দুই নেতার চাঁদাবাজি- রাজনৈতিক প্রশ্রয় তুলে নিন

ঢাকার ‘রাজধানী সুপার মার্কেট’-এর ব্যবসায়ীরা যে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওই মার্কেটে চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে গড়িমসি করা হচ্ছে। কারণ, তাঁরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা। রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে আইন প্রয়োগ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়লে যে মগের মুলুক কায়েম হয়, তার দায় বর্তায় সরকারের ওপর। এই সরকার কি বাংলাদেশে মগের মুলুক কায়েম করার দায়িত্ব নিয়েছে?
গত বৃহস্পতিবার র্যাবের সদস্যরা রাজধানী সুপার মার্কেটে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১১ জন নেতা-কর্মীকে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের নেতাকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, কারণ তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। রেজাউল করিম নামের এই নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, রাজনৈতিক চাপের কারণে তাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেননি। ‘এলিট ফোর্স’ র্যাবও রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করলে ভবিষ্যতে অপরাধ দমন কঠিন হয়ে উঠবে।
চাঁদাবাজদের অন্য নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ময়নুল হক ওরফে মঞ্জু নিজেকে মার্কেট কমিটির সভাপতি ঘোষণা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ার পর র্যাব তাঁকে খুঁজছে বলে দাবি করেছেন র্যাব-১০-এর পরিচালক।
লক্ষণীয়, ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে র্যা বের কাছে কয়েকবার অভিযোগ করে সাড়া পাননি, তারপর লিখিত অভিযোগ করেও ফল হয়নি। পরে তাঁরা র্যা বের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন করেন। তারপর র্যা ব যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতেও গড়িমসি স্পষ্ট। ব্যবসায়ীরা ওই প্রভাবশালী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করতে স্বাভাবিকভাবেই ভয় পাচ্ছেন। চাঁদাবাজদের হাত থেকে তাঁদের সুরক্ষা দিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকেই তৎপর হতে হবে। সরকারের উচিত ক্ষমতাসীন দলের চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের বাধা সরিয়ে নেওয়া।

No comments

Powered by Blogger.