প্রাকৃতিক দুর্যোগ-ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিরসনে কিছু প্রস্তাব by মেহেদী আহমেদ আনসারী

বাংলাদেশ ও এর আশপাশের এলাকায় ১৭৬২ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত মোট নয়টি বড় ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় সংঘটিত ৬ দশমিক ৮ মাত্রার সিকিম ভূমিকম্প ঢাকাসহ বাংলাদেশের সব মানুষকে যথেষ্ট আতঙ্কিত করেছে, যদিও এই ভূমিকম্পে বাংলাদেশে তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে একই মাত্রার ভূমিকম্পে এ দেশে ভবিষ্যতে যথেষ্ট ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিরসনের কিছু প্রস্তাব তুলে ধরতে চাই।


ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য একাধিক সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থাকলেও একটি সমন্বিত ও আর্থিক-কারিগরিভাবে সমৃদ্ধ প্রয়াসের অভাব সব সময়ই লক্ষ করা যায়। প্রস্তুতি এবং উদ্ধারকাজ হলো দুর্যোগ মোকাবিলা করার প্রধান দুটি অংশ। যেকোনো দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজে সময়ক্ষেপণ ও পূর্ণ দায়বদ্ধতার অভাব দেখা যায়। সরকারি বিশেষায়িত সংস্থাগুলোর মধ্যে যদি আন্তরিকতার অভাব না-ও থাকে, তাতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সরঞ্জামের তীব্র অভাব ও সিদ্ধান্তহীনতা আশঙ্কাজনকভাবে লক্ষণীয়। র‌্যাংগস ভবনের ঘটনা এত দ্রুত আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়, সেটা ছিল মাত্র একটি স্থাপনার ক্ষেত্রে। কিন্তু বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা হয়তো ৫০ হাজার থেকে লাখের কোটায় পৌঁছাবে। ২০০৫ সালের স্পেকট্রা গার্মেন্টস ও ২০০৪ সালের শাঁখারীবাজারের ঘটনা একইভাবে স্মরণীয়।
আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়ছে নিচের কারণগুলোর জন্য:
ক. ভূমিকম্পের আগে: ১. ভালোভাবে ডিজাইন না করা তথা ভূমিকম্পরোধী ডিজাইন না করা; ২. নির্মাণকাজের তত্ত্বাবধানে অবহেলা; ৩. নিম্নমানের উপকরণের ব্যবহার; ৪. অননুমোদিত ফ্লোর বাড়ানো; ৫. দুর্বল মাটিকে শক্তিশালী না করেই ভবন নির্মাণ ইত্যাদি।
খ. ভূমিকম্পের পরে: ১. ভবনের সংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল সরঞ্জাম; ২. ভবনের চারদিকে অপর্যাপ্ত জায়গা এবং সরু রাস্তা; ৩. উদ্ধারকাজে পর্যাপ্ত কারিগরি জ্ঞানের অভাব; ৪. গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সংযোগের অবিন্যস্ত অবস্থা, যা ভূমিকম্পের পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জন্ম দিতে পারে; আবার আগুন প্রতিরোধেও আমরা যেকোনোভাবেই প্রস্তুত নই, তা বর্তমানে বারবারই দেখা যাচ্ছে। অবহেলা ও অপ্রস্তুতির কারণে এই বিশাল দুর্যোগের সামনে আমরা অনেকটাই অসহায়। জুন ২০১০ সালের নিমতলী, ২০০৮ সালের বসুন্ধরা, ২০০৫ সালের চট্টগ্রামের কেটিএস ঘটনার কথা ভুললে চলবে না।
বর্তমান অবস্থায় ঢাকায় ভবনগুলোর গাঠনিক দুর্বলতা, চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল-বিন্যাস এবং উদ্ধার উপকরণের অভাবের কারণে বলা যায় যে বড় মাপের ভূমিকম্প হলে ঢাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশেরই উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাব্যতা খুব কম। তাই প্রস্তুতিই হলো পরিত্রাণের একমাত্র উপায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ দেশে ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড বা অন্য যেকোনো দুর্ঘটনায় প্রাণহানির অব্যবহিত পরে গণমাধ্যম ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোয় যে অনুপাতে কর্মতৎপরতা দেখা যায়, তার সিকি ভাগও দীর্ঘমেয়াদে দেখা যায় না। অথচ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও সুসংগঠিত কার্যক্রম ছাড়া শুধু ‘শক্তিশালী’ তদন্ত কমিটি তৈরি ও তার অসূর্যম্পশ্যা তদন্ত প্রতিবেদন অবশ্যম্ভাবী ধ্বংসযজ্ঞ থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারবে না।
