নয়াদিল্লিতে কালামের মরদেহ, মোদির শ্রদ্ধা

এ পি জে আবদুল কালাম
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও খ্যাতিমান পরমাণুবিজ্ঞানী আবুল পাকির জয়নাল আবেদিন আবদুল কালামের মরদেহ আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী নয়াদিল্লিতে নেওয়া হয়েছে। পালাম বিমানবন্দরে তাঁর মরদেহ গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে কালামের প্রতি পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেখানো হয়। এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হামিদ আনসারি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তিন বাহিনীর প্রধান প্রমুখ। সরকারে পক্ষ থেকে জানানো হয়, কালামের মরদেহ তাঁর দিল্লির বাসভবনে নেওয়া হবে। সেখানে আজ বিকেলে সাধারণ মানুষ তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। কাল বুধবার জন্মস্থান তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে কালামের দাফন হবে।
গতকাল সোমবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন কালাম। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অবিবাহিত। খুব সহজ সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন তিনি।
নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে আবদুল কালামের প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শ্রদ্ধা। ছবি: এএফপি
গতকাল সন্ধ্যায় শিলংয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে বি-স্কুলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ‘লিভেবেল প্ল্যানেট আর্থ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় হঠাৎ পড়ে যান কালাম। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নেওয়া হয় হাসপাতালে।
কালামের মৃত্যুতে ভারতজুড়ে শোক বিরাজ করছে। ঘোষণা করা হয়েছে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক।
তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর জন্ম আবদুল কালামের। ছোট্ট শহরে এক মৎস্যজীবী পরিবারে খুব দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নিলেও তাঁর স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। আর এই স্বপ্নের অনেকটাই পূরণ করে দেখিয়েও গেছেন তিনি।
২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের ১১ তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন আবদুল কালাম। তিনি হয়ে ওঠেন ‘জনতার রাষ্ট্রপতি’। তিনি ছিলেন ভারতের তৃতীয় মুসলিম রাষ্ট্রপতি। দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ ছাড়াও ‘পদ্মভূষণ’ ও ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবেও ভূষিত হন তিনি।
নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে আবদুল কালামের প্রতি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির শ্রদ্ধা। ছবি: এএফপি
বিমান প্রকৌশলে পড়াশোনা করে ভারতের প্রথম মহাকাশযান তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন আবদুল কালাম। ওই মহাকাশযান দিয়েই ১৯৮০ সালে দেশটি প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র রোহিনী উৎক্ষেপণ করে। ১৯৯৮ সালে ভারতের পোখরান-২ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার পেছনেও প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ১৯৭৪ সালে মূল পরীক্ষা চালানোর পর দীর্ঘ ২৪ বছরে ভারতের এটাই ছিল প্রথম সফল পারমাণবিক পরীক্ষা। দেশটিকে পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত করার জন্য যিনি নিরলস চেষ্টা চালিয়ে গেছেন, পরে সেই তিনিই পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রচারে সরব ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.