দুই দু’গুণে পাঁচ-পুনশ্চ হিমশীতল পরশ by আতাউর রহমান
কথাটা এই কলামে এর আগে বলেছি কি না, মনে নেই। দ্বিরুক্তি হলেও দুঃখ প্রকাশ ছাড়া কিছু করার নেই। লেখকেরা সাধারণত দুই শ্রেণীর—মাকড়সা টাইপ ও তাঁতি টাইপ। মাকড়সা তার নাভি থেকে সুতা বের করে জাল বোনে, যে কারণে মাকড়সার অপর নাম হচ্ছে ঊর্ণনাভ।
আর তাঁতি বাইরে থেকে সুতা এনে বস্ত্র তৈরি করে থাকেন। এককথায়, মাকড়সা হচ্ছে স্বনির্ভর আর তাঁতী পরনির্ভর। তবে তাঁতি সুতা উদ্বৃত্ত হলে সেটা ফেলে দেন না, নতুন আরেকটি বস্ত্র তৈরির প্রয়াস পান।
বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। গত কিস্তির লেখায় মৃত্যু সম্পর্কে বলতে গিয়ে আমি মাত্র দুজন বরেণ্য ব্যক্তির সরস (স+রস) কথার উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম। এক্ষণে দেখা যাচ্ছে, আমার নোটবুকে এ-সম্পর্কিত আরও কিছু সরস মন্তব্য লিপিবদ্ধ আছে। এই যেমন—হজরত আলী (র.) বলেছেন, ‘মৃত্যুর মতো সত্য নেই, আশার মতো মিথ্যা নেই।’ মহাকবি মিল্টন বলেছেন, ‘অসীমের দরজা খোলার স্বর্ণচাবি হচ্ছে মৃত্যু।’ জুলিয়াস সিজার বলেছেন, ‘সাহসী লোকেরা একবারই মরে আর কাপুরুষেরা মরে বারবার।’ জোসেফ স্ট্যালিন বলেছেন, ‘একজনের মৃত্যু একটি ট্র্যাজেডি, এক মিলিয়নের মৃত্যু একটি পরিসংখ্যান।’ সর্বোপরি, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন নাকি বলেছেন, ‘এই পৃথিবীতে কোনো কিছুই সুনিশ্চিত নয়, কেবল মৃত্যু আর ট্যাক্স ছাড়া।’
যা হোক, গত কিস্তির লেখায় আমি মৃত্যুসম্পর্কিত তিনটি তরল গল্প পরিবেশন করেছিলাম। এবার আরও তিনটি গল্প পেশ করছি:
প্রথম গল্পটি আমি রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে লেবার কাউন্সিলর পদে থাকাকালে সৌদি ইংরেজি দৈনিক আরব নিউজ-এর পাতায় পড়েছিলাম—ওখানকার একটি হাসপাতালের এক চিকি ৎসক আরব আর নার্স ব্রিটিশ। তো চিকি ৎসক একটি ওয়ার্ডে মৃত্যুপথযাত্রী জনৈক রোগীকে দেখে অন্য ওয়ার্ডে গেছেন। এমন সময় নার্স হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বললেন, ডক্টর, ডক্টর, দ্য পেশেন্ট হ্যাজ কিকড দ্য বাকেট, বাংলায় যেটার অর্থ দাঁড়ায়—রোগী পটল তুলেছে। কিন্তু ওই চিকি ৎসকের ইংরেজির জ্ঞান সীমিত, তিনি বিস্মিত হয়ে নার্সকে প্রত্যুত্তরে ইংরেজিতে যা বললেন সেটার মর্মার্থ হলো, ‘পাঁচ মিনিট আগে তাকে আমি দেখলাম মরমর। সে এত শক্তি কোথায় পেল যে বালতিতে লাথি মেরে দিল?’