বর্তমানে নির্মীয়মাণ ও ভবিষ্যৎ স্থাপনাগুলোতে যেন যথাযথভাবে ডিজাইন ও মানসম্পন্নভাবে নির্মাণ করা হয়, সেদিকে কঠোর নজরদারি এবং তার জন্য গণসচেতনতা ও সরকারি সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রক তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন। এই নিবন্ধনের মূল দৃষ্টি থাকবে ঢাকার বর্তমানের তৈরি ভবনগুলোর দিকে। কেননা দেখা গেছে, তৈরি ভবনগুলোতে এ ধরনের ভূমিকম্পরোধী ব্যবস্থা নেওয়া আইনগত ও প্রকৌশলগতভাবে অনেক কঠিন। সরকারি সংস্থাগুলোর চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের বেশ কিছু সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়, যা পুরো প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব সংস্থায় দুর্নীতির পাশাপাশি আইনগতভাবে অভিযান চালানো অনেক সময়সাপেক্ষ। তদুপরি সরকারি সংস্থাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার ওপর মানুষের আস্থা ও অংশগ্রহণের তীব্র অভাব পরিলক্ষিত হয়। সে কারণে একটি বিকল্প ব্যবস্থায় মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
এই বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে একটি বিশেষায়িত ও স্বায়ত্তশাসিত কমিশন তথা বাংলাদেশ ভূমিকম্প কমিশন। এই কমিশনের কাজ হবে মূলত প্রকৌশলগত পরামর্শ ও সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করা। আগেই সংস্থাটি দেশি-বিদেশি (এনআরবি) বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে তৈরি হতে পারে। কাজের ব্যাপকতার কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্তসংখ্যক জনবল ও কারিগরি-সুবিধা বরাদ্দ করা প্রয়োজন। সংস্থাটির কাজ হবে মূলত তিনটি দিকে: ১. স্থাপনা পরীক্ষা করা, ২. দুর্বল স্থাপনা শক্তিশালী করার জন্য কারিগরি পরামর্শ দেওয়া ও ৩. প্রতিটি স্থাপনার ঝুঁকিমাত্রা বিবেচনা করে একটি রেটিং দেওয়া বা গ্রেডভুক্ত করা। এ ধরনের সংস্থা বিরল নয়। উদাহরণস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া সাইসমিক সেফটি কমিশনের কথা বলা যেতে পারে। ১৯৭৫ সালে সাইসমিক সেফটি অ্যাক্টের মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়। এর সূচনাতেই এটি তৈরির উদ্দেশ্য বলে দেওয়া আছে। প্রথমত, বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সংস্থা নানা রকম ভূমিকম্পরোধী কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে; দ্বিতীয়ত, (তা সত্ত্বেও) ভূমিকম্পের ঝুঁকি রোধে একটি সুনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা এবং সব সরকারি-বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি, যা বর্তমানে কোনো সংগঠন দ্বারা সম্পন্ন হচ্ছে না; তৃতীয়ত, দীর্ঘ মেয়াদে ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস এবং চতুর্থত, আইনানুগভাবে নির্দেশিত অন্য সংস্থার কাজ ও দায়িত্ব এ কমিশনের ওপর বর্তাবে না।
প্রস্তাবিত এই কমিশনের সম্ভাব্য কাজগুলো সম্পর্কে সামান্য আলোচনা করা যেতে পারে। কোনো ভবন পরীক্ষা করার জন্য দুটি দিক দেখতে হয়। প্রথমত, ভবনটি যে উপকরণ দিয়ে তৈরি তার মান ও বর্তমান সামর্থ্য; দ্বিতীয়ত, পুরো ভবনের অবস্থা তথা তা ভূমিকম্পের সময় কেমন আচরণ করবে। প্রথমটির আমরা মূলত এনডিটি (নন-ডেসট্রাকটিভ টেস্টিং) ব্যবহার করি, যা কিনা উপকরণটি (কংক্রিট, স্টিল) যেখানে যে অবস্থায় আছে, তাকে স্থানচ্যুত না করে এবং না ভেঙে তার ভারবহন অবস্থানসহ অন্যান্য গুণ পরীক্ষা করা যায়। সৌভাগ্যের বিষয় হলো, এর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ আমাদের দেশে মোটামুটিভাবে পাওয়া যায়। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোও এ ধরনের যন্ত্রের ব্যবহারের সঙ্গে পরিচিত। তাই বলা চলে, পর্যাপ্তসংখ্যক না থাকলেও প্রথম উদ্দেশ্যটি সাধনের জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও যন্ত্রের সঙ্গে পরিচিতি দেশেই রয়েছে। দ্বিতীয়টির জন্যই মূলত বিশেষজ্ঞের বেশি প্রয়োজন। কেননা, ভূমিকম্পের সময় স্থাপনার আচরণের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য বেশ জটিল কম্পিউটার মডেলিং করার প্রয়োজন, যা ভালো বিশেষজ্ঞ ছাড়া সম্ভব নয়। শক্তিশালী উপকরণ সব সময় শক্তিশালী স্থাপনা নির্দেশ করে, তা কিন্তু একদমই নয়। স্থাপনার আকার, উচ্চতা, ব্যবহার, কলাম ও বিমের আকার এবং দূরত্ব—এমন অসংখ্য বিষয় এখানে বিবেচ্য। এর কারণে একটি প্যানেল প্রয়োজন, যাঁরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। পুরো প্রক্রিয়ার সবচেয়ে জটিল শ্রমসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ অংশ এটিই। আবার দুর্বল স্থাপনা শক্তিশালী করার জন্য একইভাবে মডেলিং করে তারপর কোন কোন স্থান নতুনভাবে শক্তিশালী করা প্রয়োজন, তার পরামর্শ দিতে হবে। এ অংশটিও যথেষ্ট জটিল ও বিশেষজ্ঞের সাহায্যের প্রয়োজন।
তৃতীয় পয়েন্টে প্রতিটি ভবনের একটি রেটিং দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি বলা সহজ হলেও কার্যকর করা অত্যন্ত কঠিন। কেননা, স্থাপনায় ঝুঁকির মাত্রা হিসাবের জন্য অসংখ্য তথ্য সন্নিহিত করে তারপর এই রেটিং দেওয়া যাবে। তবে কঠিন হলেও এটা করা গেলে তা হবে গণসচেতনতা এবং উপলব্ধির দিক দিয়ে এক বিশাল অর্জন। সংস্থাটি যখন কোনো স্থাপনার অবস্থা যাচাই করবে, তখন ওই স্থাপনা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে, যা ইন্টারনেটে ও পুস্তিকা আকারে পাওয়া যাবে। একইভাবে কোনো স্থাপনাকে দেওয়া রেটিং ওই স্থাপনার সামনে প্রদর্শিত হতে হবে। তাহলে বাড়ির মালিক বা অধিবাসীরা ওই বাড়িতে বাস করা বা অন্য কাজে ব্যবহার করার ব্যাপারেও সজ্ঞান সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটা করা গেলে যে সচেতনতার মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পাবে, তা সহজেই অনুধাবন করা যায়। আদেশ বা জবরদস্তি নয়, সহযোগিতা ও উপকার করার মনোভাবই এই বিশাল কাজে সবার অংশ নেওয়া নিশ্চিত করতে পারে।
বাংলাদেশে অনেক সংস্থাই ভূমিকম্প গবেষণা ও গণসচেতনতার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে ফায়ার সার্ভিস, রাজউক, দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয়, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বুয়েটসহ অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে অনেক দিন ধরে গবেষণা চালাচ্ছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের বেশ বড় আকারের বেসরকারি প্রকৌশল সেক্টরে বহু বিশেষজ্ঞ কর্মরত আছেন। এর সঙ্গে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রকৌশলীরা দেশের প্রয়োজনে সাড়া দেবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। সে কারণে প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ জনবলের একটি বড় অংশ আমাদের দেশেই প্রস্তুত আছে বলে ধরা যেতে পারে।
