জয়নালের জন্য ভালোবাসা-১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা এফডিআর ও চেকে হস্তান্তর
ময়মনসিংহের রিকশা-চালক মো. জয়নাল আবেদিনের মমতাজ হাসপাতালের জন্য গঠিত তহবিলে জমা পড়া ১৫ লাখ ৯২ হাজার ৬৬৬ টাকা ৮৫ পয়সা গতকাল বুধবার হস্তান্তর করা হয়ছে। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৬৬৬ টাকা ৮৫ পয়সা জয়নাল আবেদিনের নামে এফডিআর (স্থায়ী আমানত) করে দেওয়া হয়।
এফডিআর করার পর আসা ২০ হাজার টাকার চেক জয়নাল আবেদিনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
গত বছরের ২ জুলাই প্রথম আলোর শেষের পাতায় ‘রিকশা চালিয়ে হাসপাতাল’ শিরোনামে বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়। ক্ষয়িষ্ণু এই সমাজে একজন রিকশাচালকের নিষ্ঠা ও একাগ্রতা এবং মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার এই গল্প পড়ে প্রথম আলোর পাঠকেরা অভিভূত, আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
পাঠকদের অনুরোধে ওই বছরে ৪ জুলাই প্রথম আলো ট্রাস্ট/মমতাজ হাসপাতাল নামে তহবিল গঠন করা হয় (হিসাব নম্বর: ২০৭১০০৭৯৫৯, ঢাকা ব্যাংক, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা)। প্রথম আলোর সুহূদ পাঠকেরা মমতাজ হাসপাতালের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
এই অর্থ দিয়ে সহায়তাকারীদের ইচ্ছা অনুযায়ী মমতাজ হাসপাতালের প্রয়োজনীয় এবং পরিকল্পিত উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং অর্থ ব্যয়ের হিসাবও পত্রিকার মাধ্যমে জানানো হবে।
গতকাল সব অর্থ হস্তান্তরের পর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জয়নাল আবেদিন। তিনি বলেন, ‘একসময় রিকশার প্যাডেল চাপতে চাপতে এই হাসপাতাল তৈরির স্বপ্ন দেখতাম। তখন পকেটে ১০০ টাকার একটি নোট আসলে সংসারের চাপ সামলাব, না জমা করার লোভ সামলাব—তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যেতাম। আর এখন আমার হাতে কত টাকা! কিন্তু এ টাকার প্রতি আমার কোনো লোভ লাগে না। আমি শুধু দেখে যেতে চাই, আমার হাসপাতালটা হয়েছে।’
আমাদের ময়মনসিংহ অফিস জানায়, এই তহবিলের বাইরেও জয়নাল আবেদিনের হাসপাতাল ও বিদ্যালয়ের জন্য হাত বাড়িয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাঁদের দেওয়া সরাসরি আর্থিক সহায়তায় মমতাজ হাসপাতাল ও বিদ্যালয়ের জন্য নতুন করে কেনা হয়েছে ৫৯ শতক জমি। বায়না করা হয়েছে আরও ১২১ শতক জমি। সব জমিই কেনা হয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটির নামে।
ঢাকার এক ব্যক্তি দুটি বিদেশি গাভি দিয়েছেন জয়নাল আবেদিনকে। দুধ বিক্রির টাকায় হাসপাতালে আসা রোগীদের বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। একটি ওষুধ কোম্পানি প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকার ওষুধ ও নগদ পাঁচ হাজার করে টাকা দিচ্ছে। চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি কয়েক সপ্তাহ পরপর হাসপাতালের জন্য জরুরি কিছু ওষুধ পাঠান।
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে হাসপাতালের জন্য একটি ভবন করে দিতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একটি স্থায়ী ভবনের জন্য সিলেটর এক ব্যক্তি পাঁচ হাজার ইট কিনে দিয়েছেন।
জয়নাল আবেদিনের বিদ্যালয়টির জন্য নতুন করে টিন দিয়ে আরও দুটি কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম তৃতীয় থেকে উন্নীত করে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত করা হয়েছে। আরও দুজন শিক্ষক নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সব ক্লাসে সরকারি বই সরবরাহ করা হয়েছে। বিদ্যালয়টিকে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে উপজেলা শিক্ষা দপ্তর।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিদ্যালয়টির জন্য একটি ভবন নির্মাণ করতে মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ করেছে।
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ‘গত বছরের ২ নভেম্বর বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী পরিদর্শনে এসে হাসপাতাল ও বিদ্যালয়টির উন্নয়নে কিছু নির্দেশনা দেন। তার আলোকেই আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করছি।’