দ্বিতীয় গল্পটি আমাকে বলেছিলেন সেখানকার ত ৎকালীন রাষ্ট্রদূত সি এম শফি সামি, যিনি পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও হয়েছিলেন—এক যুবকের মাথার কয়েকটি নাটবল্টু হঠা ৎ একসঙ্গে লুজ হয়ে যাওয়ায় সে দাবি করতে লাগল, সে মৃত। তাকে যখন কিছুতেই সে জীবিত বলে বিশ্বাস করানো যাচ্ছিল না, তখন একদিন এক সহূদয় চিকি ৎসক তাকে বললেন, ‘আচ্ছা, মরা মানুষের শরীরে রক্ত থাকে না, এটা তুমি বিশ্বাস করো তো?’ সে জবাব দিল, ‘তা করি বটে।’ অতঃপর তিনি সিরিঞ্জ দিয়ে তার শরীর থেকে আধা সিরিঞ্জ রক্ত বের করতেই সে বলে উঠল, ‘এত দিন জানতাম, মরা মানুষের শরীরে রক্ত থাকে না, আজ জানলাম, মরা মানুষের শরীরেও রক্ত থাকে।’ চিকি ৎসকের প্রচেষ্টা মাঠে মারা গেল।
তৃতীয় গল্পটি পারস্য সাহিত্যের রত্নভান্ডার থেকে নেওয়া, যে ভান্ডার থেকে প্রসঙ্গত ‘মার্জার নিধন’ তথা ‘বিয়ের প্রথম রাতে বিড়াল মারিবে’ শীর্ষক রসগল্পটি সুদূর অতীতে সৈয়দ মুজতবা আলী কর্তৃক আহরিত হয়েছিল—একদা একজন সম্পদশালী আরব ব্যবসার প্রয়োজনে মক্কা ও সিরিয়ার মধ্যে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। তো একবার বাড়ি ফেরার পথে এক দিনের রাস্তা অবশিষ্ট থাকতে তিনি মরুভূমিতে একটি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহণকালে খাবারের ডিব্বা খুলতেই এক ক্ষুধার্ত বেদুইন এসে উপস্থিত হলো। ব্যবসায়ীর জিজ্ঞাসার জবাবে বেদুইন জানালেন, তিনি তাঁরই বাড়ির নতুন চাকর এবং তাঁরই খোঁজে এতটা পথ মরুভূমি অতিক্রম করে এসেছেন। বাড়ির খবরাখবর জানার জন্য উদ্গ্রীব ছিলেন বিধায় তিনি ক্রমাগত প্রশ্ন করে তাঁর কাছ থেকে জেনে নিলেন, তাঁর স্ত্রী, একমাত্র পুত্র, উট ও বাড়ির পাহারাদার কুকুর সবাই কুশলে আছে। অতঃপর পরম পরিতৃপ্তির সঙ্গে তিনি খাওয়া শুরু করলেন, কিন্তু বেদুইনকে শরিক হতে বললেন না।
বেদুইনি তাঁর এই হীনতায় ক্ষুব্ধ হয়ে ভাবল, এবার ভোল পাল্টানো দরকার। মরুভূমির প্রান্ত দিয়ে একটি হরিণ ছুটে পালাচ্ছিল দেখে সে বলে উঠল, ‘হায় রে! আপনার কুকুরটা বেঁচে থাকলে এভাবে হরিণটাকে পালিয়ে যেতে দিত না।’ ‘হায় হায়! কুকুরটা কীভাবে মারা গেল?’ তিনি খাওয়া থামিয়ে প্রশ্ন করলেন। ‘আপনার উটের মাংস অত্যধিক ভোজনের কারণেই’—উত্তর এল। এবং ‘কে আমার উটটাকে মারল?’ এবার প্রশ্ন হলো।
‘আপনার স্ত্রীর শেষকৃত্যে উটটাকে জবাই করা হয়েছিল।’ আবার উত্তর এল। ‘হায় হায়! আমার স্ত্রী কীভাবে মারা গেলেন?’ ‘তিনি মারা যান আপনার ছেলের মৃত্যুশোকে, যার ওপর আপনার প্রাসাদসম অট্টালিকার একাংশ ভেঙে পড়ায় তাঁর মৃত্যু ঘটেছিল।’
