জেরায় সাক্ষী- বদি রুমি আলতাফ মাহমুদকে দেখার কথা দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে ভুলবশত বলেছি
জহির উদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি
জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল-২ এ সাক্ষ্য
দিয়েছেন।
একই সাক্ষী জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান
নিজামীর বিরুদ্ধেও সাক্ষ্য দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১ এ। গতকাল
ট্রাইব্যুনাল-১-এ তার জেরা শুরু হয়েছে। জেরায় এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী
জহির উদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল বলেন, ১৯৭১ সালে ২৯ আগস্ট রমনা থানায়
গিয়ে বদি, রুমি, আলতাফ মাহমুদ, জুয়েল, আজাদ, চুন্নু এদের দেখার যে কথা
ট্রাইবুনাল-২ এ সাক্ষ্য দেয়ার সময় বলেছি তা ভুল বলেছি। ভুলবশত আমি এ
কথাগুলো বলেছিলাম। ওটা ছিল সিøপ অব টাং। ৪১ বছর আগের ঘটনা তোÑ ভুল হতেই
পারে। সে দিন আমি থানায় অন্যদের দেখেছিলাম।
গতকাল জেরার সময় মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন, আপনি আপনার চাচা বাহাউদ্দিনকে নিয়ে ১৯৭১ সালে রমনা থানায় গিয়েছিলেন। কখন গিয়েছিলেন? জবাবে সাক্ষী বলেন, আমি বিকালে বা সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম। কারণ সকালে আমি শুনতে পেলাম যে, দৈনিক সংগ্রামে একটি খবর বেরিয়েছে রমনা থানায় অস্ত্রসহ কয়েকজন দুষ্কৃতকারী ধরা পড়েছে। সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের দৃষ্কৃতকারী লিখত।
মিজানুল ইসলাম প্রশ্ন করেন, এ সময় আপনি বদি, রুমি, জুয়েল, আলতাফ মাহমুদ, আজাদ চুন্নুসহ ২০-২৫ জনকে দেখতে পান।
এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী জহির উদ্দিন জালাল বলেন, এটা সত্য নয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেয়ার সময় আমি বদি ভাই, রুমি, জুয়েল, আলতাফ মাহমুদ, আজাদ, চুন্নুভাইকে রমনা থানায় দেখার কথা ভুলবশত বলেছিলাম। ওটা ছিল সিøপ অব টাং। আমি অন্য ২৫ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধাকে দেখেছিলাম।
সাক্ষীর এ জবাবে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীকে উদ্দেশ করে বলেন, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে আপনি কী বলেছেন বা বলেননি তা আপনাকে কেউ জিজ্ঞেস করেছে? এখানে যে প্রশ্ন করা হয়েছে আপনি তার জবাব দেবেন। অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলামও বলেন, আমি তো সাক্ষীকে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করিনি। সাক্ষী নিজ থেকে বলেছেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর জহির উদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দী দেন।
গতকাল সাক্ষীকে জেরায় অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলামকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমেদ আনসারি।
জেরা (সংক্ষিপ্ত) :
প্রশ্ন : মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সর্বপ্রথম কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর : মনে নেই । এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন : মুক্তিবার্তা সম্পর্কে ধারণা আছে?
উত্তর : মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নিজস্ব সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন এটি। পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এটার প্রকাশনা শুরু হয়।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : পূর্ববতী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাসংবলিত গেজেট প্রকাশের পর যাদের নাম বাদ পড়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল সে বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নিজ উদ্যোগে কোনো অনুসন্ধান করেছিল কি না?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ওই সময় মুক্তিবার্তায় মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। সেই তালিকায় আপনার নাম ছিল?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আপনি কবে আবেদন করেন?
উত্তর : মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে ১৯৯২ সালে আমি আবেদন করি।
প্রশ্ন : আপনি ১৯৯২ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভোটার হন তা সত্য নয়।
উত্তর : আপনার অভিযোগ সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি প্রাইমারি পড়ালেখা কোথায় করেছেন?
উত্তর : আজিমপুর।
প্রশ্ন : আপনি আপনার শিক্ষাজীবনে বা পরবর্তী সময়ে জহির উদ্দিন জালাল নামে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব পেয়েছেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : আপনি ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুলে কোন সালে ভর্তি হন?