এই বিশাল কাজে সরকারের অংশগ্রহণ মূলত আর্থিক এবং আইনি। যেহেতু পুরান ঢাকা ও নতুন ঢাকা মিলিয়ে সাড়ে তিন লাখ স্থাপনা আছে, কাজের মাত্রা হবে অত্যধিক। এর পাশাপাশি ঢাকা বাদে ঘন জনবসতিপূর্ণ ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেশি, এমন অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত করলে যে বিশালসংখ্যক জনবল ও বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন হবে, তার পৃষ্ঠপোষকতার জন্য সরকারি আন্তরিকতা খুবই জরুরি। তবে এ কমিশনের কাজ কোনোভাবেই কোনো ভবনকে বৈধ বা অবৈধ ঘোষণা করা নয় বা কোনো ভবনকে ধ্বংস করার আদেশও এ কমিশন দেবে না। মোট কথা, কমিশন প্রণীত রেটিংয়ের কোনো আইনি ভিত্তি থাকবে না। এই কমিশনের কাজ হবে শুধু জনগণকে পরামর্শ দেওয়া এবং সচেতন করা। সাধারণ মানুষ যদি ভয় পেয়ে দূরে থাকে তাহলে কোনোভাবেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব নয়। তবে যেকোনো ভবনে প্রবেশাধিকার ও প্রদত্ত রেটিং দৃষ্টিগ্রাহ্য স্থানে প্রদর্শনের জন্য আইন করা প্রয়োজন।
যদি মানুষের সমর্থন ও সহযোগিতা নিশ্চিত করা না যায়, তবে এই বিশাল কাজের সাফল্যের সম্ভাবনা একদমই শূন্য। অধিবাসীরা যতক্ষণ না চাইবে, সরকারের সর্বোচ্চ শক্তি ও আগ্রহ দিয়েও কিছু করা সম্ভব হবে না। এ জন্য সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হলো, গণমাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরির অব্যাহত প্রয়াস। আগের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, একটি বড় ভূমিকম্পের পরপরই এই নিবন্ধের মতো আরও অনেক নিবন্ধ ছাপা হয়। এতে মানুষ সাময়িকভাবে চিন্তা করে, আতঙ্কিত হয়; কিন্তু অব্যাহতভাবে মনে না করিয়ে দেওয়ার ফলে সবাই কিছুদিনের মধ্যেই তা ভুলে যায়। চলমান কোনো প্রয়াসের অনুপস্থিতিই মানুষের অসচেতনতার জন্য দায়ী।
বাংলাদেশের শক্তিশালী ও গণপ্রসারী মিডিয়ার সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের কোনো কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। আশার কথা এই যে সামাজিক আন্দোলনগুলোতে মিডিয়ার আগ্রহ ও লেগে থাকার মনোভাব দেখা যায়। সবার জন্য শিক্ষা আন্দোলন, যৌতুকবিরোধী আন্দোলন, মাদকবিরোধী আন্দোলনসহ অসংখ্য ভালো কাজে জনসমর্থন আদায় এবং সংগঠিত করার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের তরুণ মিডিয়ার রয়েছে। প্রস্তাবিত কমিশনের কাজে মানুষের সমর্থনই হলো মূল চালিকাশক্তি। মিডিয়াই পারে এই বিশাল কর্মযজ্ঞে মানুষের আস্থা ও সমর্থন জোগাড় করে দিতে। এই সহযোগিতাটুকু অব্যাহতভাবে পেলে আপাতদৃষ্টিতে জটিল ও বিশাল এ কাজটি সম্পন্ন করা কঠিন হবে না বলে আশা করা যায়।
পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গণমাধ্যম ও সংগঠনগুলো মিলে একটি সুসংগঠিত ও অব্যাহত সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে পারে। একটি বিশাল সামাজিক আন্দোলন ছাড়া এই সংকটময় অবস্থা থেকে আমাদের উত্তরণ অসম্ভব।
মেহেদী আহমেদ আনসারী: অধ্যাপক, পুরকৌশল বিভাগ, বুয়েট; বাংলাদেশ ভূমিকম্প সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসচিব এবং ওয়ার্ল্ড সাইসমিক সেফটি ইনিশিয়েটিভের (ডব্লিউএসএসআই) অন্যতম পরিচালক।

No comments

Powered by Blogger.