সেতু থাকা সত্ত্বেও নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি
(ঝিনাইদহে চিত্রা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো) পারাপারের
জন্য সেতু থাকলেও চিত্রা নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছে ঝিনাইদহের
কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ন পরিষদ। এতে নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত
হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। তবে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যানের দাবি, জনগণের ভালোর জন্য এ বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। সরেজমিনে
দেখা যায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা ও কোটচাঁদপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে
প্রবাহিত হয়েছে চিত্রা নদী। এই নদীর সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের সুতি
গ্রামের খন্দকারপাড়া এবং কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের তালসার
গ্রামের মাঝে কুশনা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। ১২০ ফুট
প্রশস্ত নদীর মাত্র ২৫ ফুট রেখে বাকিটায় আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, চিত্রা নদীর বাজারঘাট নামে জায়গাটির এক
কিলোমিটারের মধ্যে দুটি পাকা সেতু আছে। যে সেতু দিয়ে উভয় গ্রামের মানুষ
যাতায়াত করে। তার পরও শুকনো মৌসুমে ওই স্থানের পানি কমে গেলে স্থানীয়
বাসিন্দারা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করেন। পানি বেড়ে গেলে আবার সাঁকো
তুলে দেওয়া হয়। এভাবে বেশ কয়েক বছর তাঁরা পারাপার হচ্ছেন। চলতি মাসের
প্রথম দিকে হঠাৎ করে বাজারঘাট এলাকায় বাঁধ দেওয়া শুরু হয়। কোটচাঁদপুর
উপজেলার কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের ৪০ দিনের কর্মসংস্থান
প্রকল্পের অধীনে এই বাঁধ দেওয়া হয়। দুই পাশের সিংহভাগ আড়াআড়ি বাঁধ
দিয়ে মাঝে সামান্য জায়গা খালি রাখা হয়েছে। ফাঁকা অংশে বাঁশের সাঁকো
দেওয়া হয়েছে। এ বাঁধের কারণে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি আটকে পাশের
খেত-খামারে ঢুকবে। এতে জলাবদ্ধতায় সাধারণ কৃষকের হাজার হাজার বিঘা জমির
ফসল নষ্ট হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কৃষক জানান, নদীর পাড়ে তাঁর
সবজিখেত আছে। বর্ষার সময় পানি বাড়লে তাঁর খেতে ঢুকে ফসলের ক্ষতি হবে।
আরেকজন কৃষক জানান, এক কিলোমিটারের মধ্যে দুটি সেতু আছে। এ অবস্থায় বাঁধ
দিয়ে রাস্তা করার প্রয়োজন ছিল না। এ ছাড়া পানি বাড়লে তাঁদের বসতবাড়ি
প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান
শরিফুর রহমান জানান, রাস্তাটি এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্য করা হয়েছে।
তিনজন ইউপি সদস্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থানের যে কাজ পেয়েছেন, তা সমন্বয় করে এ
কাজ করেছেন। এতে নদীর কোনো ক্ষতি হবে না। কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবপ্রসাদ পাল জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। খোঁজ নিয়ে
দেখবেন।
No comments