উত্তর : ১৯৭০ সালে সিলেট থেকে এসে নবম-অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হই।
প্রশ্ন : এসএসসি কোন সালে পাস করেছেন?
উত্তর : ১৯৭২ সালে।
প্রশ্ন : কোন পরীক্ষায়?
উত্তর : দ্বিতীয় পরীক্ষায়।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে একটি এসএসসি পরীক্ষা হয়েছিল। সেটা বাতিল করে ১৯৭২ সালে আবার পরীক্ষা হয়। আপনি ১৯৭২ সালের সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে যারা দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল তারা ১৯৭১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে যারা দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল তারা ১৯৭২ সালে দ্বিতীয় এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : আপনি ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেননি।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে স্কুলের সকল কাসে শিক্ষার্থীদের অটো প্রমোশন দেয়া হয়েছিল পরবর্তী শ্রেণীর জন্য।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : আপনি নবম ও দশম শ্রেণী কোনো স্কুলে না পড়ে ১৯৭২ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
উত্তর : মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কারণে নবম শ্রেণীতে কাস করা সম্ভব হয়নি। আর তখন স্কুল বন্ধ ছিল। আমি নবাবগঞ্জ থানার সালেহা হাইস্কুল থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিয়েছি ১৯৭২ সালে।
প্রশ্ন : এসএসসি পরীক্ষা কত নম্বরের ছিল এবং কী কী সাবজেক্ট ছিল মনে আছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আপনি কোনো লেখালেখি করেছেন?
উত্তর : না। সাক্ষাৎকার দিয়েছি।
প্রশ: প্রথম সাক্ষাৎকার কোথায় প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তর : ১৯৭২/৭৩ সালে ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুলের ম্যাগাজিনে।
প্রশ্ন : ওই সাক্ষাৎকারে কোনো দালালের নাম উল্লেখ করেছিলেন?
উত্তর : খেয়াল নেই।
প্রশ্ন : নামকরা কোনো পত্রিকায় আপনার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তরঃ প্রথম আলো, জনকণ্ঠ।
প্রশ্নঃ পূর্বদেশ, ইত্তেফাক ও আজাদে কোনো সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল?
উত্তরঃ স্মরণ নেই।
প্রশ্নঃ উল্লেখযোগ্য কোনো বইয়ের নাম বলতে পারবেন যেখানে আপনার সাক্ষাৎকার রয়েছে?
উত্তর : স্মরণ নেই।
আব্দুল্লাহিল আমান আযমীর জেরা শুরু : জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের পক্ষে তার ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীর জবানবন্দী গতকাল শেষ হয়েছে। জবানবন্দী শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী তাকে দু’টি প্রশ্নের মাধ্যমে তার জেরা শুরু করেন। আজ সোমবার সকালে তার জেরা আবার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী তার জবানবন্দীতে বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ভাষাআন্দোলনে নেতৃত্ব দেবার কারণে অধ্যাপক গোলাম আযম তিনবার গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু আজকের বাংলাদেশের ইতিহাসের বই থেকে ভাষাআন্দোলনে অধ্যাপক গোলাম আযমের অবদানকে মুছে ফেলে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে অধ্যাপক গোলাম আযমের ভূমিকাকে বিকৃত করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে ৪১ বছর ধরে মিথ্যা প্রচারনা চালিয়ে মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। শান্তি কমিটির ১৩০ জন সদস্যের মধ্যে অধ্যাপক গোলাম আযম একজন সাধারণ সদস্য ছিলেন মাত্র। তিনি কমিটির কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না। বিগত ৪১ বছর ধরে ওই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, জয়েন্ট সেক্রেটারিসহ কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ঘটানোর জন্য কোনো মামলা হয়নি। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যারা অধ্যাপক গোলাম আযমকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অপবাদ দেয় তাদের অধিকাংশই ওই কমিটির কর্মকর্তাদের নামও বলতে পারবেন না। যে কমিটির কোনো কর্মকর্তা অপরাধ করেছে বলে কোনো অভিযোগ করা হয়নি সেই কমিটির একজন সদস্য দেশের সকল অপকর্মের মূল হোতা ছিলেন এ ধরনের দাবি অমূলক। বরং স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে আমরা দেখেছি অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী সরকারি আমলা কিংবা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন এমন লোকজন বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আজ স্বাধীনতার ৪১ বছর পরে ভাষা আন্দোলনের সেনাপতি অধ্যাপক গোলাম আযমকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে প্রতিহিংসাচরিতার্থ করার মানসে এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার স্বার্থে সম্পূর্ণ মিথ্যা বা কল্পিত অভিযোগ এনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমগ্র দেশবাসীর সামনে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য সরকার এক ঘৃণ্য প্রচেষ্টায় লিপ্ত।