ব্যবসায়ী আরব এ পর্যন্ত শুনেই খাওয়া পরিত্যাগ করে ত ৎক্ষণা ৎ আলুথালু বেশে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। আর বেদুইনটি তখন মনের সুখে তাঁর পরিত্যক্ত খাবার খেয়ে ঢেঁকুর তুলতে লাগল।
যাক গে। আমাদের এক খ্যাতনামা সাংবাদিক একবার পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন, যেটার শিরোনাম ছিল ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’। তো দেশে বর্তমানে স্বাভাবিক মৃত্যুর সংজ্ঞা হচ্ছে, ‘যানবাহনের দ্বারা মৃত্যু।’ আর আমাদের দেশের এক স্কুলছাত্র নাকি পরীক্ষার খাতায় লিখেছিল, ‘একটি স্বাভাবিক মৃত্যু হচ্ছে যখন আপনি ডাক্তারের সাহায্য ছাড়া মারা যান।’ তার এ কথাটাও ভেবে দেখার মতো।
ধর্ম ও জাতিভেদে কবরে শায়িত মৃত ব্যক্তির প্রতি জীবিতদের ব্যবহারও হয়ে থাকে ভিন্ন—চীনারা যেমন কবরের পাশে ভাত রেখে আসে। এ-সম্পর্কিত মজার গল্প—আমেরিকার এক কবরস্থানে দুজন সাদা আমেরিকান মৃত বন্ধুর কবরে ফুলের তোড়া রেখে চলে আসার সময় কবরস্থানের অন্যত্র ওরা দেখতে পেল, একজন চায়নিজ তার স্বদেশি ভাইয়ের কবরে কিছু ভাত রাখছে। আমেরিকানদের একজন তখন চায়নিজটিকে প্রশ্ন করে বসল, ‘কখন তোমার বন্ধু এই ভাতগুলো খাবে বলে তুমি আশা করছো?’
‘যখন তোমাদের বন্ধু তোমাদের দেওয়া ফুলগুলোর ঘ্রাণ শুঁকবে, তখন’ ঝটপট চায়নিজের জবাব বেরিয়ে এল।
আতাউর রহমান: রম্য লেখক। ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক।
বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। গত কিস্তির লেখায় মৃত্যু সম্পর্কে বলতে গিয়ে আমি মাত্র দুজন বরেণ্য ব্যক্তির সরস (স+রস) কথার উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম। এক্ষণে দেখা যাচ্ছে, আমার নোটবুকে এ-সম্পর্কিত আরও কিছু সরস মন্তব্য লিপিবদ্ধ আছে। এই যেমন—হজরত আলী (র.) বলেছেন, ‘মৃত্যুর মতো সত্য নেই, আশার মতো মিথ্যা নেই।’ মহাকবি মিল্টন বলেছেন, ‘অসীমের দরজা খোলার স্বর্ণচাবি হচ্ছে মৃত্যু।’ জুলিয়াস সিজার বলেছেন, ‘সাহসী লোকেরা একবারই মরে আর কাপুরুষেরা মরে বারবার।’ জোসেফ স্ট্যালিন বলেছেন, ‘একজনের মৃত্যু একটি ট্র্যাজেডি, এক মিলিয়নের মৃত্যু একটি পরিসংখ্যান।’ সর্বোপরি, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন নাকি বলেছেন, ‘এই পৃথিবীতে কোনো কিছুই সুনিশ্চিত নয়, কেবল মৃত্যু আর ট্যাক্স ছাড়া।’
