নিউজিল্যান্ডে ভালোবাসার পদযাত্রা
অনন্য
নজির স্থাপন করেছে নিউজিল্যান্ড। গত সপ্তাহের শুক্রবারে ক্রাইস্টচার্চে
কমপক্ষে ৫০ মুসল্লিকে হত্যার ঘটনায় নিউজিল্যান্ডের জাতি, ধর্ম-বর্ণ
নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নিন্দা জানিয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার সারা দেশে ২ মিনিটের নীরবতা পালনের পর গতকাল শনিবার
ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর লাভ’ র্যালি। এতে অংশ নিয়েছেন
কমপক্ষে ৩০০০ মানুষ। ক্রাইস্টচার্চে হত্যাকাণ্ডের শিকার ৫০ মুসল্লির প্রতি
শ্রদ্ধা জানিয়ে মার্চ ফর র্যালি বা ভালোবাসার পদযাত্রা বের হয় শনিবার
সকালে। সন্ত্রাসী ব্রেনটন টেরেন্টের উদ্দেশে এ র্যালিতে বহন করা হয়
প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা- ‘হি ওয়ানটেড টু ডিভাইড আস, হি অনলি মেইড আজ
স্ট্রংগার’।
অর্থাৎ টেরেন্ট আমাদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।
কিন্তু সে আমাদেরকে শুধুই শক্তিশালী করেছে। আরেকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘মুসলিমস ওয়েলকাম, রেসিস্ট নট’। যার অর্থ দাঁড়ায়- মুসলিমদের স্বাগতম, বর্ণবাদকে নয়। গতকালকের এই পদযাত্রায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদের সবাই দৃশ্যত ছিলেন নীরব। তারা মৃদুস্বরে গেয়েছেন শান্তির বাণী। ওদিকে ইসলামের পবিত্র ভূমি মক্কা শরীফে শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিউজিল্যান্ডে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গতকালকের র্যালির আয়োজকদের অন্যতম ১৬ বছর বয়সী মানাইয়া বাটলা। তিনি পড়াশোনা করেন। বলেছেন, আমি মনে করি বিভিন্ন সময়ে ঘৃণা অনেক অন্ধকারকে সামনে এনেছে। কিন্তু সেই অন্ধকারের পাশাপাশি ভালোবাসা হয়েছে আরো শক্তিশালী। সেই ভালোবাসা অন্ধকারকে দূর করে দিয়েছে।
শনিবারও আল নূর মসজিদ খোলা আছে। এর আশেপাশে পাহারা দিচ্ছে সশস্ত্র পুলিশ। তারা হামলার শিকার লিনউড মসজিদও খুলে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। আল নূর মসজিদের বাইরে আশিক শেখ নামে একজন বলেছেন, এই সেই মসজিদ যেখানে আমরা নামাজ আদায় করি। আমরা একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। আবার আমরা সেখানে ফিরে আসতে পেরেছি। হামলার দিনেও তিনি এই মসজিদে উপস্থিত ছিলেন। ওই হামলায় নিহত হয়েছেন তার দুই প্রতিবেশী।
ওই হামলায় নিহতদের বেশির ভাগই বিদেশি অভিবাসী। এর মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, সোমালিয়া ও আফগানিস্তানের অভিবাসী।
গতকালের র্যালিতে নিরাপত্তা ছিল জোরালো। নির্বিঘ্নে যেন র্যালি করতে পারেন তারা এ জন্য কয়েক ডজন সশস্ত্র পুলিশ অফিসার ও বাস মোতায়েন করা হয়েছিল রাস্তায়। র্যালিতে অংশ নিতে অকল্যান্ড থেকে ছুটে এসেছেন ভারতীয় পরামর্শক গ্রুপ ‘শক্তি’তে কর্মরত শীলা নায়ার। তিনি বলেছেন, এই সমর্থন আমাদেরকে আশার সঞ্চার করেছে। অভিবাসী ও শরণার্থী সম্প্রদায় নিউজিল্যান্ডে সমঅধিকারের দাবি রাখে। এই সংহতির প্রশংসা করি আমরা। এই সংহতিকে ধরে রাখতে হবে। একে নষ্ট হতে দেয়া যাবে না। এভাবেই একটি সমাজ পরিবর্তিত হয়।
ওদিকে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেন। তার সময়োপযোগী ও বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপের জন্য। হামলার পর পরই দ্রুততার সঙ্গে তিনি এর নিন্দা জানিয়েছেন। ছুটে গেছেন মুসলিমদের কাছে। শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নিহতদের প্রতি। তাদের স্বজনদের জানিয়েছেন সমবেদনা।
প্রতিদিন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন তিনি। যোগ দিয়েছেন অনেক শোক অনুষ্ঠানে। এমনকি লাশ দাফনের সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি সময় তিনি মুসলিমদের রীতি অনুযায়ী মাথায় ওড়না পরে হাজির হয়েছেন। সামরিক স্টাইলের আধা স্বয়ংক্রিয় এবং অ্যাসল্ট রাইফেল বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার সারা দেশে ২ মিনিট নীরবতা পালনের ঘোষণা দেন তিনি। সেই ঘোষণা অনুযায়ী তিনি নিজে ছুটে যান মুসলিমদের কাছে। মাথায় ওড়না পরে তিনি ইমামের বয়ান শোনেন। নিজে পবিত্র হাদিস পাঠ করে শোনান। এদিন আল নূর মসজিদে উপস্থিত হন অন্য ধর্মের বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ। নারীদের মাথায় ওড়না বা স্কার্ফ পরে থাকতে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন পদক্ষেপ এবং তার সরকারের গৃহীত কর্মকাণ্ড বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। এ জন্য শুক্রবার তাকে টুইটারে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম। এতে তিনি লিখেছেন, জাসিনদা আরডেন ও নিউজিল্যান্ড এই সমর্থন, সহানুভূতি দেখানোয় আপনি ১৫০ কোটি মুসলিমের শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন।