ট্রাইব্যুনাল-১ চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচারকার্যক্রম পরিচালনা করেন।
গতকাল জেরার সময় মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন, আপনি আপনার চাচা বাহাউদ্দিনকে নিয়ে ১৯৭১ সালে রমনা থানায় গিয়েছিলেন। কখন গিয়েছিলেন? জবাবে সাক্ষী বলেন, আমি বিকালে বা সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম। কারণ সকালে আমি শুনতে পেলাম যে, দৈনিক সংগ্রামে একটি খবর বেরিয়েছে রমনা থানায় অস্ত্রসহ কয়েকজন দুষ্কৃতকারী ধরা পড়েছে। সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের দৃষ্কৃতকারী লিখত।
মিজানুল ইসলাম প্রশ্ন করেন, এ সময় আপনি বদি, রুমি, জুয়েল, আলতাফ মাহমুদ, আজাদ চুন্নুসহ ২০-২৫ জনকে দেখতে পান।
এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী জহির উদ্দিন জালাল বলেন, এটা সত্য নয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেয়ার সময় আমি বদি ভাই, রুমি, জুয়েল, আলতাফ মাহমুদ, আজাদ, চুন্নুভাইকে রমনা থানায় দেখার কথা ভুলবশত বলেছিলাম। ওটা ছিল সিøপ অব টাং। আমি অন্য ২৫ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধাকে দেখেছিলাম।
সাক্ষীর এ জবাবে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীকে উদ্দেশ করে বলেন, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে আপনি কী বলেছেন বা বলেননি তা আপনাকে কেউ জিজ্ঞেস করেছে? এখানে যে প্রশ্ন করা হয়েছে আপনি তার জবাব দেবেন। অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলামও বলেন, আমি তো সাক্ষীকে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করিনি। সাক্ষী নিজ থেকে বলেছেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর জহির উদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দী দেন।
গতকাল সাক্ষীকে জেরায় অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলামকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমেদ আনসারি।
জেরা (সংক্ষিপ্ত) :
প্রশ্ন : মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সর্বপ্রথম কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর : মনে নেই । এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন : মুক্তিবার্তা সম্পর্কে ধারণা আছে?
উত্তর : মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নিজস্ব সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন এটি। পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এটার প্রকাশনা শুরু হয়।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : পূর্ববতী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাসংবলিত গেজেট প্রকাশের পর যাদের নাম বাদ পড়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল সে বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নিজ উদ্যোগে কোনো অনুসন্ধান করেছিল কি না?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ওই সময় মুক্তিবার্তায় মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। সেই তালিকায় আপনার নাম ছিল?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আপনি কবে আবেদন করেন?
উত্তর : মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে ১৯৯২ সালে আমি আবেদন করি।
প্রশ্ন : আপনি ১৯৯২ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভোটার হন তা সত্য নয়।
উত্তর : আপনার অভিযোগ সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি প্রাইমারি পড়ালেখা কোথায় করেছেন?
উত্তর : আজিমপুর।
প্রশ্ন : আপনি আপনার শিক্ষাজীবনে বা পরবর্তী সময়ে জহির উদ্দিন জালাল নামে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব পেয়েছেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : আপনি ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুলে কোন সালে ভর্তি হন?
উত্তর : ১৯৭০ সালে সিলেট থেকে এসে নবম-অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হই।
প্রশ্ন : এসএসসি কোন সালে পাস করেছেন?
উত্তর : ১৯৭২ সালে।
প্রশ্ন : কোন পরীক্ষায়?