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুল ইসলাম জানান, মমতাজ হাসপাতালের একটি ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এসব অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘দেশের অনেক মানুষ এখন আমার স্বপ্নের সঙ্গে আছে। প্রথম আলোর উদ্যোগে মানুষের কাছ থেকে পাওয়া টাকায় এবং মন্ত্রী মহোদয়ের সহায়তায় হাসপাতাল ও বিদ্যালয় বড় হবে, মানুষ সেবা পাবে, গরিবের বাচ্চারা পড়ালেখা শিখবে—এর চেয়ে বড় আনন্দ আমার জীবনে আর কী হতে পারে।’
গত বছরের ২ জুলাই প্রথম আলোর শেষের পাতায় ‘রিকশা চালিয়ে হাসপাতাল’ শিরোনামে বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়। ক্ষয়িষ্ণু এই সমাজে একজন রিকশাচালকের নিষ্ঠা ও একাগ্রতা এবং মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার এই গল্প পড়ে প্রথম আলোর পাঠকেরা অভিভূত, আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
পাঠকদের অনুরোধে ওই বছরে ৪ জুলাই প্রথম আলো ট্রাস্ট/মমতাজ হাসপাতাল নামে তহবিল গঠন করা হয় (হিসাব নম্বর: ২০৭১০০৭৯৫৯, ঢাকা ব্যাংক, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা)। প্রথম আলোর সুহূদ পাঠকেরা মমতাজ হাসপাতালের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
এই অর্থ দিয়ে সহায়তাকারীদের ইচ্ছা অনুযায়ী মমতাজ হাসপাতালের প্রয়োজনীয় এবং পরিকল্পিত উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং অর্থ ব্যয়ের হিসাবও পত্রিকার মাধ্যমে জানানো হবে।
গতকাল সব অর্থ হস্তান্তরের পর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জয়নাল আবেদিন। তিনি বলেন, ‘একসময় রিকশার প্যাডেল চাপতে চাপতে এই হাসপাতাল তৈরির স্বপ্ন দেখতাম। তখন পকেটে ১০০ টাকার একটি নোট আসলে সংসারের চাপ সামলাব, না জমা করার লোভ সামলাব—তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যেতাম। আর এখন আমার হাতে কত টাকা! কিন্তু এ টাকার প্রতি আমার কোনো লোভ লাগে না। আমি শুধু দেখে যেতে চাই, আমার হাসপাতালটা হয়েছে।’
আমাদের ময়মনসিংহ অফিস জানায়, এই তহবিলের বাইরেও জয়নাল আবেদিনের হাসপাতাল ও বিদ্যালয়ের জন্য হাত বাড়িয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাঁদের দেওয়া সরাসরি আর্থিক সহায়তায় মমতাজ হাসপাতাল ও বিদ্যালয়ের জন্য নতুন করে কেনা হয়েছে ৫৯ শতক জমি। বায়না করা হয়েছে আরও ১২১ শতক জমি। সব জমিই কেনা হয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটির নামে।
ঢাকার এক ব্যক্তি দুটি বিদেশি গাভি দিয়েছেন জয়নাল আবেদিনকে। দুধ বিক্রির টাকায় হাসপাতালে আসা রোগীদের বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। একটি ওষুধ কোম্পানি প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকার ওষুধ ও নগদ পাঁচ হাজার করে টাকা দিচ্ছে। চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি কয়েক সপ্তাহ পরপর হাসপাতালের জন্য জরুরি কিছু ওষুধ পাঠান।
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে হাসপাতালের জন্য একটি ভবন করে দিতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একটি স্থায়ী ভবনের জন্য সিলেটর এক ব্যক্তি পাঁচ হাজার ইট কিনে দিয়েছেন।
জয়নাল আবেদিনের বিদ্যালয়টির জন্য নতুন করে টিন দিয়ে আরও দুটি কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম তৃতীয় থেকে উন্নীত করে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত করা হয়েছে। আরও দুজন শিক্ষক নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সব ক্লাসে সরকারি বই সরবরাহ করা হয়েছে। বিদ্যালয়টিকে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে উপজেলা শিক্ষা দপ্তর।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিদ্যালয়টির জন্য একটি ভবন নির্মাণ করতে মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ করেছে।
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ‘গত বছরের ২ নভেম্বর বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী পরিদর্শনে এসে হাসপাতাল ও বিদ্যালয়টির উন্নয়নে কিছু নির্দেশনা দেন। তার আলোকেই আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করছি।’
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুল ইসলাম জানান, মমতাজ হাসপাতালের একটি ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এসব অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘দেশের অনেক মানুষ এখন আমার স্বপ্নের সঙ্গে আছে। প্রথম আলোর উদ্যোগে মানুষের কাছ থেকে পাওয়া টাকায় এবং মন্ত্রী মহোদয়ের সহায়তায় হাসপাতাল ও বিদ্যালয় বড় হবে, মানুষ সেবা পাবে, গরিবের বাচ্চারা পড়ালেখা শিখবে—এর চেয়ে বড় আনন্দ আমার জীবনে আর কী হতে পারে।’
No comments