকে ভয় করি, যিনি সৃষ্টিকুলের প্রভু।
২৯. বরং আমি চাই তুমি আমার গুনাহ এবং তোমার গুনাহের বোঝা একাই তোমার মাথায় তুলে নাও; আর এভাবেই তুমি জাহান্নামের অধিকারী হয়ে পড়ো। এ হচ্ছে জালেমদের কর্মফল।
৩০. শেষ পর্যন্ত তার কুপ্রবৃত্তি তাকে নিজ ভাইয়ের হত্যার কাজে উসকানি দিল, একপর্যায়ে সে তাকে খুন করেই ফেলল। এর ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
৩১. অতঃপর আল্লাহ তায়ালা সেখানে একটি কাক পাঠালেন। কাকটি হত্যাকারীর সামনে এসে মাটি খুঁড়তে লাগল। উদ্দেশ্য, তাকে দেখানো, কিভাবে সে তার ভাইয়ের লাশ লুকিয়ে রাখবে। এটা দেখে সে নিজে নিজে বলতে লাগল, হায় আমি তো এই কাকটির চেয়েও নিকৃষ্ট হয়ে পড়েছি, আমি তো আমার ভাইয়ের লাশটাও গোপন করতে পারলাম না। অতঃপর সে সত্যি সত্যিই অনুতপ্ত হলো।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর বর্ণনায় দেখা যায়, নিহত হাবিল ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও দায়িত্বনিষ্ঠ মানুষ। তাঁর মধ্যে ন্যায়-অন্যায় বোধ ছিল এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতায় বিশ্বাস ছিল। অপরদিকে কাবিল ছিল অবিবেচক। উগ্র ও কুপ্রবৃত্তির বশে চালিত মানুষ। কাবিল হাবিলকে হত্যার হুমকি দিচ্ছিল আগে থেকেই। জবাবে হাবিল কাবিলকে হত্যার হুমকি দেয়নি, বরং আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতার কথা শোনাচ্ছিল। এতে কাবিলের চৈতন্য জাগরিত হয়নি। সে লালসার তাড়নায় অপ্রকৃতিস্থ মানুষে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। সুন্দরী নারী পাওয়ার মোহে সে মানবিক দায়দায়িত্ব ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার কথা ভুলে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সে তার ভাই হাবিলকে হত্যা করেই ফেলে। এই হত্যাকাণ্ড থেকেই শুরু হয় মানব ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায়। মানব ইতিহাসে হত্যা, মারামারি আর রক্তপাতের ঘটনা শুরু হয় এভাবেই। খারাপ মানুষরা কিভাবে ক্রমান্বয়ে খারাপের পথে যায় এবং শেষ পর্যন্ত কিভাবে নিজের জন্যই ধ্বংস ডেকে আনে এ ঘটনা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। কথিত আছে, হত্যাকাণ্ডের পর মা-বাবার বদ দোয়ায় কাবিলের শরীর কালো হয়ে যায় এবং অনুশোচনায় অপ্রকৃতিস্থ হয়ে সে দীর্ঘদিন লাশ কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তার কানে আওয়াজ আসত, 'ভয় করতে থাকো'। সে সব কিছুকে ভয় করতে থাকে। সে ভয় করত, হয়তো তাকে হত্যা করে ফেলা হবে। এভাবেই সে মারা যায়।
৩১ নম্বর আয়াতে একটি কাকের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এ কাকটি কাবিলের সামনে মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিয়েছিল। এই দৃশ্য দেখে ভ্রাতৃহন্তা কাবিলের মনে চৈতন্যের উদয় হয়। সে নিজেকে একটা কাকের চেয়েও নিকৃষ্ট মনে করতে থাকে। এভাবেই সে অনুতপ্ত হতে থাকে। অনুতপ্ত হলেও সে কিন্তু আর সুন্দর জীবন ফিরে পায়নি। অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যার মতো নিকৃষ্ট পাপের ক্ষমা নেই।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ২৮-৩১]
