৫০ বছর পর দেশের জন্য সুফল আনছে রূপপুর কেন্দ্র
দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর পর দেশের জন্য একটা
সুফল শোনাতে পারবে পরমাণু শক্তি কমিশন (এ্যাটোমিক এনার্জি কমিশন)। অনেক
চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্রটি স্থাপনে একটা পর্যায়ে
পৌঁছাতে পেরেছে তারা।
আশা করা হয়েছে খুব শীঘ্রই দেশের
প্রথম এই পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরম্ন হয়ে যাবে। এমনটি
জানালেন পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোঃ মোশাররফ হোসেন। তিনি
শুক্রবার বগুড়ায় হোটেল নাজ গার্ডেনে সোসাইটি অব নিউকিয়ার মেডিসিন
বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। পরমাণু শক্তি শুধু
চিকিৎসা েেত্রই সীমাবদ্ধ না রেখে বিদু্যত কৃষি খাদ্য খনিজ সেক্টরে
শানত্মিপূর্ণ ব্যবহারের কথা বলতে গিয়ে তিনি পাবনার রূপপুরে পরমাণু বিদু্যত
কেন্দ্রের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, এই বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি
অনেকদূর এগিয়েছে।
প্রায় ৫০ বছর আগে দেশী ও বিদেশী এক্সপার্টদের পরামর্শের ভিত্তিতেই ১৯৬১ সালে পদ্মা নদীর তীরে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বেছে নেয়া হয়। ১৯৬২ সালে অনেক বসতি তুলে দিয়ে ফসলী মাঠের ২শ' ৫৯ দশমিক ৪০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয় নির্মাণ কেন্দ্রের জন্য। ১৯৬৩ সালে আনত্মর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এই টেন্ডার বিবেচনার জন্য ভিয়েনায় আনত্মর্জাতিক শক্তি কমিশনের অফিসে এক বৈঠকও হয়েছিল। ওই সময় বলা হয়েছিল এই বিদু্যত কেন্দ্র হবে ১শ' ৪০ মেগাওয়াট । ১৯৬৬ সালে নরওয়ে সুইডেন কানাডা এই প্রকল্পে অর্থায়ন করতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই রিএ্যাক্টর আনার প্রসত্মাব দেয়া হয়। হঠাৎ তৎকালীন পাকিসত্মান সরকার এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়নি। সূত্র জানায়, তৎকালীন পাকিসত্মান এই পস্নান্ট রূপপুরের বদলে করাচীতে স্থাপনে উদ্যোগী ছিল। রূপপুরের রিএ্যাক্টর করাচী নিয়ে যাওয়ারও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। পাকিসত্মান রূপপুরে এই পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র হতে দেয়নি। পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখা যায়, পাকিসত্মান আণবিক শক্তি কমিশন ইন্টারনিউকিয়ার কোম্পানি এ্যান্ড গিবস হিলকে ফিজিবিল স্টাডি করতে দিয়েছিল। সেই কোম্পানি 'স্টাডি অব দ্য ইকোনমিক ফিজিবিলিটি অব নিউকিয়ার পাওয়ার' শিরোনামে রূপপুরে ৫০ মেগাওয়াটের পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র নির্মাণের পরামর্শ দেয়। বলা হয়, উৎপাদনের এই শক্তি বাড়ানো যাবে। তার কোনটাই পাকিসত্মান আর বাসত্মবায়ন করেনি।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে রূপপুর পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তারই ধারায় বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন ১৯৭৯ সালে পরমাণু চুলিস্নর মতা ৩শ' মেগাওয়াটে উন্নীত করে। ১৯৮০ সালে ফ্রান্সে এই বিষয়ে এক বৈঠকে ফরাসী নকশা ও কারিগরি সহায়তায় পস্নান্ট তৈরির প্রসত্মাব করা হয়। ১৯৮১ সালে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ১৫০ মেগাওয়াট করে দুটি চুলিস্নর মাধ্যমে ৩শ' মেগাওয়াট বিদু্যত উৎপাদনের প্রসত্মাব করে। এই প্রকল্প বাসত্মবায়নে আর এগোয়নি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার মতার আসার পর রূপপুর পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যভাগে পাকশী ইউনিয়নের নতুন রূপপুর বিদ্যালয় মাঠে সর্বসত্মরের মানুষের সমাবেশে জাতীয় ও আনত্মর্জাতিক পরমাণু বিশেষজ্ঞগণ পরমাণু বিদু্যত প্রকল্প চালুর বিষয়ে খোলাখুলি মতামত দেন। সমাবেশে আণবিক শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান খ্যাতিমান পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বলেন, এই পস্নান্ট পরিবেশের কোন তি করবে না। কোন ধোঁয়া হবে না। শব্দ থাকবে না। রিএ্যাক্টর যা বসবে তা চওড়া দেয়াল দিয়ে ঘেরা থাকবে। এই রিএ্যাক্টরে একবার ফুয়েল লোড দিলে তা চলবে অনত্মত ৬ বছর। সব কিছুই হবে আনত্মর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সুপারিশে। ওই সময় বলা হয় পস্নান্টের পরিবেশগত ঝুঁকি সম্পর্কে কমিশন সজাগ আছে। পস্নান্ট সাইটে থাকবে কয়েক সত্মরের নিরাপত্তা। ওই সমাবেশে কমিশনের চেয়ারম্যান ছাড়াও বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব মোঃ ফজলুর রহমান, ওই সময়ের জেনেভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, আনত্মর্জাতিক পরমাণু সংস্থার তৎকালীন সেকশনাল হেড ড. এম এন রাজলী, সংস্থার বিশেষজ্ঞ ড. বিই জুন, ড. বরিস কিউরপিয়েভ। এরপর আনত্মর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রকল্প বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই সময়ে পস্নান্ট বাসত্মবায়নের খরচ ধরা হয়েছিল এক শ' কোটি ডলার। তবে বলা হয়েছিল প্রাথমিক এই খরচের পর আর বেশি ব্যয় হবে না। এরপর রূপপুর প্রকল্প বাসত্মবায়নের উদ্যোগ নেয়ার সময় নির্বাচন এসে যায়। পরবতর্ী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এই প্রকল্প আর বাসত্মবায়ন করেনি। পদ্মা নদীর তীরে প্রকল্পের এই মাঠ এখন পড়ে আছে। এলাকার লোক নাম দিয়েছে এ্যাটোমিক মাঠ। এর কাছেই একটি আবাসিক ভবন নির্মিত হয়েছিল। আগে সেখানে কর্মকর্তা কর্মচারী থাকত। তাদের সংখ্যাও কমে জনা কয়েক হয়ে আছে। ভবনটিতে কেউ থাকে না। জরাজীর্ণ অবস্থা। চারধারে ঝোপ জঙ্গল। পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পড়ে থাকা জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবসত্ম দিয়ে আবাদ করা হয়। প্রকল্প পরিচালকের অফিস ঢাকায়। উত্তরাঞ্চলের পাবনায় রূপপুরের এই পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র শেষ পর্যনত্ম প্রায় ৫০ বছর পর স্থাপিত হতে যাচ্ছে বগুড়ায় এমন আশার কথা শোনালেন পরমাণু শক্তি কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মোঃ মোশাররফ হোসেন। এই প্রকল্প বাসত্মবায়িত হলে তা মাইলফলক হয়েই থাকবে।
প্রায় ৫০ বছর আগে দেশী ও বিদেশী এক্সপার্টদের পরামর্শের ভিত্তিতেই ১৯৬১ সালে পদ্মা নদীর তীরে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বেছে নেয়া হয়। ১৯৬২ সালে অনেক বসতি তুলে দিয়ে ফসলী মাঠের ২শ' ৫৯ দশমিক ৪০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয় নির্মাণ কেন্দ্রের জন্য। ১৯৬৩ সালে আনত্মর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এই টেন্ডার বিবেচনার জন্য ভিয়েনায় আনত্মর্জাতিক শক্তি কমিশনের অফিসে এক বৈঠকও হয়েছিল। ওই সময় বলা হয়েছিল এই বিদু্যত কেন্দ্র হবে ১শ' ৪০ মেগাওয়াট । ১৯৬৬ সালে নরওয়ে সুইডেন কানাডা এই প্রকল্পে অর্থায়ন করতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই রিএ্যাক্টর আনার প্রসত্মাব দেয়া হয়। হঠাৎ তৎকালীন পাকিসত্মান সরকার এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়নি। সূত্র জানায়, তৎকালীন পাকিসত্মান এই পস্নান্ট রূপপুরের বদলে করাচীতে স্থাপনে উদ্যোগী ছিল। রূপপুরের রিএ্যাক্টর করাচী নিয়ে যাওয়ারও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। পাকিসত্মান রূপপুরে এই পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র হতে দেয়নি। পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখা যায়, পাকিসত্মান আণবিক শক্তি কমিশন ইন্টারনিউকিয়ার কোম্পানি এ্যান্ড গিবস হিলকে ফিজিবিল স্টাডি করতে দিয়েছিল। সেই কোম্পানি 'স্টাডি অব দ্য ইকোনমিক ফিজিবিলিটি অব নিউকিয়ার পাওয়ার' শিরোনামে রূপপুরে ৫০ মেগাওয়াটের পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র নির্মাণের পরামর্শ দেয়। বলা হয়, উৎপাদনের এই শক্তি বাড়ানো যাবে। তার কোনটাই পাকিসত্মান আর বাসত্মবায়ন করেনি।