প্রভাবশালীরা জেল থেকে মুক্ত করেন ২৬ হত্যার আসামি ব্যাঙ্গা বাবুকে by আবু সালেহ আকন
প্রভাবশালীদের ইশারায় জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিল ২৬ হত্যাসহ বহু মামলার
আসামি ব্যাঙ্গা বাবু। জেল থেকে মুক্তি পেয়েই সে আবারো মেতে ওঠে
খুন-চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে।
জেল
থেকে মুক্তি পেতে কারা ব্যাঙ্গা বাবুকে সহায়তা করেছিলেন তাদের অনেকের নাম
বেরিয়ে আসছে তারই মুখ থেকে। দুর্ধর্ষ এই সন্ত্রাসী ব্যাঙ্গা বাবুকে দু’টি
চাঁদাবাজি মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে।
গতকাল আরো একটি মামলায় তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মিরপুর থানা
পুলিশ। এ ছাড়া শাহআলী এবং দারুস সালামসহ মিরপুরের বিভিন্ন থানায় দায়ের
মামলায় তাকে আরো ২০-২৫ দিন রিমান্ডে নেয়া হতে পারে বলে পুলিশ সূত্র
জানায়।
জিজ্ঞাসাবাদে ব্যাঙ্গা বাবু বলেছে, খুন তার কাছে নেশার মতো। হাসতে হাসতে সে মানুষ খুন করতে পারে। তার সহযোগী রয়েছে অনেকে। তার দেয়া তালিকামতে ওই এলাকায় গ্রেফতার অভিযান চালানো হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মিরপুরের ডিসি ইমতিয়াজ হোসেন।
গত ২১ জানুয়ারি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থানার দৌলতদিয়া ঘাটের আট কিলোমিটার দূরের নির্জন গ্রাম থেকে গ্রেফতারের পর গত সোমবার তাকে ঢাকায় আনা হয়। আদালতে মিরপুর থানা পুলিশ তিনটি মামলায় ৩০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায়। আদালত দু’টি মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ১১ বছর জেল খেটে পাঁচ মাস আগে ব্যাঙ্গা বাবু জামিনে মুক্তি পায়। তার জামিনের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালীদের হাত। অনেক রাঘববোয়াল কৌশলে তাকে জামিন করিয়ে পার করে দিয়েছেন বলে জানা যায়। ব্যাঙ্গা বাবু জামিনের পর পাঁচ মাসেই তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে মিরপুর এলাকার মানুষ। এ সময়ের মধ্যে সে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি করে। গ্রেফতারের ১০-১২ দিন আগে মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সের সভাপতি হারুন-অর রশিদের কাছে শাহাদাতের নাম করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বাবু। জানা গেছে, হারুনের কাছ থেকে বাবু পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। এর কিছু দিন আগে মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফের কাছ থেকে নিয়েছে ১০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় গত বছরের ৪ অক্টোবর ব্যাঙ্গা বাবু ও শাহাদাতকে আসামি করে দারুস সালাম থানায় মামলাও করেন তিনি।
ব্যাঙ্গা বাবু মিরপুর এলাকায় মূলত শাহাদাতের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত। ব্যাঙ্গা বাবুকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন মিরপুর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল হক লিটু। মিরপুর ১ নম্বরের ফেয়ার প্লাজার আলিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইদুল ইসলামের কাছে গত সেপ্টেম্বরে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে চাঁদা দাবি করে ব্যাঙ্গা। এ ছাড়া এসএ ট্রেডার্স অ্যান্ড বিল্ডার্সের মালিক আশরাফের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ব্যাঙ্গা। দেড় লাখ টাকা দিয়ে রক্ষা পান আশরাফ। ডিসিসি উত্তরের ঠিকাদার খালেক মাহমুদের কাছে চাঁদা দাবি করে বেশ কয়েকবার ফোন করেছে বাবু। কিছু টাকা দেয়ার পরও বারবার ফোন করছিল ব্যাঙ্গা বাবু। অবশেষে খালেক মাহমুদ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন।