অনুবাদ : ২৮. (হাবিল বলল) তুমি যদি আজ আমাকে হত্যা করার জন্য আমার দিকে তোমার হাত বাড়াও, তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তোমার প্রতি আমার হাত বাড়াব না। কারণ, আমি আল্লাহকে ভয় করি, যিনি সৃষ্টিকুলের প্রভু।
২৯. বরং আমি চাই তুমি আমার গুনাহ এবং তোমার গুনাহের বোঝা একাই তোমার মাথায় তুলে নাও; আর এভাবেই তুমি জাহান্নামের অধিকারী হয়ে পড়ো। এ হচ্ছে জালেমদের কর্মফল।
৩০. শেষ পর্যন্ত তার কুপ্রবৃত্তি তাকে নিজ ভাইয়ের হত্যার কাজে উসকানি দিল, একপর্যায়ে সে তাকে খুন করেই ফেলল। এর ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
৩১. অতঃপর আল্লাহ তায়ালা সেখানে একটি কাক পাঠালেন। কাকটি হত্যাকারীর সামনে এসে মাটি খুঁড়তে লাগল। উদ্দেশ্য, তাকে দেখানো, কিভাবে সে তার ভাইয়ের লাশ লুকিয়ে রাখবে। এটা দেখে সে নিজে নিজে বলতে লাগল, হায় আমি তো এই কাকটির চেয়েও নিকৃষ্ট হয়ে পড়েছি, আমি তো আমার ভাইয়ের লাশটাও গোপন করতে পারলাম না। অতঃপর সে সত্যি সত্যিই অনুতপ্ত হলো।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর বর্ণনায় দেখা যায়, নিহত হাবিল ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও দায়িত্বনিষ্ঠ মানুষ। তাঁর মধ্যে ন্যায়-অন্যায় বোধ ছিল এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতায় বিশ্বাস ছিল। অপরদিকে কাবিল ছিল অবিবেচক। উগ্র ও কুপ্রবৃত্তির বশে চালিত মানুষ। কাবিল হাবিলকে হত্যার হুমকি দিচ্ছিল আগে থেকেই। জবাবে হাবিল কাবিলকে হত্যার হুমকি দেয়নি, বরং আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতার কথা শোনাচ্ছিল। এতে কাবিলের চৈতন্য জাগরিত হয়নি। সে লালসার তাড়নায় অপ্রকৃতিস্থ মানুষে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। সুন্দরী নারী পাওয়ার মোহে সে মানবিক দায়দায়িত্ব ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার কথা ভুলে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সে তার ভাই হাবিলকে হত্যা করেই ফেলে। এই হত্যাকাণ্ড থেকেই শুরু হয় মানব ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায়। মানব ইতিহাসে হত্যা, মারামারি আর রক্তপাতের ঘটনা শুরু হয় এভাবেই। খারাপ মানুষরা কিভাবে ক্রমান্বয়ে খারাপের পথে যায় এবং শেষ পর্যন্ত কিভাবে নিজের জন্যই ধ্বংস ডেকে আনে এ ঘটনা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। কথিত আছে, হত্যাকাণ্ডের পর মা-বাবার বদ দোয়ায় কাবিলের শরীর কালো হয়ে যায় এবং অনুশোচনায় অপ্রকৃতিস্থ হয়ে সে দীর্ঘদিন লাশ কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তার কানে আওয়াজ আসত, 'ভয় করতে থাকো'। সে সব কিছুকে ভয় করতে থাকে। সে ভয় করত, হয়তো তাকে হত্যা করে ফেলা হবে। এভাবেই সে মারা যায়।
৩১ নম্বর আয়াতে একটি কাকের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এ কাকটি কাবিলের সামনে মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিয়েছিল। এই দৃশ্য দেখে ভ্রাতৃহন্তা কাবিলের মনে চৈতন্যের উদয় হয়। সে নিজেকে একটা কাকের চেয়েও নিকৃষ্ট মনে করতে থাকে। এভাবেই সে অনুতপ্ত হতে থাকে। অনুতপ্ত হলেও সে কিন্তু আর সুন্দর জীবন ফিরে পায়নি। অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যার মতো নিকৃষ্ট পাপের ক্ষমা নেই।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments