একরাম বাহিনীর’ প্রথম আলো লোপাট-অন্ধ হলেই কি প্রলয় বন্ধ থাকে

ক্ষমতান্ধ ব্যক্তিদের আচরণ প্রায়ই প্রবাদের মতো হয়। প্রবাদ ছিল, অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ থাকে না। প্রবাদ আছে, উটপাখি ঝড়ের ভয়ে বালুতে মুখ লুকিয়ে ভাবে, ঝড় তার গায়ে লাগছে না। নোয়াখালীর সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর লোকজন প্রবাদ-কথিত সেই অর্বাচীনতাই করছে। তারা ‘নোয়াখালীতে সাংসদ একরামের “খলিফার শাসন”!


’ শীর্ষক খবরসংবলিত প্রথম আলোর সব কপি লোপাট করে দিয়েছে। তারা ভেবেছে, প্রথম আলো পড়তে না দিলেই তাদের মুখোশ অটুট থাকবে, মানুষ কিছু জানবে না। অথচ ঘটেছে উল্টোটা।
গত শুক্রবারের প্রথম আলো নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় পৌঁছানো মাত্রই এজেন্টদের কাছ থেকে পত্রিকার সব কপি কিনে নেওয়া হয়। যারা এ কাজ করেছে তারা ভেবেছিল, এতে নোয়াখালীর মানুষ সাংসদ একরাম ও তাঁর ‘খলিফা’দের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অন্ধকারেই থেকে যাবে। কিন্তু প্রথম আলোর পাঠকসহ স্থানীয় অনেক মানুষই এ ঘটনায় অবাক হয়ে আরও বেশি আগ্রহ নিয়ে প্রথম আলোর সন্ধানে নামেন। এলাকার বিভিন্ন ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে ভিড় জমিয়ে অনেকেই আলোচিত সংবাদটির প্রিন্ট নেন কিংবা কপি করে সংগ্রহ করেন।
একবিংশ শতাব্দীতে বসে, যেখানে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের গোপন প্রতিবেদনগুলোও ফাঁস হয়ে যাচ্ছে, যেখানে মানুষের জানার সুযোগ অবারিত, সেখানে তিন হাজার পত্রিকা গায়েব করলেই কি সত্যের প্রচার বন্ধ থাকতে পারে? তাদের এই পত্রিকা গায়েব উটপাখির মতোই বৃথাই বালুতে মুখ লুকিয়ে বাঁচার চেষ্টা। তারা নিজেরা এ বিষয়ে অন্ধ থাকতে চাইলে থাকতে পারে, কিন্তু তাতে তো মানুষ অন্ধ হয়ে যাবে না।
আমরা এ ধরনের প্রতিহিংসামূলক কার্যকলাপকে বেআইনি মনে করি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর উচিত এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা। অতীতেও বিভিন্ন কায়েমি গোষ্ঠী প্রথম আলোর সব পত্রিকা কিনে নিয়ে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে চেয়েছিল। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই এবং প্রথম আলোর সঙ্গে পাঠকদের দূরত্ব তৈরির অপচেষ্টার শাস্তি চাই।

No comments

Powered by Blogger.