ভুক্তভোগী সাবেক ছাত্রনেতা ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মহিবুল্লাহ জানান, গত ৩১ অক্টোবর শাহাদাতের নাম করে ব্যাঙ্গা বাবু আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় প্রথমে জিডি এবং পরে মামলা করি। অব্যাহত হুমকির মুখে ২ নভেম্বর পুলিশের মিরপুর বিভাগের ডিসি আমার নিরাপত্তা বিধানে সার্বক্ষণিক ফোর্স নিয়োগ করে। পুলিশ প্রটেকশনের মধ্যেই তার সন্ত্রাসী বাহিনী গত ৭ নভেম্বর আমার বাসার সামনে গুলি ছোড়ে। গুলি ছোড়ার ৫ মিনিটের মধ্যে ভারতীয় একটি নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে ব্যাঙ্গা বাবু বলে, এবার বুঝলেন তো আমি কে? আজ রক্ষা পেয়ে গেলেন। দ্রুত টাকা দিয়ে দিন। মামলা উঠিয়ে নিন। না হলে রক্ষা নেই। ব্যাঙ্গা বাবুর হাতে নিহত মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্সের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব আহমেদের ছোট ভাই আফরোজের কাছেও কিছু দিন আগে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল এই ব্যাঙ্গা। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের কাছে অভিযোগও করেছিলেন আফরোজ। অভিযোগ দেয়ার পর হুমকি আরো বেড়ে যায়। আফরোজকে বলা হয়, ‘টাকা না দিলে এবং অভিযোগ তুলে না নিলে পরিণতি হবে তোর বড় ভাইয়ের মতো।’ ব্যাঙ্গা বাবু ও শাহাদাতের বিরুদ্ধে আফরোজ এ পর্যন্ত ৩০টি জিডি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমদিকে ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতার সাথে রাজনীতি করত ব্যাঙ্গা। ১৯৯৮ সালে তুচ্ছ ঘটনায় মিরপুর উপশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তারই সহযোগী রানাকে খুন করে ব্যাঙ্গা। এর পর থেকেই আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায় সে। একে একে ২৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। ২০০১ সালে রমনায় জোড়া খুনের অন্যতম আসামি ব্যাঙ্গা। খায়রুল ও মামুন হত্যারও আসামি সে। ওই বছর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে ডাবল মার্ডার হয়। ওই মামলার প্রধান আসামি ব্যাঙ্গা বাবু।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সালে সে মিরপুরের লাল্টুকে হত্যা করে। ওই বছর বাঙলা কলেজের জিএস ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ আলীকে খুন করে ব্যাঙ্গা বাবু। একই সালে সেগুনবাগিচার নবাব আলী হত্যা, মিরপুরের নান্টুু হত্যা মামলা, ২০০২ সালে ছাত্রদল নেতা বিপ্লব হত্যা মামলা, একই সালে প্রিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল্লাহ হত্যাসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি ব্যাঙ্গা বাবু। মিরপুর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিটুর ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যা, ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান নিউটন হত্যা মামলা (২০০২), ১২ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার শওকত হোসেন মিস্টার হত্যা (২০০১) এবং মিরপুর ১ নম্বরের মাসুদ ওরফে গোড়া মাসুদ হত্যা মামলার আসামি এই ব্যাঙ্গা বাবু।
সূত্র জানায়, ২০০১ সালে সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্র রিংকুকে কলেজ মাঠে খুন করে গলা কেটে মাথা নিয়ে যাওয়া হয়। তার মাথার খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই মামলায় ২০০২ সালে গ্রেফতার হয় ব্যাঙ্গা। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়ার পর তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ওই মামলায় শাহাদাতের ফাঁসির আদেশ হয়। এ ছাড়া জেলে বসে মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান আফতাব আহমেদ মার্ডার মামলা, মিরপুরের সাবেক কমিশনার তৈয়েবুর রহমানের ভাগনে যুবলীগ নেতা মাহবুব হত্যা মামলার হুকুমের আসামি ব্যাঙ্গা বাবু।
সূত্র মতে, মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রওশন ২০০৫ সালে বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ওই সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে। জুন মাসের ওই গুলির ঘটনায় রওশন আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। ওই মামলার হুকুমের আসামি শাহাদাত ও ব্যাঙ্গা বাবু।