তামিল প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিলেন সিরিসেনা- ’৯১ সালের পর প্রথম সংখ্যালঘু প্রধান বিচারপতি
কানাগাছাবাপাথি শ্রীপবন |
শ্রীলঙ্কার
নতুন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা সংখ্যালঘু তামিল সম্প্রদায়ের এক
বিচারককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন। দেশটিতে ১৯৯১ সালের পর থেকে এই
প্রথম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ প্রধান বিচারপতি পেলেন। খবর বিবিসি ও দি
আইল্যান্ড পত্রিকার। কানাগাছাবাপাথি শ্রীপবন (৬২) নামের তামিল বিচারক
রাজধানী কলম্বোতে প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। গত শুক্রবার
প্রেসিডেন্টের সচিব এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার উপস্থিতিতে
শপথ নেন শ্রীপবন। সাবেক প্রধান বিচারপতি শিরানি বন্দরনায়েকের ২০১৩ সালের
অভিশংসনকে অবৈধ ঘোষণা করার দুই দিন পর প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা শ্রীপবনকে ওই
পদে নিয়োগ দিলেন। সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে দুর্নীতির
অভিযোগ এনে শিরানি বন্দরনায়েককে বরখাস্ত করেছিলেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়
এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো রাজাপক্ষের ওই পদক্ষেপের ব্যাপক সমালোচনা করে।
শিরানি তাঁর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।
সরকার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর গত বুধবারই তিনি প্রধান বিচারপতির
পদ ফিরে পান। তবে এর পরদিনই অবসরে যান। কয়েক দশকের মধ্যে শ্রীপবনই সরকারের
শীর্ষ পদে নিয়োগ পাওয়া প্রথম তামিল। সংখ্যাগুরু সিংহলি সম্প্রদায়ের সদস্য
প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ২০০৯ সালে বিচ্ছিন্নতাবাদী যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে
সংখ্যালঘু তামিল সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিরোধ-মীমাংসার বিষয়ে প্রয়াসী হয়েছেন।
এদিকে গত শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে বলা হয়, সিরিসেনা সরকার ক্ষমতায়
আসার পরই রাজাপক্ষের নিয়োগ দেওয়া প্রধান বিচারপতি মোহন পেইরিস ওই পদে
থাকার জন্য প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা, প্রধানমন্ত্রী রানিল উইকরামসিংহে এবং
সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গার কাছে ধরনা দেন। পার্লামেন্টে
বিরোধী দলের নেতা নিমাল সিরিপালা এবং এমইপির নেতা দীনেশ গুনবর্ধনার এক
প্রশ্নের জবাবে রানিল উইকরামসিংহে শুক্রবার এক বিশেষ বিবৃতিতে বলেন, গত ২১
জানুয়ারি মোহন পেইরিস তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে সিরিসেনার সঙ্গে অপ্রত্যাশিতভাবে
সাক্ষাৎ করেন। বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী পেইরিসের অপসারণ এবং শিরানি
বন্দরনায়েককে প্রধান বিচারপতির পদে পুনর্বহালের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন,
পেইরিস প্রস্তাব দিয়েছিলেন এপ্রিল পর্যন্ত তাঁকে বহাল রাখলে তিনি সরকারের
পক্ষে যেকোনো রায় দেবেন। শুক্রবার বিকেলে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে মোহন
পেইরিসের অপসারণ এবং শিরানি বন্দরনায়েকের পুনর্বহালকে কেন্দ্র করে সরকার
এবং বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার মধ্য দিয়ে অধিবেশন শেষ
হয়।
No comments