যা হোক, গত কিস্তির লেখায় আমি মৃত্যুসম্পর্কিত তিনটি তরল গল্প পরিবেশন করেছিলাম। এবার আরও তিনটি গল্প পেশ করছি:
প্রথম গল্পটি আমি রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে লেবার কাউন্সিলর পদে থাকাকালে সৌদি ইংরেজি দৈনিক আরব নিউজ-এর পাতায় পড়েছিলাম—ওখানকার একটি হাসপাতালের এক চিকি ৎসক আরব আর নার্স ব্রিটিশ। তো চিকি ৎসক একটি ওয়ার্ডে মৃত্যুপথযাত্রী জনৈক রোগীকে দেখে অন্য ওয়ার্ডে গেছেন। এমন সময় নার্স হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বললেন, ডক্টর, ডক্টর, দ্য পেশেন্ট হ্যাজ কিকড দ্য বাকেট, বাংলায় যেটার অর্থ দাঁড়ায়—রোগী পটল তুলেছে। কিন্তু ওই চিকি ৎসকের ইংরেজির জ্ঞান সীমিত, তিনি বিস্মিত হয়ে নার্সকে প্রত্যুত্তরে ইংরেজিতে যা বললেন সেটার মর্মার্থ হলো, ‘পাঁচ মিনিট আগে তাকে আমি দেখলাম মরমর। সে এত শক্তি কোথায় পেল যে বালতিতে লাথি মেরে দিল?’
দ্বিতীয় গল্পটি আমাকে বলেছিলেন সেখানকার ত ৎকালীন রাষ্ট্রদূত সি এম শফি সামি, যিনি পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও হয়েছিলেন—এক যুবকের মাথার কয়েকটি নাটবল্টু হঠা ৎ একসঙ্গে লুজ হয়ে যাওয়ায় সে দাবি করতে লাগল, সে মৃত। তাকে যখন কিছুতেই সে জীবিত বলে বিশ্বাস করানো যাচ্ছিল না, তখন একদিন এক সহূদয় চিকি ৎসক তাকে বললেন, ‘আচ্ছা, মরা মানুষের শরীরে রক্ত থাকে না, এটা তুমি বিশ্বাস করো তো?’ সে জবাব দিল, ‘তা করি বটে।’ অতঃপর তিনি সিরিঞ্জ দিয়ে তার শরীর থেকে আধা সিরিঞ্জ রক্ত বের করতেই সে বলে উঠল, ‘এত দিন জানতাম, মরা মানুষের শরীরে রক্ত থাকে না, আজ জানলাম, মরা মানুষের শরীরেও রক্ত থাকে।’ চিকি ৎসকের প্রচেষ্টা মাঠে মারা গেল।
তৃতীয় গল্পটি পারস্য সাহিত্যের রত্নভান্ডার থেকে নেওয়া, যে ভান্ডার থেকে প্রসঙ্গত ‘মার্জার নিধন’ তথা ‘বিয়ের প্রথম রাতে বিড়াল মারিবে’ শীর্ষক রসগল্পটি সুদূর অতীতে সৈয়দ মুজতবা আলী কর্তৃক আহরিত হয়েছিল—একদা একজন সম্পদশালী আরব ব্যবসার প্রয়োজনে মক্কা ও সিরিয়ার মধ্যে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। তো একবার বাড়ি ফেরার পথে এক দিনের রাস্তা অবশিষ্ট থাকতে তিনি মরুভূমিতে একটি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহণকালে খাবারের ডিব্বা খুলতেই এক ক্ষুধার্ত বেদুইন এসে উপস্থিত হলো। ব্যবসায়ীর জিজ্ঞাসার জবাবে বেদুইন জানালেন, তিনি তাঁরই বাড়ির নতুন চাকর এবং তাঁরই খোঁজে এতটা পথ মরুভূমি অতিক্রম করে এসেছেন। বাড়ির খবরাখবর জানার জন্য উদ্গ্রীব ছিলেন বিধায় তিনি ক্রমাগত প্রশ্ন করে তাঁর কাছ থেকে জেনে নিলেন, তাঁর স্ত্রী, একমাত্র পুত্র, উট ও বাড়ির পাহারাদার কুকুর সবাই কুশলে আছে। অতঃপর পরম পরিতৃপ্তির সঙ্গে তিনি খাওয়া শুরু করলেন, কিন্তু বেদুইনকে শরিক হতে বললেন না।
