বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট-কেব্ল বিচ্ছিন্ন করা সমাধান নয়- উসকানিমূলক পদক্ষেপ
বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের প্রথমে বিদ্যুৎ–সংযোগ, পরে ইন্টারনেট ও কেব্ল লাইন বিচ্ছিন্ন করে সরকার যে চরম জবরদস্তি দেখিয়েছে, তা অনৈতিক ও বেআইনি। আইনের হেফাজতকারী সরকার এই বেআইনি কাজ করতে পারে না। পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুলশান থানার নির্দেশে একজন বিদ্যুৎকর্মী গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটায় বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। গতকাল দুপুরে বিএনপির নেত্রীর কার্যালয়ের ইন্টারনেট ও কেব্ল লাইনও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এটি গণতন্ত্রের ভাষা নয়। এই পদক্ষেপের আগেই শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান হুমকি দিয়েছিলেন, বিএনপি নেত্রী অবরোধ–হরতাল প্রত্যাহার না করলে তাঁর কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, পানি ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, সব লাইন কেটে দেওয়া হবে। এ ধরনের উসকানিমূলক কথাবার্তা যে পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করবে, তাতে সন্দেহ নেই। সরকারের এসব পদক্ষেপ কেবল হয়রানিমূলকই নয়, আইনেরও পরিপন্থী। সেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে ডেসকো তার সেবাপ্রার্থীর সঙ্গে চুক্তি লঙ্ঘন করতে পারে না। এমনকি লাইন বিচ্ছিন্ন করার কারণও জানানো হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মী জানিয়েছেন, থানার নির্দেশে লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আমরা জানি, থানা-পুলিশের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। কিন্তু তারা বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার দায়িত্ব কবে নিল? দেশে আইনের শাসন থাকলে ওই নির্দেশদাতাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হতো। বিএনপির নেত্রী যে লাগাতার অবরোধ দেশবাসীর ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন, সেটিকে আমরা অন্যায় ও অযৌক্তিক মনে করি। কিন্তু এর জবাবে তাঁর কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও কেব্ল লাইন বিচ্ছিন্ন করা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। অতএব, অবিলম্বে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও কেব্ল লাইন পুনরায় স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি। পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটার আগেই সমঝোতার মাধ্যমে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করুন।
No comments