জিএম কাদের আউট: মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে নানা জল্পনা
গুরুতর
অসুস্থ অবস্থায় দল নিয়ে ভীষণ চিন্তিত এরশাদ নিজের উত্তরসূরি মনোনীত
করেছিলেন ছোটভাই জিএম কাদেরকে। আগে থেকে পার্টির কো- চেয়ারম্যানের দায়িত্ব
পালন করে আসা কাদেরকে জাতীয় নির্বাচনের পর এরশাদ বিরোধী দলের উপনেতার
চেয়ারে বসান। সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেকটা সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন
এরশাদ। তবে দলীয় কর্মসূচিতে এখনো তার উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায়
হঠাৎ করেই ভাইকে দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিলেন।
আগের দিন রাতে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার পরের দিন বিরোধী দলের উপনেতার পদও কেড়ে নেন। জাপা চেয়ারম্যানের হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। মুখে মুখে প্রশ্ন কী হচ্ছে পার্টিতে। কে বা কারা নিচ্ছেন পার্টির সিদ্ধান্ত।
পার্টির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নেই। এ অবস্থায় পার্টির গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন পরিবর্তনে নানা সন্দেহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আকস্মিকভাবে পার্টিতে যোগ দিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পরে এমপি হওয়া মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে নানা জল্পনা। পার্টিতে তার অবস্থান সন্দেহের চোখে দেখছেন অনেকে। এক-এগারোর সময়ের বিতর্কিত এই সেনা কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হন। পরে এরশাদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টাও হন লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। জাপার একাধিক সূত্র জানায়, পার্টি চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ভূমিকা থাকতে পারে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে তাকে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে বলে নেতাকর্মীরা আলোচনা করছেন। ওই সূত্রের দাবি দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে অংশ নিলেও অন্য নেতাদের সঙ্গে পার্টি নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না নবাগত এ নেতার। তাই পার্টিতে তার কি ভূমিকা হবে- এটি কারও কাছে স্পষ্ট নয়।
সর্বশেষ শুক্রবার রাতে পার্টির কো-চেয়ারম্যান থেকে এবং গতকাল বিরোধী দলের উপনেতা থেকে জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেন এরশাদ। পৃথক চিঠিতে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। নির্বাচনের কিছুদিন আগে মহাসচিব পদ থেকে রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দেন এরশাদ। এ পদে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে বসান। এরশাদের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি রাজনীতিতেও এরশাদের সঙ্গী কয়েক দশকের। অপসারণের পরে রুহুল আমিন হাওলাদার পার্টির কর্মকাণ্ড থেকে অনেকটা অন্তরালে চলে যান। নিজের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় এবার তিনি এমপিও হতে পারেন নি। রুহুল আমিন হাওলাদারকে অপসারণের পরে জাপা কারা চালায় সে প্রশ্নটি সামনে আসে। পদ চলে যাওয়ার পরে পার্টির কোনো সভা-সমাবেশে সামনে আসেন নি হাওলাদার। এদিকে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় নন। তিনিও নেতাকর্মীদের থেকে দূরে। পার্টির দুই একটি সমাবেশে তাকে দেখা গেলেও তা নিয়মিত নয়। তাকে কেউ প্রয়োজনেও পান না বলে অভিযোগ রয়েছে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখলেও এরশাদের অনেক সিদ্ধান্তে তার ভূমিকা রয়েছে বলে জানা যায়। এরশাদ যেসব সিদ্ধান্ত নেন তাতে রওশন এরশাদের ভূমিকা রয়েছে বলে নেতাকর্মীদের ধারণা। এদিকে পার্টির অভ্যন্তরে নানা মেরূকরণের কারণে তৃণমূলে ক্রমে শক্তিহীন হয়ে পড়ছে জাপা। নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন অথবা অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন। চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলটির প্রার্থীরা কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছেন না।
যদিও প্রধান বিরোধী দলগুলো এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
পার্টির এমন দুঃসময়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ভূমিকা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা। তিনি গত ১৫ই নভেম্বর জাপায় প্রাথমিক সদস্য পদ পান। একই সঙ্গে রাতারাতিই পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য হন। এ ছাড়া এরশাদের প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। পার্টির অনেক সিদ্ধান্তে তার হাত রয়েছে বলে নেতাদের ধারণা। জাপার রাজনীতিতে তার হঠাৎ প্রবেশ ও উদ্দেশ্য নিয়ে তখনই প্রশ্ন দেখা দেয়। এ ছাড়া দলে তার পদ পাওয়া নিয়েও অন্য একটি দলের হাত রয়েছে বলে জানান জাপার এক প্রেসিডিয়াম সদস্য। জাপার গত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার উপস্থিতিতে এ নিয়ে নেতারা তর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পার্টির সদস্য ফরম পূরণ করেই হুট করে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হওয়ায় সিনিয়র অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ হন।
