কাঠ দিয়ে চলছে ইট পোড়ানো
ফরিদপুর
সদরের সিঅ্যান্ডবি ঘাটে স্তূপ করে রাখা আছে হাজার হাজার টন কয়লা। তার পরও
জেলার ৭৭টি ইটভাটার অধিকাংশে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফরিদপুর ইটভাটা মালিক
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলার নয়টি উপজেলায় মোট ভাটা রয়েছে ৭৭টি। এর
৩৬টি ভাটা সদর উপজেলায়। গত মঙ্গলবার জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ফরিদপুর
শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আওলাদ হোসেন বলেন, ৭৭টি ভাটার মধ্যে ৭০টিতেই
কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এমন হলে বনজ সম্পদের মারাত্মক ক্ষতি হবে। ফরিদপুর সদরের
ভাটাগুলোর মাত্র সাতটিতে কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। সদরের
ভাটিলক্ষ্মীপুর এলাকার এজেডএম ব্রিক, আনোয়ার উদ্দীন ট্রেডিং কোম্পানি,
পূর্বডাঙ্গি গ্রামের এমএন ব্রিকসহ বিভিন্ন ভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো
হচ্ছে। সদরের মুরালীদহ এলাকার এআর ব্রিকের ব্যবস্থাপক মো. রফিক বলেন, কয়লা
থেকে কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে খরচ বেশি। ভাটা চালু রাখতে প্রতিদিন প্রয়োজন
হয় ৭০০ থেকে ৯০০ মণ কাঠ। এক দফায় ইট পোড়াতে ৮ থেকে ১০ হাজার মণ কাঠ
লাগে। একই এলাকার মেসার্স এমএম ব্রিকে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ভাটার মালিকের
মেয়ে ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে জানিয়েই ভাটায় ইট
পোড়াচ্ছি।’ ফরিদপুর ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান
বলেন, মৌসুমের শুরুতে কয়লার সমস্যা হওয়ায় কাঠ দিয়েই ভাটা চালু করতে
হয়েছে। এ ছাড়া কয়লা ব্যবহার করতে হলে ১০ দিন আগে সাজিয়ে নিতে হয়। এর
জন্য ১০-১২ দিন সময় লাগে। আগে যেহেতু কাঠ পোড়ানো শুরু করা হয়েছে, তাই এই
পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত কয়লা সাজানো সম্ভব হচ্ছে না। ফরিদপুরের জেলা
প্রশাসক সরদার সরাফত আলী বলেন, কোনো ভাটার মালিককে কাঠ পোড়ানোর জন্য
অনুমতি দেওয়া হয়নি। ভাটায় যাতে আর কাঠ পোড়ানো না হয়, সে ব্যাপারে
পরিবেশ অধিদপ্তর ও ফরিদপুর বণিক সমিতির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফরিদপুরে কয়লা আনে পারটেক্স গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। পারটেক্স গ্রুপের
প্রতিনিধি ও ফরিদপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আওলাদ হোসেন জানান,
মৌসুমের শুরুতে ভারতের সঙ্গে সমস্যা হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়া
থেকে কয়লা আমদানি করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন মোকামে পর্যাপ্ত
কয়লার মজুত আছে। ফরিদপুরের সিঅ্যান্ডবি ঘাটে ১০ হাজার টন কয়লা মজুত
রয়েছে। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন,
‘পরিবেশ আইন অনুযায়ী ভাটায় কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষেধ। আমাকে ফরিদপুরের
পাঁচটি জেলা দেখতে হয়। জনবলও কম। তাই কয়লা আসার পর কয়টি ভাটায় কাঠ
পোড়ানো হচ্ছে, তা সরেজমিনে দেখা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।’
No comments