উত্তর : দ্বিতীয় পরীক্ষায়।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে একটি এসএসসি পরীক্ষা হয়েছিল। সেটা বাতিল করে ১৯৭২ সালে আবার পরীক্ষা হয়। আপনি ১৯৭২ সালের সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে যারা দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল তারা ১৯৭১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে যারা দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল তারা ১৯৭২ সালে দ্বিতীয় এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : আপনি ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেননি।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে স্কুলের সকল কাসে শিক্ষার্থীদের অটো প্রমোশন দেয়া হয়েছিল পরবর্তী শ্রেণীর জন্য।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : আপনি নবম ও দশম শ্রেণী কোনো স্কুলে না পড়ে ১৯৭২ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
উত্তর : মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কারণে নবম শ্রেণীতে কাস করা সম্ভব হয়নি। আর তখন স্কুল বন্ধ ছিল। আমি নবাবগঞ্জ থানার সালেহা হাইস্কুল থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিয়েছি ১৯৭২ সালে।
প্রশ্ন : এসএসসি পরীক্ষা কত নম্বরের ছিল এবং কী কী সাবজেক্ট ছিল মনে আছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আপনি কোনো লেখালেখি করেছেন?
উত্তর : না। সাক্ষাৎকার দিয়েছি।
প্রশ: প্রথম সাক্ষাৎকার কোথায় প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তর : ১৯৭২/৭৩ সালে ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুলের ম্যাগাজিনে।
প্রশ্ন : ওই সাক্ষাৎকারে কোনো দালালের নাম উল্লেখ করেছিলেন?
উত্তর : খেয়াল নেই।
প্রশ্ন : নামকরা কোনো পত্রিকায় আপনার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তরঃ প্রথম আলো, জনকণ্ঠ।
প্রশ্নঃ পূর্বদেশ, ইত্তেফাক ও আজাদে কোনো সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল?
উত্তরঃ স্মরণ নেই।
প্রশ্নঃ উল্লেখযোগ্য কোনো বইয়ের নাম বলতে পারবেন যেখানে আপনার সাক্ষাৎকার রয়েছে?
উত্তর : স্মরণ নেই।
আব্দুল্লাহিল আমান আযমীর জেরা শুরু : জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের পক্ষে তার ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীর জবানবন্দী গতকাল শেষ হয়েছে। জবানবন্দী শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী তাকে দু’টি প্রশ্নের মাধ্যমে তার জেরা শুরু করেন। আজ সোমবার সকালে তার জেরা আবার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী তার জবানবন্দীতে বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ভাষাআন্দোলনে নেতৃত্ব দেবার কারণে অধ্যাপক গোলাম আযম তিনবার গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু আজকের বাংলাদেশের ইতিহাসের বই থেকে ভাষাআন্দোলনে অধ্যাপক গোলাম আযমের অবদানকে মুছে ফেলে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে অধ্যাপক গোলাম আযমের ভূমিকাকে বিকৃত করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে ৪১ বছর ধরে মিথ্যা প্রচারনা চালিয়ে মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। শান্তি কমিটির ১৩০ জন সদস্যের মধ্যে অধ্যাপক গোলাম আযম একজন সাধারণ সদস্য ছিলেন মাত্র। তিনি কমিটির কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না। বিগত ৪১ বছর ধরে ওই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, জয়েন্ট সেক্রেটারিসহ কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ঘটানোর জন্য কোনো মামলা হয়নি। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যারা অধ্যাপক গোলাম আযমকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অপবাদ দেয় তাদের অধিকাংশই ওই কমিটির কর্মকর্তাদের নামও বলতে পারবেন না। যে কমিটির কোনো কর্মকর্তা অপরাধ করেছে বলে কোনো অভিযোগ করা হয়নি সেই কমিটির একজন সদস্য দেশের সকল অপকর্মের মূল হোতা ছিলেন এ ধরনের দাবি অমূলক। বরং স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে আমরা দেখেছি অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী সরকারি আমলা কিংবা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন এমন লোকজন বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আজ স্বাধীনতার ৪১ বছর পরে ভাষা আন্দোলনের সেনাপতি অধ্যাপক গোলাম আযমকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে প্রতিহিংসাচরিতার্থ করার মানসে এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার স্বার্থে সম্পূর্ণ মিথ্যা বা কল্পিত অভিযোগ এনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমগ্র দেশবাসীর সামনে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য সরকার এক ঘৃণ্য প্রচেষ্টায় লিপ্ত।
ট্রাইব্যুনাল-১ চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচারকার্যক্রম পরিচালনা করেন।
No comments