এদিকে পার্টি সূত্র বলছে সামনে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন আসছে। অনেকেই পদ হারাতে পারেন। আবার নতুন দায়িত্ব পেতে পারেন। এক্ষেত্রে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন বলে নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন।
জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এরশাদের একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আখতার মানবজমিনকে বলেন, জাপায় বহিষ্কার আর পদায়ন তেমন কোনো কিছু নয়। জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন বলে আমি শুনেছি। এ কারণে স্যার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে স্যার যে চিঠি দিয়েছেন তাতেই স্ব-বিরোধী কথা রয়েছে। তিনি পার্টির কাউন্সিলের কথাও বলেছেন আবার তাকে অব্যাহতিও দিয়েছেন। তবে জাপায় কে কখন আসল, কে কার লোক, ভেতরে ভেতরে কি পরিকল্পনা আছে, তা আমরা কিছু জানি না। হঠাৎ এরশাদ এমন সিদ্ধান্ত কেন নিলেন, এখানে অন্য কারও হাত আছে কিনা এমন প্রশ্নে খালেদ আখতার সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, সবই তো আপনারা জানেন। এ দেশে সুস্থ রাজনীতি আর নেই।
দুই দিনে দুই পদ হারালেন কাদের: শুক্রবার রাতে পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেন। সাংগঠনিক নির্দেশ নামে এ চিঠিতে এরশাদ উল্লেখ করেন, ইতিপূর্বে আমি জিএম কাদেরকে পার্টির ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা এবং আমার অবর্তমানে পার্টির সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা প্রদান করেছিলাম। কিন্তু জিএম কাদের তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি শুধু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থই হননি, দলের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি দায়িত্বে আসার পর থেকে পার্টি আরো ঝিমিয়ে পড়ছে।
এ ছাড়া পার্টির অধিকাংশ সিনিয়র নেতারাও জিএম কাদেরের নেতৃত্বকে মেনে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। তাই আমি পূর্বের আদেশ পরিবর্তন করে জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিচ্ছি। সাংগঠনিক নির্দেশে এরশাদ আরো উল্লেখ করেন, জিএম কাদের পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে থাকবেন। এদিকে গতকাল এক চিঠিতে জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের উপনেতার পদ থেকেও সরিয়ে দেন। যদিও আগের দিনের চিঠিতে তিনি জানিয়ে ছিলেন এ পদের বিষয়ে পার্লামেন্টারি পার্টিতে সিদ্ধান্ত হবে। গতকালের চিঠিতে নিজ ক্ষমতা বলে তাকে এ পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা জানান এরশাদ। একই চিঠিতে রওশন এরশাদকে সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা করা হয়েছে। গতকালই ওই চিঠি স্পিকারের দপ্তরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। চিঠিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন জাপা চেয়ারম্যান।
আগের দিন রাতে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার পরের দিন বিরোধী দলের উপনেতার পদও কেড়ে নেন। জাপা চেয়ারম্যানের হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। মুখে মুখে প্রশ্ন কী হচ্ছে পার্টিতে। কে বা কারা নিচ্ছেন পার্টির সিদ্ধান্ত।
পার্টির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নেই। এ অবস্থায় পার্টির গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন পরিবর্তনে নানা সন্দেহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আকস্মিকভাবে পার্টিতে যোগ দিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পরে এমপি হওয়া মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে নানা জল্পনা। পার্টিতে তার অবস্থান সন্দেহের চোখে দেখছেন অনেকে। এক-এগারোর সময়ের বিতর্কিত এই সেনা কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হন। পরে এরশাদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টাও হন লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। জাপার একাধিক সূত্র জানায়, পার্টি চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ভূমিকা থাকতে পারে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে তাকে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে বলে নেতাকর্মীরা আলোচনা করছেন। ওই সূত্রের দাবি দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে অংশ নিলেও অন্য নেতাদের সঙ্গে পার্টি নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না নবাগত এ নেতার। তাই পার্টিতে তার কি ভূমিকা হবে- এটি কারও কাছে স্পষ্ট নয়।