২০১৩ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা ৪৮ লাখ। এর মধ্যে শতকরা মাত্র এক ভাগের সামান্য বেশি মুসলিম জনগোষ্ঠী।
অর্থাৎ টেরেন্ট আমাদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।
কিন্তু সে আমাদেরকে শুধুই শক্তিশালী করেছে। আরেকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘মুসলিমস ওয়েলকাম, রেসিস্ট নট’। যার অর্থ দাঁড়ায়- মুসলিমদের স্বাগতম, বর্ণবাদকে নয়। গতকালকের এই পদযাত্রায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদের সবাই দৃশ্যত ছিলেন নীরব। তারা মৃদুস্বরে গেয়েছেন শান্তির বাণী। ওদিকে ইসলামের পবিত্র ভূমি মক্কা শরীফে শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিউজিল্যান্ডে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গতকালকের র্যালির আয়োজকদের অন্যতম ১৬ বছর বয়সী মানাইয়া বাটলা। তিনি পড়াশোনা করেন। বলেছেন, আমি মনে করি বিভিন্ন সময়ে ঘৃণা অনেক অন্ধকারকে সামনে এনেছে। কিন্তু সেই অন্ধকারের পাশাপাশি ভালোবাসা হয়েছে আরো শক্তিশালী। সেই ভালোবাসা অন্ধকারকে দূর করে দিয়েছে।
শনিবারও আল নূর মসজিদ খোলা আছে। এর আশেপাশে পাহারা দিচ্ছে সশস্ত্র পুলিশ। তারা হামলার শিকার লিনউড মসজিদও খুলে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। আল নূর মসজিদের বাইরে আশিক শেখ নামে একজন বলেছেন, এই সেই মসজিদ যেখানে আমরা নামাজ আদায় করি। আমরা একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। আবার আমরা সেখানে ফিরে আসতে পেরেছি। হামলার দিনেও তিনি এই মসজিদে উপস্থিত ছিলেন। ওই হামলায় নিহত হয়েছেন তার দুই প্রতিবেশী।
ওই হামলায় নিহতদের বেশির ভাগই বিদেশি অভিবাসী। এর মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, সোমালিয়া ও আফগানিস্তানের অভিবাসী।
গতকালের র্যালিতে নিরাপত্তা ছিল জোরালো। নির্বিঘ্নে যেন র্যালি করতে পারেন তারা এ জন্য কয়েক ডজন সশস্ত্র পুলিশ অফিসার ও বাস মোতায়েন করা হয়েছিল রাস্তায়। র্যালিতে অংশ নিতে অকল্যান্ড থেকে ছুটে এসেছেন ভারতীয় পরামর্শক গ্রুপ ‘শক্তি’তে কর্মরত শীলা নায়ার। তিনি বলেছেন, এই সমর্থন আমাদেরকে আশার সঞ্চার করেছে। অভিবাসী ও শরণার্থী সম্প্রদায় নিউজিল্যান্ডে সমঅধিকারের দাবি রাখে। এই সংহতির প্রশংসা করি আমরা। এই সংহতিকে ধরে রাখতে হবে। একে নষ্ট হতে দেয়া যাবে না। এভাবেই একটি সমাজ পরিবর্তিত হয়।
ওদিকে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেন। তার সময়োপযোগী ও বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপের জন্য। হামলার পর পরই দ্রুততার সঙ্গে তিনি এর নিন্দা জানিয়েছেন। ছুটে গেছেন মুসলিমদের কাছে। শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নিহতদের প্রতি। তাদের স্বজনদের জানিয়েছেন সমবেদনা।
প্রতিদিন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন তিনি। যোগ দিয়েছেন অনেক শোক অনুষ্ঠানে। এমনকি লাশ দাফনের সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি সময় তিনি মুসলিমদের রীতি অনুযায়ী মাথায় ওড়না পরে হাজির হয়েছেন। সামরিক স্টাইলের আধা স্বয়ংক্রিয় এবং অ্যাসল্ট রাইফেল বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার সারা দেশে ২ মিনিট নীরবতা পালনের ঘোষণা দেন তিনি। সেই ঘোষণা অনুযায়ী তিনি নিজে ছুটে যান মুসলিমদের কাছে। মাথায় ওড়না পরে তিনি ইমামের বয়ান শোনেন। নিজে পবিত্র হাদিস পাঠ করে শোনান। এদিন আল নূর মসজিদে উপস্থিত হন অন্য ধর্মের বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ। নারীদের মাথায় ওড়না বা স্কার্ফ পরে থাকতে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন পদক্ষেপ এবং তার সরকারের গৃহীত কর্মকাণ্ড বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। এ জন্য শুক্রবার তাকে টুইটারে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম। এতে তিনি লিখেছেন, জাসিনদা আরডেন ও নিউজিল্যান্ড এই সমর্থন, সহানুভূতি দেখানোয় আপনি ১৫০ কোটি মুসলিমের শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন।
২০১৩ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা ৪৮ লাখ। এর মধ্যে শতকরা মাত্র এক ভাগের সামান্য বেশি মুসলিম জনগোষ্ঠী।
No comments