রোহিঙ্গাদের জন্য ‘নির্বাসনের দ্বীপ’ -ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
সীমান্ত
চৌকি ও উচ্চ নিরাপত্তা বেষ্টনীর কারণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্ত
রীতিমতো অভেদ্য বলে প্রতিভাত হয়। এরপরও প্রতি বছর মিয়ানমার থেকে হাজার
হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। রোহিঙ্গারা মূলত মুসলিম। বৌদ্ধ
সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের ওপর নির্যাতন চলছে দীর্ঘদিন
ধরে। তবে সমপ্রতি তার তীব্রতা বেড়েছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের অন্যতম
আনুষ্ঠানিক নৃ-সমপ্রদায় হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। অবশ্য তাদের অনেকের
পূর্বপুরুষই বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে তৎকালীন বাংলা থেকে সেখানে গিয়েছে।
১৯৮২ সালে তাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে মিয়ানমার সরকার। সে থেকে তারা
কার্যত রাষ্ট্রহীন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বহিরাগত বাঙালি হিসেবে আখ্যায়িত
করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশেও তাদের ভালভাবে নেয়া হয়ে না। সর্বশেষ রোহিঙ্গা
অনুপ্রবেশের আগেও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা আগে থেকেই বাংলাদেশে বসবাস করছিল।
এদের অনেকেই এসেছে ১৯৭০ ও ১৯৯০-এর দিকে। সে সময় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা
তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছে।
গত বছর, বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের কাছে বিভিন্ন শিবিরে বসবাসরত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নতুন করে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেন কর্মকর্তাদের। কক্সবাজার একটি পর্যটন স্পট, যেখানে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। বাংলাদেশ সরকারের বেছে নেয়া নতুন স্থানটি হলো ঠেঙ্গার চর নামের বঙ্গোপসাগরের একটি অনুর্বর দ্বীপ। মেঘনা নদীর পলি দিয়ে এক দশক আগে এ দ্বীপটির সৃষ্টি হয়। দ্বীপটি তেজ-কটালের সময় বন্যায় আক্রান্ত হয়। বেশিরভাগ মানচিত্রেই দ্বীপটির কোন অস্তিত্ব নেই। ঠেঙ্গার চরের সবচেয়ে কাছের জনবসতি হাতিয়া। সেখানকার পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ নজরুল হুদা বলেন, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ঠেঙ্গার চর থেকে হাতিয়ায় সিপডবোটে করে যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে। একটি মানচিত্র নিয়ে ঠেঙ্গার চরকে চিহ্নিত করলেন হুদা। তার মতে, এটি রোহিঙ্গাদের জন্য চমৎকার স্থান। নজরুল হুদা জানান, রাজধানী ঢাকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ আমলাদের কাছে তিনি ঠেঙ্গার চরের জন্য সুপারিশ করেছেন।
স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান আবু হাসনাত মইনউদ্দিন রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে একটি চিঠি দেখালেন। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন স্থানের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি শর্ত হলো, বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংঘাত এড়াতে হবে। মইনউদ্দিন জানালেন, মূল ভূমি থেকে দূরের স্থান নির্বাচন করাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরিকল্পানাধীন এ স্থানান্তরের খবর দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়লো। হাতিয়ার শ্রমিক মোহাম্মদ ইশতাক বলেন, ঠেঙ্গার চরে রোহিঙ্গাদের থাকতে কোন সমস্যা নেই, যতদিন পর্যন্ত তারা কোন ঝামেলা সৃষ্টি না করবে। তবে অন্যরা উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, ডাকাতির সমস্যা হয়তো বৃদ্ধি পাবে। তবে রোহিঙ্গারা নিজেরাও গভীর সন্দেহের চোখে দেখছে ঠেঙ্গার চরে পুনর্বাসনের বিষয়টিকে। কেননা, তাদের ঘরবাড়ি কিভাবে বানানো হবে, কে দেবে খরচ, এ ব্যাপারে তেমন কোন তথ্য নেই। ঢাকায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রতিনিধি স্টিনা জুংডেল বলেন, তার সংস্থাকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি সরকার। তবে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আগমন নিরুৎসাহিত করার নীতি অনুসরণ করছে সরকার। এ নীতির সঙ্গে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের নতুন এ পরিকল্পনা সঙ্গতিপূর্ণ।
[বৃটেনের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত ‘রোহিঙ্গা রিফিউজিস, এক্সাইল আইল্যান্ড’ শীর্ষক লেখার অনুবাদ]
গত বছর, বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের কাছে বিভিন্ন শিবিরে বসবাসরত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নতুন করে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেন কর্মকর্তাদের। কক্সবাজার একটি পর্যটন স্পট, যেখানে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। বাংলাদেশ সরকারের বেছে নেয়া নতুন স্থানটি হলো ঠেঙ্গার চর নামের বঙ্গোপসাগরের একটি অনুর্বর দ্বীপ। মেঘনা নদীর পলি দিয়ে এক দশক আগে এ দ্বীপটির সৃষ্টি হয়। দ্বীপটি তেজ-কটালের সময় বন্যায় আক্রান্ত হয়। বেশিরভাগ মানচিত্রেই দ্বীপটির কোন অস্তিত্ব নেই। ঠেঙ্গার চরের সবচেয়ে কাছের জনবসতি হাতিয়া। সেখানকার পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ নজরুল হুদা বলেন, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ঠেঙ্গার চর থেকে হাতিয়ায় সিপডবোটে করে যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে। একটি মানচিত্র নিয়ে ঠেঙ্গার চরকে চিহ্নিত করলেন হুদা। তার মতে, এটি রোহিঙ্গাদের জন্য চমৎকার স্থান। নজরুল হুদা জানান, রাজধানী ঢাকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ আমলাদের কাছে তিনি ঠেঙ্গার চরের জন্য সুপারিশ করেছেন।
স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান আবু হাসনাত মইনউদ্দিন রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে একটি চিঠি দেখালেন। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন স্থানের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি শর্ত হলো, বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংঘাত এড়াতে হবে। মইনউদ্দিন জানালেন, মূল ভূমি থেকে দূরের স্থান নির্বাচন করাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরিকল্পানাধীন এ স্থানান্তরের খবর দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়লো। হাতিয়ার শ্রমিক মোহাম্মদ ইশতাক বলেন, ঠেঙ্গার চরে রোহিঙ্গাদের থাকতে কোন সমস্যা নেই, যতদিন পর্যন্ত তারা কোন ঝামেলা সৃষ্টি না করবে। তবে অন্যরা উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, ডাকাতির সমস্যা হয়তো বৃদ্ধি পাবে। তবে রোহিঙ্গারা নিজেরাও গভীর সন্দেহের চোখে দেখছে ঠেঙ্গার চরে পুনর্বাসনের বিষয়টিকে। কেননা, তাদের ঘরবাড়ি কিভাবে বানানো হবে, কে দেবে খরচ, এ ব্যাপারে তেমন কোন তথ্য নেই। ঢাকায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রতিনিধি স্টিনা জুংডেল বলেন, তার সংস্থাকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি সরকার। তবে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আগমন নিরুৎসাহিত করার নীতি অনুসরণ করছে সরকার। এ নীতির সঙ্গে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের নতুন এ পরিকল্পনা সঙ্গতিপূর্ণ।
[বৃটেনের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত ‘রোহিঙ্গা রিফিউজিস, এক্সাইল আইল্যান্ড’ শীর্ষক লেখার অনুবাদ]
No comments