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে রূপপুর পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তারই ধারায় বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন ১৯৭৯ সালে পরমাণু চুলিস্নর মতা ৩শ' মেগাওয়াটে উন্নীত করে। ১৯৮০ সালে ফ্রান্সে এই বিষয়ে এক বৈঠকে ফরাসী নকশা ও কারিগরি সহায়তায় পস্নান্ট তৈরির প্রসত্মাব করা হয়। ১৯৮১ সালে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ১৫০ মেগাওয়াট করে দুটি চুলিস্নর মাধ্যমে ৩শ' মেগাওয়াট বিদু্যত উৎপাদনের প্রসত্মাব করে। এই প্রকল্প বাসত্মবায়নে আর এগোয়নি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার মতার আসার পর রূপপুর পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যভাগে পাকশী ইউনিয়নের নতুন রূপপুর বিদ্যালয় মাঠে সর্বসত্মরের মানুষের সমাবেশে জাতীয় ও আনত্মর্জাতিক পরমাণু বিশেষজ্ঞগণ পরমাণু বিদু্যত প্রকল্প চালুর বিষয়ে খোলাখুলি মতামত দেন। সমাবেশে আণবিক শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান খ্যাতিমান পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বলেন, এই পস্নান্ট পরিবেশের কোন তি করবে না। কোন ধোঁয়া হবে না। শব্দ থাকবে না। রিএ্যাক্টর যা বসবে তা চওড়া দেয়াল দিয়ে ঘেরা থাকবে। এই রিএ্যাক্টরে একবার ফুয়েল লোড দিলে তা চলবে অনত্মত ৬ বছর। সব কিছুই হবে আনত্মর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সুপারিশে। ওই সময় বলা হয় পস্নান্টের পরিবেশগত ঝুঁকি সম্পর্কে কমিশন সজাগ আছে। পস্নান্ট সাইটে থাকবে কয়েক সত্মরের নিরাপত্তা। ওই সমাবেশে কমিশনের চেয়ারম্যান ছাড়াও বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব মোঃ ফজলুর রহমান, ওই সময়ের জেনেভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, আনত্মর্জাতিক পরমাণু সংস্থার তৎকালীন সেকশনাল হেড ড. এম এন রাজলী, সংস্থার বিশেষজ্ঞ ড. বিই জুন, ড. বরিস কিউরপিয়েভ। এরপর আনত্মর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রকল্প বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই সময়ে পস্নান্ট বাসত্মবায়নের খরচ ধরা হয়েছিল এক শ' কোটি ডলার। তবে বলা হয়েছিল প্রাথমিক এই খরচের পর আর বেশি ব্যয় হবে না। এরপর রূপপুর প্রকল্প বাসত্মবায়নের উদ্যোগ নেয়ার সময় নির্বাচন এসে যায়। পরবতর্ী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এই প্রকল্প আর বাসত্মবায়ন করেনি। পদ্মা নদীর তীরে প্রকল্পের এই মাঠ এখন পড়ে আছে। এলাকার লোক নাম দিয়েছে এ্যাটোমিক মাঠ। এর কাছেই একটি আবাসিক ভবন নির্মিত হয়েছিল। আগে সেখানে কর্মকর্তা কর্মচারী থাকত। তাদের সংখ্যাও কমে জনা কয়েক হয়ে আছে। ভবনটিতে কেউ থাকে না। জরাজীর্ণ অবস্থা। চারধারে ঝোপ জঙ্গল। পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পড়ে থাকা জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবসত্ম দিয়ে আবাদ করা হয়। প্রকল্প পরিচালকের অফিস ঢাকায়। উত্তরাঞ্চলের পাবনায় রূপপুরের এই পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র শেষ পর্যনত্ম প্রায় ৫০ বছর পর স্থাপিত হতে যাচ্ছে বগুড়ায় এমন আশার কথা শোনালেন পরমাণু শক্তি কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মোঃ মোশাররফ হোসেন। এই প্রকল্প বাসত্মবায়িত হলে তা মাইলফলক হয়েই থাকবে।
No comments