বেদুইনি তাঁর এই হীনতায় ক্ষুব্ধ হয়ে ভাবল, এবার ভোল পাল্টানো দরকার। মরুভূমির প্রান্ত দিয়ে একটি হরিণ ছুটে পালাচ্ছিল দেখে সে বলে উঠল, ‘হায় রে! আপনার কুকুরটা বেঁচে থাকলে এভাবে হরিণটাকে পালিয়ে যেতে দিত না।’ ‘হায় হায়! কুকুরটা কীভাবে মারা গেল?’ তিনি খাওয়া থামিয়ে প্রশ্ন করলেন। ‘আপনার উটের মাংস অত্যধিক ভোজনের কারণেই’—উত্তর এল। এবং ‘কে আমার উটটাকে মারল?’ এবার প্রশ্ন হলো।
‘আপনার স্ত্রীর শেষকৃত্যে উটটাকে জবাই করা হয়েছিল।’ আবার উত্তর এল। ‘হায় হায়! আমার স্ত্রী কীভাবে মারা গেলেন?’ ‘তিনি মারা যান আপনার ছেলের মৃত্যুশোকে, যার ওপর আপনার প্রাসাদসম অট্টালিকার একাংশ ভেঙে পড়ায় তাঁর মৃত্যু ঘটেছিল।’
ব্যবসায়ী আরব এ পর্যন্ত শুনেই খাওয়া পরিত্যাগ করে ত ৎক্ষণা ৎ আলুথালু বেশে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। আর বেদুইনটি তখন মনের সুখে তাঁর পরিত্যক্ত খাবার খেয়ে ঢেঁকুর তুলতে লাগল।
যাক গে। আমাদের এক খ্যাতনামা সাংবাদিক একবার পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন, যেটার শিরোনাম ছিল ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’। তো দেশে বর্তমানে স্বাভাবিক মৃত্যুর সংজ্ঞা হচ্ছে, ‘যানবাহনের দ্বারা মৃত্যু।’ আর আমাদের দেশের এক স্কুলছাত্র নাকি পরীক্ষার খাতায় লিখেছিল, ‘একটি স্বাভাবিক মৃত্যু হচ্ছে যখন আপনি ডাক্তারের সাহায্য ছাড়া মারা যান।’ তার এ কথাটাও ভেবে দেখার মতো।
ধর্ম ও জাতিভেদে কবরে শায়িত মৃত ব্যক্তির প্রতি জীবিতদের ব্যবহারও হয়ে থাকে ভিন্ন—চীনারা যেমন কবরের পাশে ভাত রেখে আসে। এ-সম্পর্কিত মজার গল্প—আমেরিকার এক কবরস্থানে দুজন সাদা আমেরিকান মৃত বন্ধুর কবরে ফুলের তোড়া রেখে চলে আসার সময় কবরস্থানের অন্যত্র ওরা দেখতে পেল, একজন চায়নিজ তার স্বদেশি ভাইয়ের কবরে কিছু ভাত রাখছে। আমেরিকানদের একজন তখন চায়নিজটিকে প্রশ্ন করে বসল, ‘কখন তোমার বন্ধু এই ভাতগুলো খাবে বলে তুমি আশা করছো?’
‘যখন তোমাদের বন্ধু তোমাদের দেওয়া ফুলগুলোর ঘ্রাণ শুঁকবে, তখন’ ঝটপট চায়নিজের জবাব বেরিয়ে এল।
আতাউর রহমান: রম্য লেখক। ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক।
No comments