সর্বশেষ শুক্রবার রাতে পার্টির কো-চেয়ারম্যান থেকে এবং গতকাল বিরোধী দলের উপনেতা থেকে জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেন এরশাদ। পৃথক চিঠিতে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। নির্বাচনের কিছুদিন আগে মহাসচিব পদ থেকে রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দেন এরশাদ। এ পদে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে বসান। এরশাদের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি রাজনীতিতেও এরশাদের সঙ্গী কয়েক দশকের। অপসারণের পরে রুহুল আমিন হাওলাদার পার্টির কর্মকাণ্ড থেকে অনেকটা অন্তরালে চলে যান। নিজের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় এবার তিনি এমপিও হতে পারেন নি। রুহুল আমিন হাওলাদারকে অপসারণের পরে জাপা কারা চালায় সে প্রশ্নটি সামনে আসে। পদ চলে যাওয়ার পরে পার্টির কোনো সভা-সমাবেশে সামনে আসেন নি হাওলাদার। এদিকে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় নন। তিনিও নেতাকর্মীদের থেকে দূরে। পার্টির দুই একটি সমাবেশে তাকে দেখা গেলেও তা নিয়মিত নয়। তাকে কেউ প্রয়োজনেও পান না বলে অভিযোগ রয়েছে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখলেও এরশাদের অনেক সিদ্ধান্তে তার ভূমিকা রয়েছে বলে জানা যায়। এরশাদ যেসব সিদ্ধান্ত নেন তাতে রওশন এরশাদের ভূমিকা রয়েছে বলে নেতাকর্মীদের ধারণা। এদিকে পার্টির অভ্যন্তরে নানা মেরূকরণের কারণে তৃণমূলে ক্রমে শক্তিহীন হয়ে পড়ছে জাপা। নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন অথবা অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন। চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলটির প্রার্থীরা কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছেন না।
যদিও প্রধান বিরোধী দলগুলো এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
পার্টির এমন দুঃসময়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ভূমিকা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা। তিনি গত ১৫ই নভেম্বর জাপায় প্রাথমিক সদস্য পদ পান। একই সঙ্গে রাতারাতিই পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য হন। এ ছাড়া এরশাদের প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। পার্টির অনেক সিদ্ধান্তে তার হাত রয়েছে বলে নেতাদের ধারণা। জাপার রাজনীতিতে তার হঠাৎ প্রবেশ ও উদ্দেশ্য নিয়ে তখনই প্রশ্ন দেখা দেয়। এ ছাড়া দলে তার পদ পাওয়া নিয়েও অন্য একটি দলের হাত রয়েছে বলে জানান জাপার এক প্রেসিডিয়াম সদস্য। জাপার গত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার উপস্থিতিতে এ নিয়ে নেতারা তর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পার্টির সদস্য ফরম পূরণ করেই হুট করে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হওয়ায় সিনিয়র অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ হন।
এদিকে পার্টি সূত্র বলছে সামনে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন আসছে। অনেকেই পদ হারাতে পারেন। আবার নতুন দায়িত্ব পেতে পারেন। এক্ষেত্রে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন বলে নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন।
জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এরশাদের একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আখতার মানবজমিনকে বলেন, জাপায় বহিষ্কার আর পদায়ন তেমন কোনো কিছু নয়। জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন বলে আমি শুনেছি। এ কারণে স্যার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে স্যার যে চিঠি দিয়েছেন তাতেই স্ব-বিরোধী কথা রয়েছে। তিনি পার্টির কাউন্সিলের কথাও বলেছেন আবার তাকে অব্যাহতিও দিয়েছেন। তবে জাপায় কে কখন আসল, কে কার লোক, ভেতরে ভেতরে কি পরিকল্পনা আছে, তা আমরা কিছু জানি না। হঠাৎ এরশাদ এমন সিদ্ধান্ত কেন নিলেন, এখানে অন্য কারও হাত আছে কিনা এমন প্রশ্নে খালেদ আখতার সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, সবই তো আপনারা জানেন। এ দেশে সুস্থ রাজনীতি আর নেই।
দুই দিনে দুই পদ হারালেন কাদের: শুক্রবার রাতে পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেন। সাংগঠনিক নির্দেশ নামে এ চিঠিতে এরশাদ উল্লেখ করেন, ইতিপূর্বে আমি জিএম কাদেরকে পার্টির ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা এবং আমার অবর্তমানে পার্টির সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা প্রদান করেছিলাম। কিন্তু জিএম কাদের তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি শুধু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থই হননি, দলের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি দায়িত্বে আসার পর থেকে পার্টি আরো ঝিমিয়ে পড়ছে।
এ ছাড়া পার্টির অধিকাংশ সিনিয়র নেতারাও জিএম কাদেরের নেতৃত্বকে মেনে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। তাই আমি পূর্বের আদেশ পরিবর্তন করে জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিচ্ছি। সাংগঠনিক নির্দেশে এরশাদ আরো উল্লেখ করেন, জিএম কাদের পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে থাকবেন। এদিকে গতকাল এক চিঠিতে জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের উপনেতার পদ থেকেও সরিয়ে দেন। যদিও আগের দিনের চিঠিতে তিনি জানিয়ে ছিলেন এ পদের বিষয়ে পার্লামেন্টারি পার্টিতে সিদ্ধান্ত হবে। গতকালের চিঠিতে নিজ ক্ষমতা বলে তাকে এ পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা জানান এরশাদ। একই চিঠিতে রওশন এরশাদকে সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা করা হয়েছে। গতকালই ওই চিঠি স্পিকারের দপ্তরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। চিঠিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন জাপা চেয়ারম্যান।
No comments