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্যাঙ্গা বাবুকে জেল থেকে যারা বের হতে সহায়তা করেছেন তাদের অনেকেরই নাম উঠে আসছে এখন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে গডফাদারদের নাম বলে দিচ্ছে। এর মধ্যে অনেক প্রভাবশালীই রয়েছেন। যারা বিকাশকে মুক্ত করতেও সহায়তা করেছেন। সরকার দলীয় একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যেরও নাম উঠে এসেছে যিনি ব্যাঙ্গা বাবুকে জেল থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছেন। সূত্র জানায়, ব্যাঙ্গা বাবু এভাবে অনেকের নামই বলছে। মিরপুর থানার ওসি গতকাল বলেছেন, ব্যাঙ্গা বাবুকে আবারো দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে ব্যাঙ্গা বাবু বলেছে, খুন তার কাছে নেশার মতো। হাসতে হাসতে সে মানুষ খুন করতে পারে। তার সহযোগী রয়েছে অনেকে। তার দেয়া তালিকামতে ওই এলাকায় গ্রেফতার অভিযান চালানো হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মিরপুরের ডিসি ইমতিয়াজ হোসেন।
গত ২১ জানুয়ারি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থানার দৌলতদিয়া ঘাটের আট কিলোমিটার দূরের নির্জন গ্রাম থেকে গ্রেফতারের পর গত সোমবার তাকে ঢাকায় আনা হয়। আদালতে মিরপুর থানা পুলিশ তিনটি মামলায় ৩০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায়। আদালত দু’টি মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ১১ বছর জেল খেটে পাঁচ মাস আগে ব্যাঙ্গা বাবু জামিনে মুক্তি পায়। তার জামিনের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালীদের হাত। অনেক রাঘববোয়াল কৌশলে তাকে জামিন করিয়ে পার করে দিয়েছেন বলে জানা যায়। ব্যাঙ্গা বাবু জামিনের পর পাঁচ মাসেই তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে মিরপুর এলাকার মানুষ। এ সময়ের মধ্যে সে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি করে। গ্রেফতারের ১০-১২ দিন আগে মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সের সভাপতি হারুন-অর রশিদের কাছে শাহাদাতের নাম করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বাবু। জানা গেছে, হারুনের কাছ থেকে বাবু পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। এর কিছু দিন আগে মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফের কাছ থেকে নিয়েছে ১০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় গত বছরের ৪ অক্টোবর ব্যাঙ্গা বাবু ও শাহাদাতকে আসামি করে দারুস সালাম থানায় মামলাও করেন তিনি।
ব্যাঙ্গা বাবু মিরপুর এলাকায় মূলত শাহাদাতের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত। ব্যাঙ্গা বাবুকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন মিরপুর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল হক লিটু। মিরপুর ১ নম্বরের ফেয়ার প্লাজার আলিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইদুল ইসলামের কাছে গত সেপ্টেম্বরে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে চাঁদা দাবি করে ব্যাঙ্গা। এ ছাড়া এসএ ট্রেডার্স অ্যান্ড বিল্ডার্সের মালিক আশরাফের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ব্যাঙ্গা। দেড় লাখ টাকা দিয়ে রক্ষা পান আশরাফ। ডিসিসি উত্তরের ঠিকাদার খালেক মাহমুদের কাছে চাঁদা দাবি করে বেশ কয়েকবার ফোন করেছে বাবু। কিছু টাকা দেয়ার পরও বারবার ফোন করছিল ব্যাঙ্গা বাবু। অবশেষে খালেক মাহমুদ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন।
ভুক্তভোগী সাবেক ছাত্রনেতা ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মহিবুল্লাহ জানান, গত ৩১ অক্টোবর শাহাদাতের নাম করে ব্যাঙ্গা বাবু আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় প্রথমে জিডি এবং পরে মামলা করি। অব্যাহত হুমকির মুখে ২ নভেম্বর পুলিশের মিরপুর বিভাগের ডিসি আমার নিরাপত্তা বিধানে সার্বক্ষণিক ফোর্স নিয়োগ করে। পুলিশ প্রটেকশনের মধ্যেই তার সন্ত্রাসী বাহিনী গত ৭ নভেম্বর আমার বাসার সামনে গুলি ছোড়ে। গুলি ছোড়ার ৫ মিনিটের মধ্যে ভারতীয় একটি নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে ব্যাঙ্গা বাবু বলে, এবার বুঝলেন তো আমি কে? আজ রক্ষা পেয়ে গেলেন। দ্রুত টাকা দিয়ে দিন। মামলা উঠিয়ে নিন। না হলে রক্ষা নেই। ব্যাঙ্গা বাবুর হাতে নিহত মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্সের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব আহমেদের ছোট ভাই আফরোজের কাছেও কিছু দিন আগে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল এই ব্যাঙ্গা। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের কাছে অভিযোগও করেছিলেন আফরোজ। অভিযোগ দেয়ার পর হুমকি আরো বেড়ে যায়। আফরোজকে বলা হয়, ‘টাকা না দিলে এবং অভিযোগ তুলে না নিলে পরিণতি হবে তোর বড় ভাইয়ের মতো।’ ব্যাঙ্গা বাবু ও শাহাদাতের বিরুদ্ধে আফরোজ এ পর্যন্ত ৩০টি জিডি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমদিকে ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতার সাথে রাজনীতি করত ব্যাঙ্গা। ১৯৯৮ সালে তুচ্ছ ঘটনায় মিরপুর উপশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তারই সহযোগী রানাকে খুন করে ব্যাঙ্গা। এর পর থেকেই আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায় সে। একে একে ২৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। ২০০১ সালে রমনায় জোড়া খুনের অন্যতম আসামি ব্যাঙ্গা। খায়রুল ও মামুন হত্যারও আসামি সে। ওই বছর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে ডাবল মার্ডার হয়। ওই মামলার প্রধান আসামি ব্যাঙ্গা বাবু।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সালে সে মিরপুরের লাল্টুকে হত্যা করে। ওই বছর বাঙলা কলেজের জিএস ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ আলীকে খুন করে ব্যাঙ্গা বাবু। একই সালে সেগুনবাগিচার নবাব আলী হত্যা, মিরপুরের নান্টুু হত্যা মামলা, ২০০২ সালে ছাত্রদল নেতা বিপ্লব হত্যা মামলা, একই সালে প্রিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল্লাহ হত্যাসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি ব্যাঙ্গা বাবু। মিরপুর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিটুর ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যা, ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান নিউটন হত্যা মামলা (২০০২), ১২ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার শওকত হোসেন মিস্টার হত্যা (২০০১) এবং মিরপুর ১ নম্বরের মাসুদ ওরফে গোড়া মাসুদ হত্যা মামলার আসামি এই ব্যাঙ্গা বাবু।
সূত্র জানায়, ২০০১ সালে সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্র রিংকুকে কলেজ মাঠে খুন করে গলা কেটে মাথা নিয়ে যাওয়া হয়। তার মাথার খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই মামলায় ২০০২ সালে গ্রেফতার হয় ব্যাঙ্গা। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়ার পর তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ওই মামলায় শাহাদাতের ফাঁসির আদেশ হয়। এ ছাড়া জেলে বসে মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান আফতাব আহমেদ মার্ডার মামলা, মিরপুরের সাবেক কমিশনার তৈয়েবুর রহমানের ভাগনে যুবলীগ নেতা মাহবুব হত্যা মামলার হুকুমের আসামি ব্যাঙ্গা বাবু।
সূত্র মতে, মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রওশন ২০০৫ সালে বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ওই সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে। জুন মাসের ওই গুলির ঘটনায় রওশন আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। ওই মামলার হুকুমের আসামি শাহাদাত ও ব্যাঙ্গা বাবু।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্যাঙ্গা বাবুকে জেল থেকে যারা বের হতে সহায়তা করেছেন তাদের অনেকেরই নাম উঠে আসছে এখন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে গডফাদারদের নাম বলে দিচ্ছে। এর মধ্যে অনেক প্রভাবশালীই রয়েছেন। যারা বিকাশকে মুক্ত করতেও সহায়তা করেছেন। সরকার দলীয় একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যেরও নাম উঠে এসেছে যিনি ব্যাঙ্গা বাবুকে জেল থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছেন। সূত্র জানায়, ব্যাঙ্গা বাবু এভাবে অনেকের নামই বলছে। মিরপুর থানার ওসি গতকাল বলেছেন, ব্যাঙ্গা বাবুকে আবারো দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
No comments